জেনে নিনে ঈদের আগেই নিজের যত্ন নেবেন কিভাবে
নিজস্ব প্রতিনিধি বৃহস্পতিবার রাত ০৯:০৪, ৩০ জুন, ২০২২
ঈদের সময় নিজেকে সতেজ রাখতে চান সবাই। এত বড় উৎসব-আয়োজনে কাজের ঝক্কিও থাকে বেশ। আর রোজকার জীবনে ব্যস্ততা তো এক অমোঘ সত্য। তার মধ্যেই সহজ উপায়ে নিজের যত্ন নিতে পারেন ঈদের আগের সপ্তাহখানেক সময়ে।
ত্বক
লাবণ্যময় ত্বকের জন্য ত্বক পরিষ্কার এবং আর্দ্র রাখাটা ভীষণ প্রয়োজনীয়। টোনিংও আবশ্যক। রোজ মুখ পরিষ্কার করতে দারুণ কাজে দেবে প্রাকৃতিক উপকরণ বেসন। স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ছোলার ডালের বেসনের সঙ্গে প্রয়োজনমতো গোলাপজল মিশিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট মুখে মালিশ করে ধুয়ে ফেলুন। আর ত্বক তৈলাক্ত প্রকৃতির হলে মটর ডালের বেসনের সঙ্গে প্রয়োজনমতো গোলাপজল বা পানি মিশিয়ে একইভাবে ব্যবহার করুন। এই কয়েকটা দিন প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। চলুন তাহলে ধাপগুলো জেনে নেয়া যাক।
ত্বক যদি হয় স্বাভাবিক ও শুষ্ক
ধাপ ১: বেসন দিয়ে নিয়মমাফিক মুখ পরিষ্কার করুন।
ধাপ ২: ১ চা-চামচ গ্লিসারিন (পানি মেশানো যাবে না) এবং ২ চা-চামচ জ্বাল দেওয়া দুধ একসঙ্গে ফেটিয়ে নিন।
ধাপ ৩: এই মিশ্রণ মুখে লাগানোর ১০ মিনিট পর প্যাক লাগাতে হবে। প্যাকের জন্য লাগবে ১ চা-চামচ ময়দা, ১ চা-চামচ চালের গুঁড়া, ১টি খেজুর (বাটা) এবং গোলাপজল (প্রয়োজনমতো)। এই প্যাকে স্ক্র্যাবিংয়ের কাজও হবে।
ধাপ ৪: প্যাক লাগানোর ৫ থেকে ৭ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ধাপ ৫: ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
ধাপ ১: বেসন দিয়ে নিয়ম মাফিক মুখ পরিষ্কার করুন।
ধাপ ২: আধা চা-চামচ গ্লিসারিন, ১ চা-চামচ গোলাপজল, আধা চা-চামচের কম কর্পূর (বিকল্পে একটি ভিটামিন সি ট্যাবলেটের গুঁড়া)। এই টোনার লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
ধাপ ৩: ১ চা-চামচ মুলতানি মাটি, ১ চা-চামচ গ্লিসারিন, দেড় চা-চামচ গোলাপজল এবং ১ চা-চামচ পুদিনা পাতার রসের প্যাক লাগিয়ে নিন।
ধাপ ৩: ৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ধাপ ৫: ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
হাত
ঈদে মাংস কাটাকুটি, ভাগ-বাঁটোয়ারা, বিলিবণ্টনে ব্যস্ত থাকে দুই হাত। হাতের স্বাভাবিক কোমলতা বজায় রাখতে ঈদের আগে থেকেই যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
• আধা কাপ চিনি, কয়েক ফোঁটা অলিভ ওয়েল, ৪ টেবিল চামচ লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ কফিগুঁড়া ও ২ টেবিল চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন। পানি দেবেন না। মিনিট পাঁচেক পুরো হাত স্ক্র্যাব করার পর ধুয়ে ফেলুন। এরপর লাগিয়ে নিন ময়েশ্চারাইজার। ৩ থেকে ৪ দিন অন্তর স্ক্র্যাব করুন।
• যেকোনো ময়েশ্চারাইজারেই যে ত্বক ভেতর থেকে আর্দ্র হবে, তা কিন্তু নয়। প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার খুবই কার্যকর। আধা কাপ অ্যালোভেরা জেল, ৩ টেবিল চামচ গ্লিসারিন, ৩ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল, ৬ থেকে ৮টি ভিটামিন সি ট্যাবলেট গুঁড়া, ৩টি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস এবং ১ কাপ গোলাপজল বা মিনারেল ওয়াটার মিশিয়ে ময়েশ্চারাইজার তৈরি করে বোতলে রেখে দিন। অন্তত দুই মাস ব্যবহারোপযোগী থাকে। স্ক্র্যাবিং ছাড়াও যতবারই হাত ধোবেন, এই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
• চাইলে ২টি ডিমের কুসুম, ৩ টেবিল চামচ বেসন আর প্রয়োজনমতো কাঁচা দুধ (গুঁড়া দুধ গুলিয়েও হতে পারে) এবং গোলাপজল (বা পানি) দিয়ে প্যাক বানিয়ে হাতে লাগাতে পারেন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ২ দিন, এমনকি রোজ প্রয়োগ করলেও ক্ষতি নেই)। গন্ধটা খারাপ লাগলে সামান্য লেবুর রস যোগ করে নিন প্যাকে।
হাতের যত্নের অন্য আরেকটি উপায় হলো–১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া, আধা চা-চামচ লেবুর রস ও আধা চা-চামচ নারকেল তেলের মিশ্রণ দিয়ে হাত স্ক্র্যাব করে নিন ১০ মিনিট। হাত ধুয়ে নিন বা ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। নখে এরপর লেবুর টুকরা ঘষে নিন, দাগ-ছোপ চলে যাবে। ত্বক পাতলা হলে ত্বকে যাতে সরাসরি লেবু না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এরপর টক দই, বেসন, লেবুর রস ও মধু (প্রতিটি উপকরণ ১ চা-চামচ করে) দিয়ে প্যাক তৈরি করে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর হাত ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
চুল
আমলকীগুঁড়া (১ কাপ), মেথিগুঁড়া (আধা কাপ) ও শিকাকাইগুঁড়া (আধা কাপ) পরিমাণমতো ফুটন্ত পানিতে দিয়ে পেস্ট করুন। পেস্টটা কুসুম গরম হয়ে এলে মাথায় ও চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ১ থেকে ২ দিন অন্তর ব্যবহারে চুল পড়া কমে, চুল হয় ঘন-কালো ও প্রাণবন্ত।