প্রতারণার অভিযোগে মেঘনা উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
মেঘনা নিউজ ডেস্ক শুক্রবার রাত ১০:৪৩, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২
ব্যাংকের চেয়েও বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে এবং কম দামে গাড়ি কেনার সুযোগ দেয়ার নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মানিকারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মলনে এ তথ্য জানান ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। জাকির হোসেনকে মেঘনা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মলনে ডিবি প্রধান জানান, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মানিকার চরের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। ২৩ লাখ টাকার গাড়ি ১৭ লাখ টাকায় বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে তিনি গাড়ি বিক্রি করেন।
এরপর সেই গাড়ি আবার ৭০ হাজার টাকা মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়ে সেই টাকাও আত্মসাৎ করেন।
এমনকি, তার ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন একাধিক সংসদ সদস্য ও সরকারী কর্মকর্তাসহ অন্তত তিনশ’ মানুষ। তাদের কাছ থেকে জাকির হোসেন হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। প্রতারণার টাকায় বাগিয়ে নেন নিজ জেলার রাজনৈতিক পদ-পদবী।
পুলিশ জানায়, কয়েক মাস আগে চেয়ারম্যান জাকির আরেকবার আটক হয়েছিলেন। কিন্তু সে যাত্রায় তিনি ছাড়া পান।
তখন তাকে তিনমাসের সময় দেন ভুক্তভোগি পাওনাদাররা। কিন্তু ছাড়া পেয়ে আবারও প্রতারণায় জড়িত হন জাকির। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় একাধিক মামলা।
গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মুগদা থানায় তার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা হয়। এর প্রেক্ষিতে ডিবি তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিম মামলাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে।
তদন্তে জানা যায়, জাকির চেয়ারম্যান বন্দর থেকে স্বল্প দামে গাড়ি কিনে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নেন। সেই গাড়ি রেন্ট-এ-কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় পরিচালনার জন্য চুক্তিও করেন।
একই গাড়ি দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে চুক্তি সম্পাদন করেন তিনি। একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের গাড়ি একাধিক জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি প্রধান জানান, জাকির চেয়ারম্যান ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পুরো টাকা নিয়ে ডাউন পেমেন্টে গাড়ি কিনতেন। আবার ব্যাংক থেকে গাড়ির বিপরীতে ক্রেতাকে না জানিয়ে ঋণ নিতেন তিনি। দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে এমন প্রতারণার কথা তিনি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।
এভাবে অবৈধ টাকায় জাকির বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ছেলেকে পাঠিয়েছেন আমেরিকায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন, নভেম্বরে তারও দেশ ছাড়ার কথা ছিলো।