ঢাকা (দুপুর ১:০৩) শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News সিলেটে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম Meghna News দাউদকান্দিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন Meghna News কোটা আন্দোলন : সিলেট বিভাগে ২৮টি মামলা, ২০ হাজার মানুষ আসামী Meghna News ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক গৌরীপুরে ছুরিকাঘাত Meghna News টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের হামলা Meghna News ঢাকাসহ সারাদেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন Meghna News সারা দেশে আজ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি Meghna News যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারে সংঘর্ষ, হাসপাতালে নেয়ার পথে যুবকের মৃত্যু Meghna News ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২০ Meghna News ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ি বাঁধগুলো এখনো সংস্কার হয়নি, দুর্ভোগে উপকূলবাসী

স্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ডিভোর্স নোটিশ পাঠাল স্বামী

ডিভোর্স



পারিবারিকভাবে পূর্ব পরিকল্পনার মাধ্যমে ডিভোর্সী নারীকে বিয়ে করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পর পুনরায় ডিভোর্সের ফাঁদে ফেলে এক নারীকে নিঃস্ব করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সেলিনাবাদ গ্রামের মো. মোজাম্মেল হকের ছেলে মো. নজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। এতে ওই নারী তার দুই ছেলেকে নিয়ে পথে বসেছেন। অভিযোগ রয়েছে ছলেবলে কৌশলে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর পুনরায় ওই নারীকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠিয়েছেন নজিবুর।
এদিকে উপায় না পেয়ে দুই সন্তান নিয়ে নিঃস্ব ওই নারী আদালতে দুইটি মামলা দায়ের করেছেন।

জানা যায়, এক সন্তানসহ ডিভোর্স হয় ঢাকার যাত্রাবাড়ী মোমেনবাগ এলাকার মৃত জাহাঙ্গীর আহমেদের মেয়ে তানিয়া আক্তারের। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সন্তানসহ ডিভোর্সি নারী তানিয়া আক্তারের সাথে পরিচয় হয় শিবগঞ্জের সেলিনাবাদ এলাকার নজিবুর রহমানের। এরপর ওই নারী ডিভোর্স ও সন্তান থাকার বিষয়টি বললেও তা মেনে নিয়েই বিয়ের প্রস্তাব দেয় নজিবুর রহমান। পরে ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী তানিয়া আক্তার বলেন, বিয়ের পর নজিবুরের পরিবারও আমাদের বিয়েটা মেনে নেয়। এরপর গ্রামের বাড়ি শিবগঞ্জে নিয়ে আসলে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ী ও এলাকার বিভিন্ন লোকজনের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে আমার শাশুড়ী ও স্বামী আমাকে আদর যত্ন করে আমার মন জয় করে নিতে সক্ষম হয়। এ সময় আমার স্বামী নজিবুর শ্বাশুড়ীর প্রয়োজনের কথা বলে ও টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিলে আমার বাবার পাওয়া উত্তরাধিকার সূত্রের জমি বিক্রি বাবদ ১৫ লক্ষ টাকা ধার দিই। পরে স্বামীকে নিজের কাছে থাকা শেষ সম্বল প্রায় ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে সৌদি আরবে পাঠায়।

তিনি আরও বলেন, এ সময় শ্বশুর বাড়িতে থাকাকালীন সময়ে আমার খরচ না দেয়াসহ নানরকম নির্যাতন করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আর আমার কাছ থেকে নেয়া ১৮ লক্ষ টাকা নিয়েও নানরকম দূর্ব্যবহার করতে থাকে তারা। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশে বসলেও কোনো সমাধান হয়নি।

তানিয়া আক্তার বলেন, শিবগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী বেগমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শ্বশুর বাড়ির এলাকায় সমাধানের লক্ষ্যে বসলে আমার বড় ছেলেকে অস্বীকার করে স্বামী ও শ্বশুর শ্বাশুড়ীসহ তাদের পরিবার। এতে আমি আরও নিরুপায় হয়ে যায়। পরে মায়ের সাথে ঢাকায় ফিরে যাবার পর দিনই চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারী আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্সের কাগজ পাঠায় স্বামী নজিবুর রহমান। আর এ থেকেই সুস্পষ্ট প্রমাণ হয় পূর্ব পরিকল্পনায় সকল ব্যবস্থা করে তবেই তারা সমাধানে বসেছিল। আমাকে তালাক পাঠালেও দেনমোহর বাবদ ৩ লক্ষ ১০১ টাকা এখনো পরিশোধ করেনি।

এই অবস্থায় বাধ্য হয়েই ঢাকার সিএমএম আদালতে দুইটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান তানিয়া আক্তার। এর মধ্যে একটি যৌতুক মামলা, আরেকটি প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার মামলা। আর মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্বামী নজিবুর রহমান, শ্বশুড় মোজাম্মেল হক, শ্বাশুড়ী নাদিরা বেগম, ননদ মোরসালিনা, মোজহারিনা ও মোসলেমাকে।

এ বিষয়ে তাহেরা, সাগিরা, মর্জিনা বেগমসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, মেয়েটির একটি বড় ছেলে আছে তা জানা স্বত্বেও এবং ছেলেটিকে নিজের ছেলের স্বীকৃতি দিব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নজিবুর তানিয়াকে বিয়ে করে। এতে মন গলে যায় তানিয়ার। তাই স্বামী চাওয়া মাত্রই ১৫ লক্ষ ও তাকে বিদেশ পাঠানো বাবদ আরও ৩ লক্ষ টাকা মোট ১৮ লক্ষ টাকা দেয় তানিয়া৷ কিন্তু টাকা নেয়া হয়ে গেলে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের পক্ষ থেকে অমানবিক নির্যাতন শুরু হয় তানিয়ার ওপর। এখন তাকে ডিভোর্স পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তার দেনমোহরও পরিশোধ করা হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নজিবুর রহমানের এক নিকটাত্মীয় জানান, মুজিবুর রহমান বলতে প্রচন্ড অর্থলোভী প্রকৃতির। মেয়েটির কাছে অনেক টাকা আছে জানতে পেরেই তার সাথে ভালো ব্যবহার করে তার মন জয় করে তাকে ফাঁদে ফেলে টাকাগুলো হাতিয়ে নিয়েছে তারা। টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরই ছুড়ে ফেলে দেয়ার মত দুর্ব্যবহার করেছে। ৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে নজিবুরের ছেলে সন্তান হয়েছে। কিন্তু টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর সেই ছেলেরও কোন খোঁজ খবর রাখছে না তারা। আর তাই আদালতে যে মামলাগুলো হয়েছে আমরা চাই এর সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। পাশাপাশি তানিয়ার দেয়া ১৮ লক্ষ টাকা ও দেনমোহরের টাকা ফেরত দিয়ে দুইটি ছেলের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার দাবি জানায়।

এনিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেন তানিয়া আক্তারের থেকে বয়সে ৭ বছরের ছোট নজিবুর রহমান। মুঠোফোনে তিনি বলেন, সে (তানিয়া) আমার বাবা-মার সাথে থাকতে চাই না। তাই দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বনিবনা হচ্ছিল না। এর সূত্র ধরেই আমি আদালতের মাধ্যমে ডিভোর্স পাঠিয়েছি। পরে জানতে পারলাম, আমার নামে দুইটি মিথ্যা মামলা করেছে৷ ১৮ লক্ষ টাকা নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী বেগম জানান, এনিয়ে একাধিকবার বসে ও উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে সংসার টিকিয়ে রাখতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু তারা দুইজনই নিজেদের সিদ্ধান্তে অটুট। এমনকি উভয় পক্ষই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। অতএব, এ বিষয়ে এখন আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT