ইটভাটায় যাচ্ছে আবাদি জমির মাটি,কমছে ফসল উৎপাদন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার রাত ০৯:১০, ৮ জানুয়ারী, ২০২০
তারেক আল মুরশিদ ,গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠছে ইটভাটা। আর এসব ইটভাটায় অবাধে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) বিক্রি করা হচ্ছে।একশ্রেণির ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে কমদামে মাটি কিনে বেশি টাকায় ইটের ভাটায় সরবরাহ করছেন। অনেক কৃষকও না বুঝেই লাভের আশায় ভাটা মালিকের কাছে মাটি বিক্রি করছেন। এসব মাটি পরিবহনের জন্য ট্রাক্টর
(কাঁকড়া) ব্যবহার করা হচ্ছে।এতে কাঁচা, পাকা রাস্তা বিশেষ করে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি এতে পরিবেশও হুমকির মুখে পড়ছে।গাইবান্ধার বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিবছর কমপক্ষে দুই-তিনটি করে নতুন ইটভাটা গড়ে ওঠে। বেশিরভাগ ইটভাটা গড়ে তোলা হচ্ছে আবাদি জমিতে। ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কঞ্চিপাড়া
গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘এক বিঘা জমির মাটি ছয় থেকে আট হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেসব জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি হয় সেসব জমিতে প্রায় তিন বছর পর্যন্ত ভালো আবাদ হয় না।’একই গ্রামের আজাদুল মিয়া বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র গড়ে উঠছে ইটভাটা। হাজারো একর জমির টপ সয়েল কেটে ইটভাটাতে ব্যবহার করায় উর্বরতা হারিয়ে উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া এর বিষাক্ত ছাইয়ের কবলে পড়ে কলাগাছ, জলপাইসহ সবুজ গাছগুলোর পাতা পুড়ে যাচ্ছে।’পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, ‘ইটভাটার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চারপাশের পরিবেশ। নষ্ট হচ্ছে ফসল। মানুষও নানা সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন।উল্লেখ্য, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ইটভাটা স্থাপনের লাইসেন্স দিয়ে থাকে।এক্ষেত্রে পরিত্যক্ত অনাবাদি জমি, নিচু জলাশয়ের ধারে, নদীর পাশে এবং কমপক্ষে চারদিকে ১ কিলোমিটার
জনশূন্য এলাকায় ইটভাটা স্থাপনের অনুমোদন দেয়ার কথা। কিন্তু গাইবান্ধার কোনো ইটভাটা মালিকই এসব শর্ত মানছেন না।