সুনামগঞ্জে রহস্যময় ‘বাটি’ উদ্ধারের জন্য চলছে মা-ছেলের কঠিন লড়াই
মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া,সুনামগঞ্জ শনিবার দুপুর ০১:৫৩, ২১ নভেম্বর, ২০২০
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল হিসেবে পরিচিত তাহিরপুর উপজেলা। কিন্তু এক সময় লাউড় রাজ্যের অন্তগত ছিল এই উপজেলা। তাই ধারনা করা হচ্ছে- এই উপজেলায় রয়েছে প্রাচীন আমালের অনেক মহা মূল্যবান রাজকীয় সম্পদ। সম্প্রতি ড্রেজার মেশিন দিয়ে স্টেডিয়াম মাঠ ভরাট করার সময় স্বার্ণালী রংঙ্গের ১টি রহস্যময় বাটি কুড়িয়ে পায় এক শিশু। কিন্তু শিশুটির পরিবার অসহায় ও গরীব বলে তাদের ভাগ্যে সয়নি মহা মূল্যবান সেই সম্পদ। শকুনের মতো ছু-মেরে রহস্যময় বাটিটি উপজেলা সেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর সেই বাটি উপজেলা সেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতির কাছ থেকে উদ্ধার করার জন্য ২মাস যাবত শিশু বিমল বর্মন তার মাকে নিয়ে করছে কঠিন লড়াই। আর এই ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে জেলা ও উপজেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এলাকাবাসী জানায়- গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে জেলার তাহিরপুর উপজেলার স্টেডিয়াম মাঠ ভরাট করার জন্য থানার ব্রিজ সংলগ্ন বৌলাই নদীতে বসানো হয় একটি ড্রেজার মেশিন। সেই মেশিনের লোহার পাইপ দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে মাটি,বালি ও পানির মিশ্রণের সাথে উঠে আসে রহস্যময় গোলাকৃতির ১টি স্বার্ণালী বাটি। ওই সময় মাঠে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে শিশু বিমল বর্মন (৮) সেই স্বার্ণালী বাটি কুড়িয়ে পায় এবং তার সাথে থাকা দুই বন্ধুকে দেখায়। তখন স্বর্ণের বাটি পাওয়ার আনন্দে ৩বন্ধু নাচতে থাকে। এসময় খেলার মাঠ সংলগ্ন পাকা রাস্তায় হাটাহাটি করছিল উপজেলা সেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি সুষেন বর্মণ। স্বর্ণের বাটি নিয়ে ৩শিশুকে আনন্দ করতে দেখে সুষেন বর্মণ তাদের কাছে যায়। তারপর শিশু বিমলের কাছ থেকে স্বর্ণের বাটিটি দেখার কথা বলে চেয়ে নেয়। পরে বাটি ফেরত চাইলে সুষেন বর্মণ শিশু বিমলকে দমক দেয় এবং বাটি নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়। তারপর শিশু বিমল কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে গিয়ে বাবা অমর বর্মন ও মা উর্মি বর্মনকে ঘটনাটি জানায়। পরে বিমলকে নিয়ে তার মা-বাবা সুষেন বর্মণের বাড়িতে যায়। তারা তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের মধ্য-তাহিরপুর (খলাহাটি) গ্রামের বাসিন্দা।
এব্যাপারে উপজেলা সেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি সুষেন বর্মণ বলেন- স্বর্ণালী রংঙ্গের যে বাটি আমি শিশু বিমলের কাছ থেকে নিয়ে ছিলাম সেটি তাদেরকে ফেরত দিয়ে দিয়েছি।
শিশু বিমল বর্মণের মা উর্মি বর্মণ বলেন- আমার ছেলে যে বাটি পেয়ে,জানতে পেরেছি সেটি প্রাচীন আমলের একটি রাজকীয় স্বর্ণের বাটি। তাই সুষেন বর্মণ সুকৌসলে আমার ছেলের কাছ থেকে বাটিটি কেড়ে নিয়ে গেছে। আমি তার বাড়িতে গিয়ে বাটি ফেরত চাইলে সে দুই দিনের সময় নেয়। কিন্তু ২মাস পেরিয়ে গেলেও রাজকীয় স্বর্ণের বাটিটি এখনও পর্যন্ত ফেরত দেয়নি। উপজেলা সেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি সুষেন বর্মণ আমার ছেলের কুড়িয়ে পাওয়া রাজকীয় স্বর্ণের বাটি আত্মসাৎ করতে চাইছেন। আমি আমার ছেলের স্বর্ণের বাটি ফেরত চাই। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।