ছুটির বিকেলে ধানমন্ডি লেক
ডেক্স রিপোর্ট রবিবার রাত ০২:১৮, ৬ জুন, ২০২১
ঢাকার একটা দুর্নাম আছে, ইট পাথরের শহর। কোথাও একটু বসে দম ফেলার জায়গা নেই। এখানে একটু সবুজের দেখা পেলেই বেরিয়ে আসে স্বস্তির নিঃশ্বাস। চলুন আজ দেখে আসি এমনি একটি স্থানের নাম সেখানে গেলে আপনি পাবেন সবুজের দেখা, স্বস্তিতে নিশ্বাস ফেলার মতো একটা স্থান। সাথে আরও পাবেন হাল্কা থেকে ভারি নাস্তা। আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে খাওয়া দাওয়া আপনার ক্লান্তি ভুলিয়ে দিবে। এমনই একটি জায়গা ধানমন্ডি লেক-রবীন্দ্র সরোবর।
‘ঢাকায় ঘোরুঘুরির জায়গার অভাব’। কথাটি আমরা খুব ঢালাওভাবে বলে ফেলি। কথাটি ঠিক, আবার সব ক্ষেত্রে ঠিক নয়। ঢাকায় একদিন মুরুব্বি ও পরিবার পরিজন নিয়ে একটি বিকেল শান্তভাবে সময় কাটাতে চাইলে জায়গার অভাব আছে। সুন্দর, নিরাপদ ও পারিবারিক জায়গার অভাব আছে। হাতেগোনা অল্প কিছু জায়গাই পাবেন পারিবারিকভাবে সময় কাটানোর। এবং সেসব জায়গার থাকবে অস্বাভাবিক ভিড়।
তবে বন্ধুবান্ধব নিয়ে হইচই করার জন্য জায়গার অভাব নেই ঢাকায়। নাগরীক সকল সুবিধাসহ প্রাকৃতিকভাবে অনেক সমৃদ্ধ জায়গাও কম নয় ঢাকাতে। তবে সেসব জায়গায় নিরাপত্তার অভাব ও অসামাজিক কাজের প্রাদৃর্ভাব দেয়া যায়। যেমন, মিরপুর চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দি উদ্যান, বলধা গার্ডেন ও আরো অনেক জায়গা আছে যেখানে পানি, লেক, নদী ইত্যাদি আছে। কিন্তু নাই বেড়ানোর সুষ্ট পরিবেশ।
এ সবকিছু বিবেচনা নিয়ে ধানমন্ডি লেক একটি আদর্শ বেড়ানোর জায়গা। ধানমন্ডি লেক নিয়ে অনেকের অনেক অভিযোগ থাকতে পারে বা না থাকার সবধরনের কারণও থাকতে পারে। তবে প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সুবিধার কারণে ধানমন্ডি লেক ও রবীন্দ্রসরোবর এখন ঢাকা শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় আড্ডা স্থল ও বেড়ানোর জায়গায় পরিনত হয়েছে।
এখানে আপনি পাবেন আকাঁবাকা লেক, বিশাল বিশাল সব গাছপালাসহ অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য। গাড়ি চলাচলের ব্রিজ, পায়ে চলা ব্রিজ, বসবার স্থান, শরীরচর্চার জন্য জায়গা, খাবার দোকান ও রেষ্টুরেন্ট ও নৌকা ভ্রমণসহ অনেক নাগরীক সুবিধা। এখানে আপনাকে টিকিট কেটে ঢুকতে হবে না। যদিও জাহাজ বাড়ি নামের সুন্দর বাড়িটি আর দেখতে পারবেন না। সেটা এখন ভেঙে ফেলা হয়েছে।
লেকটি ঘিরে ভিন্ন ভিন্ন নামের অনেকগুলো বসার স্থান রয়েছে। যেমন রবীন্দ্র সরোবর, জাহাজবাড়ি পয়েন্ট, ব্যাচেলর পয়েন্ট, শুটিং পয়েন্ট, দ্বীপ চত্বর, লেক ভিউ সাইড, ডিঙ্গি চত্বর, সুরধনী চত্বর, জিয়া চত্তর, শতায়ু অঙ্গন ইত্যাদি।
সবগুলো স্থানই লেকটির তীর ঘেঁষে তৈরি। যেখানে বসে খোলা হাওয়ায় পরিবার, বন্ধু কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠতে পারেন আপনেও। আবার পুরোলেকটির পাড় ঘেষে আছে পায়ে হাটা পথ। মর্নিং বা ইভিনিং ওয়াকারদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি কিছু পথও আছে কিছু কিছু যায়গায়।
ধানমন্ডি ২৭ নাম্বার থেকে শুরু করে এক লেকপাড়ের রাস্তা ৩২ নাম্বার ব্রিজ, ধানমন্ডি ৮ নাম্বার ব্রিজ, সুধাসদন হয়ে জিগাতলা এবং জিগাতলা ঘুরে জাহাজ বাড়ি সামনে দিয়ে ৫এ হয়ে আবার ৮ নম্বর ব্রিজ হয়ে ৩২ নম্বর গিয়ে এই পায়ে হাটা পথের সমাপ্তি। এতো দীর্ঘ ও সুন্দর পায়ে হাটা পথ ঢাকাতে আর আছে কিনা জানা নেই।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো বাহনে করে আপনি ধানমন্ডি লেকে যেতে পারবেন। যেহেতু এখানে যাওয়ার অনেকগুলো রাস্তা আছে, তাই আপনি কোন দিক দিয়ে যাবেন এবং কোন দিক থেকে লেকে ঢুকতে সুবিধা হবে শুধু এইটুকু জেনে নিলেই হবে। আমরা আপনাকে কিছু কিছু রাস্তা বা পয়েন্ট সম্পর্কে জানাচ্ছি।
. মিরপুর রোড হয়ে আসলে ৩২ নাম্বার ব্রিজ দিয়ে যেতে পারবেন।
. ধানমন্ডি ২৭ নাম্বার থেকে ডিঙ্গির পথ হয়ে যেতে পারবেন।
. জিগাতলা থেকে জাহাজ বাড়ি সামনে দিয়ে যেতে পারবেন।
. জাহাজ বাড়ি সামনে দিয়ে ৫এ হয়ে যেতে পারেন।
এছাড়াও আরো অনেকগুলো পয়েন্ট আছে। আপনি আপনার পছন্দ মতো পথটি বেছে নিতে পারেন।