গৌরীপুরে জ্বর-সর্দিজনিত ঔষধের সংকট
ওবায়দুর রহমান,গৌরীপুর,ময়মনসিংহ। রবিবার দুপুর ০২:৫৮, ৪ জুলাই, ২০২১
করোনার মহামারিতে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সর্বত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধের সংকট তৈরী হয়েছে। রবিবার (৪ জুলাই) উপজেলার পৌর শহরের বেশ কিছু ঔষধের দোকানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধের সংকট রয়েছে।
এক্ষেত্রে বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস এর ট্যাবলেট নাপা, নাপা-৫০০, নাপা এক্সট্রা, নাপা এক্সটেন্ড, নাপা র্যাপিড, নাপা সিরাপ, নাপা ড্রপ, গ্যাসের ট্যাবলেট রেমো-২০, ৪০, উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ বাইজুরান ২০, ৪০, স্কয়ার এর এইচ, এইচ প্লাস, এইচ সিরাপ ইত্যাদি ঔষধের চাহিদা থাকলেও কোম্পানি দিচ্ছে না।
বর্তমানে ঋতু পরিবর্তনে সাধারণ সর্দি, জ্বর এবং করোনাকালীন এই ঔষধগুলো মানুষের জন্য জরুরী প্রয়োজনীয়। কিন্তু এ জাতীয় ঔষধগুলোর গভীর সংকট দেখা দিয়েছে। ঔষধ কিনতে আসা কালীখলাস্থ ব্যবসায়ী শংকর ঘোষ পিলু জানান, বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরেও নাপা ট্যাবলেট ও সিরাপ কিনতে পারিনি।
এরকম অভিযোগ জানিয়ে আরেকজন ঔষধ ক্রেতা শুভ জানান, বর্তমান সময়ে এ ধরণের ঔষধের সংকট সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে। আমি বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরেও বাচ্চার জন্য নাপা ড্রপ কিনতে পারিনি।
সরেজমিনে সোমা ফার্মেসী, রতন ফার্মেসী, সীমা মেডিকেল হল, বীণা মেডিকেল হল, সেবা ফার্মেসী, বিরদা মেডিকেল হল, জনতা ফার্মেসী, বিসমিল্লাহ মেডিকেল হল, তাকওয়া ফার্মেসী, ফাহিম মেডিকেল হল, সোনালী মেডিকেল হল, মেসার্স হযরত শাহজালাল ফার্মেসীসহ আরো বেশ কয়েকটি দোকানে গিয়ে জানা গেছে ঔষধ সরবরাহের জন্য চাহিদা নিলেও কোম্পানীগুলো ঔষধ সরবরাহ করছে না।
সেবা ফার্মেসী স্বত্তাধিকারী হারুন-অর-রশিদ জানান, আমরা বেক্সিমকো ফার্মসিউটিক্যালস ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের এনালজেসিক গ্রুপের কোন ঔষধ চাহিদার তুলনায় কম পাওয়ায় বিক্রয় করতে পারছি না। ঔষধের চাহিদা নিলেও সরবরাহ করছে না কোম্পানীগুলো।
বিসমিল্লাহ মেডিকেল হলের স্বত্তাধিকারী মোশাররফ হোসেন বলেন, এই গ্রুপের ঔষধ বেশি চলে কিন্তু সংকট থাকায় মানুষের সমস্যা তৈরী হচ্ছে।
জনতা ফার্মেসীর মালিক মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বর্তমান সময়টাতে জ্বর-সর্দি রোগ বেশি হচ্ছে। এ জন্য নাপা ও এইচ জাতীয় ঔষধের সরবরাহ কম থাকায় মানুষজনের কাছে বিক্রয় করতে পারছি না।
সোমা ফার্মেসীর স্বত্তাধিকারী দেলোয়ার হোসেন বলেন, করোনা ও ঋতু পরিবর্তনের কারণে সারা দেশে জ্বর-সর্দির রোগী বেড়ে যাওয়ায় এনালজেসিক জাতীয় ঔষধের উৎপাদন কম হওয়ায় চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ না করায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে স্কয়ার এর মেডিকেল প্রমোশন অফিসার মতিউর রহমান জানান, ঔষধ আছে তবে উৎপাদন কম হওয়ায় আগের তুলনায় কম সরবরাহ করতে হচ্ছে।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মেডিকেল প্রমোশন অফিসার হারুন-অর-রশিদ বলেন, কি কারণে কোম্পানী দিচ্ছে না তা বলতে পারবো না। তবে সামনের সপ্তাহে সরবরাহ করার চেষ্টা চলছে।
এ সংকটের বিষয়ে ফারিয়ার সভাপতি মোঃ শহীদুল্লাহ জানান, ঔষধ তৈরীর কাঁচামাল বাইরের দেশ থেকে আমদানী করতে হয়। আমদানী কম থাকায় ঔষধ উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে এ সংকট তৈরী হচ্ছে।
গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ রবিউল ইসলাম বলেন, এ বিষয়টা আমি সঠিকভাবে বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ বলেন, বিষয়টা আমার জানা নেই। এমন বিষয় হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে ময়মনসিংহের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কেউ ফোন ধরেননি।