হত্যা নাকি গুম জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মা’র সংবাদ সম্মেলন
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ রবিবার রাত ১১:৩৮, ২৯ আগস্ট, ২০২১
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর উপজেলা থেকে ৪ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সন্তান আফজাল হোসেনের (৩৭) বিষয়ে জানতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একজন অসহায় মা। রোববার (২৯ আগস্ট) দুপুরে পৌর এলাকার বিশ্বরোড মোড়ে অবস্থিত মডেল প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই আকুতি করেন তিনি।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার কুঠিপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল ইসলামের স্ত্রী ও নিখোঁজ আফজালের মা খাদিজা বেগম পঠিত লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে আফজালকে তার স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন গুম করেছে না হত্যা করেছে তা আমি ও আমার পরিবার জানতে চাই। বিগত ৪ বছর থেকে ছেলে আফজালের সাথে আমার কিংবা আমার পরিবারের কারোর কোন যোগাযোগ না থাকায় ছেলের শ্বশুর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতুলি ইউনিয়নের বকচর এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে তার মেয়ে অর্থাৎ আমার ছেলের স্ত্রী রোকশানা (৩২) জানায় তারা আমার ছেলের কোন খোঁজ জানেনা। কিন্তু প্রায় ১৫ বছর আগে মেয়ে রোকশানার সাথে আমার ছেলে আফজালের বিয়ে হয়। আর বিয়ের পর থেকেই ছেলে আফজাল তার শ্বশুড় বাড়িতে ঘর জামাই থাকার কারণে জাতীয় পরিচয়পত্রেও শ্বশুড় বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে আলাতুলি সীমান্তের ওপারে বিএসএফ আফজালকে মেরে ফেলেছে বলে রোকশানা আমাদের জানিয়েছিলো। আর আমরা না আসলে তারা লাশ ফেরত দেবেনা বলেও জানায় বৌমা। কিন্তু ছেলের লাশ নেয়ার জন্য আলাতুলি সীমান্তে গিয়ে খোঁজ নিলে এলাকার লোকজন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিজিবি এমন কোন ঘটনা ঘটেনি বলে আমাদের নিশ্চিত করেন। এরপর থেকে ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত আমার ছেলে আফজালের কোন খোঁজ মিলছেনা। সে জীবিত আছে নাকি মারা গেছে আমরা তা জানতে চাই।
খাদিজা আরো জানান, আমার ছেলের খোঁজ চাইতে ছেলের বউ রোকশানার পরিবারের কাছে বারবার শরনাপন্ন হলে তারা আমিসহ আমার স্বামী ও নিখোঁজ ছেলে আফজালের নামে যৌতুকের মিথ্যা মামলা দায়ের করে। পরে আমি জামিনে মুক্তি পেলেও আমার স্বামী আর নিখোঁজ ছেলে তা থেকে মুক্তি পায়নি। তারা বর্তমানে পরোয়ানাভুক্ত আসামি হয়ে আছে। এদিকে আদালতের নির্দেশে তানোর থানা পুলিশ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আমার বাড়ির মালামাল জব্দ করে আমাকে পথের ফকির করে দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এই মা বলেন, আমার ছেলে নিখোঁজ। যেহেতু সে জীবিত না মৃত এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমার পরিবার সর্বশান্ত সেহেতু আমি এমন অত্যাচারের বিচার চেয়ে রোকশানাসহ তাদের পরিবারের মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দায়ের করেছি। যেন তারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়।
আর তাই পরের বাড়িতে কাজ করে সামান্য অর্থ উপার্জণকারী এই মমতাময়ী মা কিন্তু তারপরও ছেলের কোন খোঁজ পাননি বলে জোড়ালো অভিযোগ করেছেন সংবাদ সম্মেলনে। সবকিছুর বিনিময়ে হলেও তিনি হারানো ছেলেকে ফিরে পেতে চান। আর বেঁচে না থাকলে তার কলজার টুকরা ছেলের মরদেহ পাবার আকাংখার কথা জানান সংবাদ সম্মেলনে।