ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে শেখ হাসিনার আহ্বান
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার বিকেল ০৪:০৫, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অবকাঠামো, শিল্প-কারখানা, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৃহত্তর লাভ অর্জনের জন্য বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতাকে বাণিজ্যের বাইরেও নিয়ে যেতে হবে। আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রেক্ষাপটে এতে বিনিয়োগ, অর্থ, পরিষেবা, প্রযুক্তি স্থানান্তর অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লির আইটিসি মৌর্য হোটেলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) যৌথ আয়োজনে আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প, উৎপাদন, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করতে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “বাই-ব্যাক ব্যবস্থার মাধ্যমে সময়, খরচ ও সম্পদ কমিয়ে ভারতীয় বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন করতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ ছিল ১,৩৭০.৩৫৭ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ১.১৫% অর্থাৎ ১৫.৭৫১ মিলিয়ন ডলার এসেছে ভারত থেকে।
শেখ হাসিনা বলেন, “সুতরাং স্পষ্টতই, দ্বিমুখী বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সুবিধা অর্জনের উপায় খুঁজে বের করার জন্য ব্যবসায়িক সম্প্রদায় এবং বাণিজ্য সংস্থাগুলোকে সম্পর্কিত করার মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতার প্রকৃত প্রয়োজন রয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে বিস্তৃত সুযোগ সুবিধা, আকর্ষণীয় প্রণোদনা নীতি এবং ধারাবাহিক সংস্কার রয়েছে।
তিনি বলেন, “বর্তমানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২৮টি হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে; যার লক্ষ্য শিল্প, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বিনিয়োগ এবং দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করা।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য মোংলা এবং মিরসরাইয়ে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা তাদের পণ্যগুলো শুধুমাত্র উত্তর-পূর্ব ভারতে নয়, বরং নেপাল, ভুটান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও রপ্তানি করতে সক্ষম করার জন্য বাংলাদেশ অনন্যভাবে অবস্থিত।”
গত ১০ বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য একটি চিত্তাকর্ষক বেড়েছে এবং ভারসাম্য অনেকটাই ভারতের দিকে ছিল।
এছাড়া, বর্তমানে উন্নত উৎপাদন ক্ষমতাসহ বাংলাদেশের ভারতের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করতে প্রস্তুত বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে দিল্লিতে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে ৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন তিনি।