শিবগঞ্জে দূর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বহিষ্কার
নিজস্ব প্রতিনিধি শনিবার রাত ০৮:২৭, ১১ জুলাই, ২০২০
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রানিহাটী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ এনে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটি। তবে এক মাস পূর্বে ১১ জুন বৃহস্পতিবার বহিষ্কারের পর বিষয়টি গোপন থাকলেও শনিবার (১১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি প্রকাশ পায়।
এ বিষয় নিয়ে শনিবার দুপুরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বললে তারা পরস্পর বিরোধী বক্তব্য প্রদাণ করেন। এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিসহ কর্মরত অন্য শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের দোকানঘর অবৈধভাবে দখল করে ভাড়ার ৪ লক্ষ টাকা তহবিলে জমা না দেয়া, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে বিলম্বের লক্ষ্যে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিসাধন, দোকানঘর মেরামতের নামে ২ লক্ষ টাকা ও বিদ্যুৎ বিলের ১ লক্ষ টাকা আত্মসাত, শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা আটকে রাখাসহ মোট ১৮টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন অভিযোগের কারণে কিছুদিন পূর্বে ম্যানেজিং কমিটি ও বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক তার বিপক্ষে অবস্থান নেন। পরে সভা করে ম্যানেজিং কমিটি তাকে অনিয়ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। এরপর দুই দফায় কামাল হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলেও তিনি নোটিশ গ্রহণ না করে প্রেরক বরাবর ফেরত দেন।
এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান মুঠোফোনে জানান, প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনরর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকেই অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিলো। পরবর্তীকালে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকেরা সভা করে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের চাকুরির শর্ত বিধিমালা ১৯৭৯ এর ২ (এ) ও ১৩ (১) ধারা মতে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। আর বহিষ্কারের অনুলিপি রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের চাকুরির শর্ত বিধিমালা ১৯৮৯ এর ১৪ (২) ধারা অনুসারে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। যারা আগামী ২ মাস অর্থাৎ ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে সঠিক ও নির্ভূল রিপোর্ট প্রদাণ করবেন।
আর অভিযোগগুলোর সত্যতা মিললে প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেননের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি দাবি করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে আর তারাই মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
এদিকে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান শিক্ষক এনামুল হক জানান, সম্প্রতিককালে দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে আসছেন। আর বহিষ্কারের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সমন্বয়ে মিটিং হয়েছে। আশা করি অতিদ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।