ত্রুটি থাকায় শতভাগ সুফল মিলছেনা সরকারের নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীগুলো
মোঃ কামরুজ্জামান শুক্রবার রাত ১০:০৯, ৮ মে, ২০২০
মোঃ মনিরুজ্জামান, ভূরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ সরকারের নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীগুলো বাস্তবায়নে কিছু ত্রুটি থাকায় শতভাগ সুফল মিলছেনা বলে দাবী করে কর্মসূচীগুলোর সুবিধাভোগীদের শতভাগ সেবা নিশ্চিতে বেশ কিছু সুপারিশ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে ইউপি চেয়ারম্যানগণ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ওই উপজেলার অধিকাংশ চেয়ারম্যান। সম্মেলনে উপজেলার বলদিয়া ইউপি মোখলেছুর রহমান লিখিত সুপারিশ পাঠ করেন। সম্মেলনে উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী মোল্লা, তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল হক শাহীন শিকদার, শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী, জয়মনিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) হাফিজুর রহমান, আন্ধারীঝাড় ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জাফর আলীসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ তুলে ধরে একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবেন বলে সম্মেলনে জানান চেয়ারম্যানগণ। লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, সরকারের দেয়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচী যেমন রেশনকার্ড, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, ভিজিডি কার্ডসহ বিভিন্ন কর্মসূচীতে সরকারের প্রত্যাশা শতভাগ পূরণ হচ্ছে না কিছু ত্রুটির কারণে। এতে অনেক অসহায় গরীব নিজের নামে সুবিধা থাকলেও তা জানেন না বলে উল্লেখ করেন স্বয়ং চেয়ারম্যান। একই সাথে বলেন, অনেক পরিবার একাধিক সুবিধা ভোগ করছেন। গরীবের টিপসই আইডি কার্ড ও ছবি ব্যবহার করে চেয়ারম্যান মেম্বার ও নেতাকর্মীরা কার্ড বানিয়ে নিজ পকেটে রাখার সুযোগ থাকায় চাল টাকা ও আত্মসাতের সুযোগ থাকে। এক্ষেত্রে পূর্বের ও নতুন রেশন কার্ডের সুবিধাভোগীদের ডিজিটাল টিপসই ব্যবহার করে সুবিধাভোগীর স্বামী-স্ত্রীর ছবি, ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে ব্যাংকে হিসাব খুলে তার মাধ্যমে সুবিধা দিলে কারও পক্ষে টাকা আত্মসাতের সুযোগ থাকবেনা এবং ১০ টাকা দরের চালের ডিলারগণ প্রচার না করে সর্বোচ্চ তিন দিনের মধ্যে বিতরণ শেষ করেন। এতে অনেকের কার্ড থাকার পরও চাল পায়না। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের বাধ্যতামূলক জানানো এবং কমপক্ষে সাত দিন প্রচার করা প্রয়োজন বলে সুপারিশ করা হয় এসময়। একই পরিবার যাতে একাধিক সুবিধা নিতে না পারে সেজন্য পরিবারভিত্তিক আইডি নম্বর ব্যবহার করে পিডিএফ ফাইলে সংরক্ষণ করে সহজেই সার্চের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে তিনি বা তার পরিবারের কেউ পূর্বে সুবিধা নিয়েছেন কিনা। এছাড়া সম্প্রতি সময়ে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের ত্রাণ বিতরণেও অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার অনেক ত্রাণ বরাদ্দ দিলেও বন্টনের সমস্যার কারণে অনেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ একাধিকবার পেয়েছেন। এক্ষেত্রে ডাটাবেজ থাকলে একজন একাধিকবার পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়বে। একই সাথে মোবাইল একাউন্টের মাধ্যমে আগামীতে অর্থ সহায়তা দেয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেকের নিজস্ব মোবাইল না থাকায় তারা অন্যের মোবাইল নম্বর দিয়ে দিচ্ছেন। এতে জটিলতা তৈরী হতে পারে বলে চেয়ারম্যানগণের সুপারিশে উল্লেখ করেন। ঈদের সময় দেয়া ভিজিএফের ক্ষেত্রে তালিকা করার সময় বেশি দিলে সেখানে স্বচ্ছতা আনা সম্ভব। এছাড়াও উল্লেখিতভাবে ইউনিয়নের সুবিধাভোগীদের নামের ডিজিটাল তালিকা করলে সব ক্ষেত্রে সুফল আসবে। সম্মেলনে চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, কৃষি ভর্তুকির বীজ সারের অধিকাংশই প্রকৃত কৃষকরা পাননা। একই সাথে স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ তুলতে গেলে কাগজপত্রের অজুহাতে কৃষকগণ হয়রানীর শিকার হয়। এক্ষেত্রে বীজ, সার ও ঋণ না দিয়ে ভর্তুকির অর্থ দিয়ে সার, কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতির দাম কমিয়ে এবং কম টাকায় কৃষকদের সেচ সংযোগসহ বিদ্যুৎ বিলে সরাসরি ভর্তুকি দিলে কৃষকরা উপকৃত হবেন বলে সুপারিশ করেন চেয়ারম্যানগণ। সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানগণ জানান, শুক্রবার অফিস বন্ধ হওয়ায় অফিস খোলার দিন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবেন তারা।