পদ্মায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি : স্কুলভবন, মাদ্রাসাসহ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলিন
নিজস্ব প্রতিনিধি বৃহস্পতিবার সকাল ১০:২৮, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
মীর এম ইমরান, মাদারীপুর : অস্বাভাবিক হারে পদ্মায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গত ২ দিনে মাদারীপুরের শিবচরে ১ টি ৩তলা স্কুল ভবন, মাদ্রাসাসহ দেরশতাধিক ঘর-বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এর দুদিন আগে বিদ্যালয় সংলগ্ন দ্বিতল বিশিষ্ট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনসহ শতাধিক ঘর বাড়ি বিলীন হয়ে যায়। এখনো ভয়াবহ ভাঙ্গন ঝূকিতে রয়েছে চরাঞ্চলের ৪ টি স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, হাসপাতালসহ বহু স্থাপনা ফসলি জমি। চীফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আল নোমান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে।
একাধিক সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরে প্রথম দফা আগষ্টে শিবচর উপজেলার চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ি ও বন্দরখোলা এই ৩ টি ইউনিয়নে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। সে দফায় একটি মাদ্রাসা, ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি , ব্রীজ কালভার্ট, ফসলি জমি পদ্মা নদীগর্ভে বিলীন হয় । আবারো ২ য় দফা ভাঙ্গনে বুধবার সকালে কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের তিনতলা বিশিষ্ট মাগুরখন্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বিদ্যালয়ের ৫শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখা-পড়া বন্ধ হওয়ার আসখ্যা করছে। একই দিন কাঁঠালবাড়ি আশরাফিয়া মাদ্রাসাসহ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এর আগে সোমবার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনসহ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখনো ভাঙ্গন মুখে রয়েছে ৩টি স্কুল ভবনসহ ৪টি স্কুল, ২টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র-কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন হাটবাজারসহ ৩ ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা, হাজারো বসত বাড়ি। এছাড়া আড়িয়াল খা নদী তীরবর্ত্তী সন্ন্যাসীরচর ও শিরুয়াইল ইউনিয়ন দুটিও আড়িয়াল খার ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গত ১ আগষ্ট ভাঙ্গনের ভয়াবহতা পরিদর্শনে আসেন চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, ত্রান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাৎক্ষনিক নির্দেশে পদ্মা নদীর ২টি গুরুত্বপূর্ন স্থান ও আড়িয়াল খা নদের ২টি পয়েন্টে জিও ব্যাগ ডাম্পিং শুরু করলে ভাঙ্গনের গতিবেগ কমে আসে। কিন্তু গত কয়েক দিনের অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধিতে তীব্র স্রোতে নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। ২দফা ভাঙ্গনে চরাঞ্চলের ৩ ইউনিয়নের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভাঙ্গন কবলিতরা ঘর বাড়ি নিয়ে অন্যত্র সরে যাচ্ছে খতিগ্রস্ত্যরা । ঝূকিতে রয়েছে বিস্তৃর্ন জনপদ।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তীব্র স্রোত থাকায় ভাঙ্গন এলাকা খুবই ঝুকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। বিলীন হওয়া বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যাতে বন্ধ না হয় তার বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আল নোমান বলেন, নদীতে প্রচন্ড স্রোত রয়েছে। ভাঙ্গনের গতিও ভয়াবহ। নদীতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।