হেরোইনের সাথে লাদেনের সম্পর্ক নেই, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে দাবি পরিবারের
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ০৬:৩২, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩
তারাবীর নামাজ পড়ে বের হবার সময়ই মসজিদের সামনে থেকে আটক করা হয় শফিকুল ইসলাম লাদেনকে। এরপর তাকে সাথে নিয়ে বাড়িতে তল্লাসী চালায় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটলিয়ন-র্যাব ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির যৌথ অভিযানিক দল। বাড়িতে কিছু না পেলেও পাশের বাড়ির পেছনের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে ৭ কেজি হেরোইন উদ্ধারের দাবি করে র্যাব। লাদেনকে ফাঁসাতেই স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা আইন-শৃংখলা বাহিনীকে ব্যবহার করে এমন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে দাবী পরিবারের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৭ কেজি ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) মধ্যরাতে আটক শফিকুল ইসলাম লাদেনের পরিবার এসব দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা আড়াইটার দিকে জেলা শহরের একটি হোটেলে তার পরিবারের সদস্যরা এই সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে আটক শফিকুল ইসলাম লাদেনের ছোট ভাই মিনারুল ইসলাম বলেন, আমি ও আমার ভাই একসাথে মসজিদে নামাজ আদায় করছিলাম। আমার ভাই নামাজ শেষ করে বের হওয়া মাত্রই তাকে আটক করে র্যাবের সদস্যরা। পরে বাড়িতেও তাকে নিয়ে তল্লাশি করে আটক করে কিছুই পায়নি। পাশের বাড়ির পেছনের পরিত্যক্ত জায়গায় হেরোইন উদ্ধার করে আমার ভাইকে ফাঁসানো হচ্ছে। স্থানীয় কিছু মাদক ব্যবসায়ী বারবার এভাবে আমার ভাইকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে। অথচ
এখন পর্যন্ত কোনদিন তাকে কোন প্রকার মাদকসহ আটক করতে পারেনি আইন-শৃংখলা বাহিনী।
লাদেনের বোন সাগরী বেগম জানান, আমার ভাই একজন সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ। দিনমজুর ও কৃষি কাজ করে সংসার পরিচালনা করে। অথচ তাকে ৭ কেজি হেরোইন দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আটকের সময় মসজিদের মুসল্লী ও স্থানীয় বাসিন্দা মিলে প্রায় দুইশত লোক জমা হয়। কিন্তু র্যাবের লোকজন কারো কথা শুনেনি। জোড় কওে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে গেছে। অনেকদিন আগে আমার এক ফুফাতো ভাই র্যাবের সোর্সের কাজ করতো। সে সময় সে বেশকিছু অনিয়ম করে। তারই সূত্র ধরে আমাদের পরিবারের উপর এমন মিথ্যা মামলা করে ফাঁসানো হচ্ছে।
আরেক ছোট বোন নাজিরা খাতুন বলেন, আমার ভাইকে যে পরিমান হেরোইনসহ আটক করা হয়েছে তার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৭ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে র্যাবের লোকেরা। এতো টাকার মালিক অথচ খড়ের বাড়িতে বসবাস করে আমার ভাইয়ের পরিবার।
আমার ভাই কোনদিন পাবনা জেলা দেখেনি অথচ সেখানেও তার নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা চাই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আটক শফিকুল ইসলাম লাদেনের মেয়ে সারমিন খাতুনসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-৫ সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে ৭ কেজি ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার।
এ সময় র্যাব অধিনায়ক জানান, সীমান্তে ভারত থেকে আসা হেরোইন আমদানির মূলহোতা শফিকুল ইসলাম লাদেন। এর আগে র্যাব তিনবার অভিযান পরিচালনা করেও তাকে আটক করতে পারেনি। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ৫৩ বিজিবি ব্যাটলিয়নের সাথে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৫ সিপিসি-১ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের একটি অপারেশন দল। এ সময় তার বসতবাড়ির টয়লেটের ট্যাংকের পিছনে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ৭ কেজি ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ আটক করা হয় লাদেনকে।