বন্যার কবলে চরম দূর্ভোগে হাজারো মানুষ
নিজস্ব প্রতিনিধি রবিবার সন্ধ্যা ০৬:৩৯, ২৮ জুন, ২০২০
মোঃ ইবাদুর রহমান জাকির, সিলেট প্রতিনিধিঃ প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়ে গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে অকাল বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় অধিকাংশ ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় বানের পানিতে ডুবে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন বানবাসী মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। বন্যার পানিতে গৃহবন্দি হয়ে পড়ায় আয়-রোজগার করতে পারছেন না তারা। এতে না খেয়ে থাকার উপক্রম দেখা দিয়েছে। এছাড়া গ্রামীন সড়কগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ইনাতনগর গ্রামের বাবুল মিয়া ও নবীনগর গ্রামের উজ্জ্বল হোসেন বলেন, বন্যার পানিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘরবন্দি রয়েছি। ফলে আমাদের আয়-উপার্জন বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সবাইকে নিয়ে অনাহারে থাকতে হবে। দর্গাপাশা ইউনিয়নের হরিনগর গ্রামের মাহবুব আলম সোহাগ বলেন, প্রতিবছর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় এমনিতেই আমাদের গ্রামের রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়।
এ বছর পানি শুধু গ্রামের রাস্তায় নয়, মানুষের ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে। এতে আমাদের গ্রামের অধিকাংশ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এ জন্য রাস্তায় মাটি ভরাটের পাশাপাশি পানিবন্দি পরিবারগুলোকে ত্রাণসামগ্রী দিতে ইউনিয়ন ও উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এদিকে পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও পয়েন্টের সবক’টি দোকানে পানি প্রবেশ করেছে। এতে দোকানগুলোর পণ্যসামগ্রী, আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দোকানের মালিকরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী বলেন, যারা পানিবন্দি রয়েছেন, তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। বন্যার সকল খবরাখবর জানাতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোকে শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ উপকরণ প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।