নড়াইলে দুই যুবকের নামে স্বামী পরিত্যাক্তা নারীর ধর্ষণ মামলা দায়ের
ইকবাল হাসান, নড়াইল বৃহস্পতিবার রাত ১০:৩১, ১৬ জুলাই, ২০২০
নড়াইলের লোহাগড়ায় স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারী (২১) কে ধর্ষণের অভিযোগে দুজন যুবকের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনার পর ওই নারীর চরিত্র নিয়ে নানা মন্তব্য বাজারে রটেছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, স্বামী পরিত্যাক্তা এক নারী অভিযোগ করেছেন লোহাগড়ার কামঠানা গ্রামের চন্ডি বিশ্বাসের ছেলে মিঠুন বিশ্বাসের সাথে আমার প্রেমজ সম্পক রয়েছে। কিন্তু মিঠুনের পরিবার আমার সাথে মিঠুনের বিবাহ দিতে রাজি না। মিঠুন বিশ্বাসের সাথে আমার বিবাহ দিয়ে দেবার প্রলোভন দেখিয়ে লোহাগড়া বাজার এলাকার মদিনাপাড়ায় নিজ বাসায় নিয়ে মাইটকুমড়া গ্রামের আঃ হান্নান হিরু শেখ জিনিয়াস (৩৬) গত ৮ জুলাই দুপুরে জোর করে আমাকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ১২ জুলাই রাত ১০ টার দিকে মাইটকুমড়া গ্রামের মৃত ইনজাহের মিনার ছেলে ইমরান (২৭) আমাকে তাবিজ ও তেলপড়া দেবার কথা বলে আমার বাড়ির পার্শ্ববর্তী সুবির ঠাকুরের বাগানে আসতে বলে। আমি ওই বাগানে গেলে জিনিয়াসের সহযোগিতায় ইমরান আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষক ইমরান আমাকে রাত ২ টার দিকে তার চাচার বাড়িতে নিয়ে যায়। এর পর খবর পেয়ে সেখান থেকে আমার পরিবার আমাকে নিয়ে আসে।
ওই নারীর পরিবার ও এলাকার লোকজন জানায়, গত ৫ বছর পূর্বে নড়াইল সদর উপজেলার উজিরপুর কলাইতলা গ্রামের চিত্তরঞ্জন দাসের ছেলে রিপন দাসের সাথে ওই নারীর বিয়ে হয়। ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর ওই নারী লোহাগড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ক্লিনার পদে চাকুরী পান। আইডি নং- ৮০২১। অনিয়ম ও চরিত্রগত কারনে সেখান থেকে চাকুরীচ্যুত হন ওই নারী।
ওই বেসরকারি হাসপাতালে চাকুরী করাকালে চলতি বছর মার্চ মাসে ওই নারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, এক যুবকের সাথে আমি বিবাহ ছাড়াই ৬ মাস সংসার করেছি। এক পর্যায়ে আমি অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়ি। তখন ওই ছেলেকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে সে আমাকে বলে বিয়েতো তোমাকে
করবোই। আপাতত বাচ্চা রাখা যাবেনা। পরে আমাকে ওষুধ এনে দেয়। আমি ওষুধ খেয়ে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলি। পরে ওই ছেলে আর আমার খোঁজ নেয়নি।
মাইটকুমড়া গ্রামের রইচ অভিযোগ করেন, ওই নারী অবৈধ ব্যবসা করে বেড়ায়। গত ১৩ জুলাই দুপুরে কুমারকান্দা এলাকায় আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়েছিল। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক লোকে জানায়, যুবকদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই নারী টাকা নিতো। টাকায় নিজেকে বিক্রি করতো।
পুলিশ জানায়, এঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে জিনিয়াস ও ইমরানকে আসামী করে বুধবার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং- ১৪/১৬২। নড়াইল সদর হাসপাতালে ওই নারীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, আসামী ইমরানকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।