গৌরীপুরে সরকারী গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ কমছে কৃষকদের
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ০৮:৪৯, ২ জুন, ২০২০
ময়মনসিংহ (গৌরীপুর) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের গৌরীপুর বাজারে ধানের বাজার দর সরকারী দরের সাথে প্রায় সমান হওয়ায় ও ময়েশ্চারের (শুকনো) কোন নির্ধারিত বিধি নিষেধ না থাকায় কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রি না করে বাজারেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে এ মৌসুমে সরকারী ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ধান মহাল ঘুরে দেখা গেছে’ বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও বাজারে ধানের মূল্য অন্যান্য বছরের তুলনায় রেকর্ড পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া এ উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে এখন স্বস্থির হাসি বিরাজ করছে। সোমবার, মঙ্গলবার (০১ও ০২ জুন) গৌরীপুর বাজারে বিআর-২৮ প্রতি মন ধান ৮শ ৭০ টাকা থেকে ৯ শ ২০ টাকা ক্রয় করছে ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া বিআর-২৯ ধান ৮শ থেকে-৮শ ৫০ টাকা মন ও মোটা জাতের ধান ৭ শ ৫০ থেকে ৮ শ টাকা মন দরে বিক্রি করছে কৃষকরা। অন্যদিকে ফসলের ক্ষেত থেকে সদ্য কাটা ভেজা ধান ৭ শ টাকা মন দরে বাজারে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ কারণে শুধু শুধু শুকানোর দুর্ভোগে না গিয়ে ছোট-বড় ও প্রান্তিক কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করার মত আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
এ ক্ষেত্রে সরকারি বোরো ধান সংগ্রহ অভিযানের সফলতা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সরকারী গুদামে ১৪% শুকনো ধান বিক্রি করতে হয় ১,০৪০ টাকা মন। কিন্তু বাজারে শুকানোর নির্ধারিত কোন মান না থাকায় সেই একই ধান বিক্রি হচ্ছে ৯শ ২০ টাকা মন। উল্লেখ্য, গতবছর এই সময়ে প্রকারভেদে কৃষকদেরকে প্রতিমন ধান ৪শ ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬শ ৫০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে।
এ ব্যপারে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা মিল মালিক সমিতির সভাপতি ও ধান ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন জুয়েল এর সাথে কথা বললে, তিনি বলেন আমি একজন ব্যবসায়ী হিসেবে বলছি না’ একজন কৃষক বান্ধব হিসেবে বলছি এ মৌসুমে ধান বিক্রিতে কৃষক বেশী দর পাওয়ায় আমি অত্যন্ত খুশি। কারণ বিগত মৌসুমগুলোতে ধান বিক্রি করে ফলনের খরচ উঠাতে গিয়ে কৃষকদেরকে হিমশিম খেতে হয়েছে। অনেকেই উৎপাদন ব্যয়ও উঠাতে পারেনি। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হাজারো প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক। কিন্তু এ মৌসুমে কৃষকরা বাজারে অধিক দরে ধান বিক্রি করে পুষিয়ে নিচ্ছে আগের ক্ষতি। বাজারে ধান বিক্রি করে হাসি মুখে ঘরে ফিরছে তারা।
এ ব্যপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিপ্লব কুমার সরকার জানিয়েছেন’ কৃষকরা বাজারে ধান বিক্রি করলেও সরকারী ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অবশ্যই অর্জিত হবে। তিনি বলেন এখন পর্যন্ত অনেক কৃষক গুদামে ধান দেয়ার ব্যপারে আমাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।