পাগলা মসজিদের বাক্সে দানের রেকর্ড
নিজস্ব প্রতিনিধি শনিবার রাত ০৯:২৯, ১ অক্টোবর, ২০২২
যেন টাকার খনি। সিন্দুক খুললেই কোটি কোটি টাকা। মানুষও দু’হাত ভরে দান করেন এ মসজিদে। টাকার হিসাব শেষে টাকার অঙ্ক শুনে বিস্ময়ে চোখ কাপালে ওঠে লোকজনের।
শনিবার (০১ অক্টোবর) সকাল ৮টায় কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে আটটি সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ১৫ বস্তা টাকা। সারা দিনে এগুলো গুনে পাওয়া গেল তিন কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা। এবার দানের পরিমাণ আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, প্রায় তিন মাস পর পর খোলা হয় মসজিদের সিন্দুক। প্রতিবারই তিন থেকে চার কোটি টাকা মেলে এসব সিন্দুকে। শুধু দেশি টাকা নয়, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, সোনা-রুপার অলংকারও পাওয়া যায় অনেক। মাঝেমধ্যে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশে লেখা চিঠিপত্রও থাকে সিন্দুকে। রোগমুক্তি, বিপদ-আপদ থেকে রক্ষাসহ নানা বাসনার কথা লেখা থাকে ওই সব চিঠিতে।
সর্বশেষ জুলাই মাসের ২ তারিখে খোলা হয়েছিল পাগলা মসজিদের দানের সিন্দুকগুলো। তখন সেখানে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার বাদে পাওয়া যায় তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা। এর আগে মার্চে পাওয়া যায় তিন কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। তারও আগে গত বছর নভেম্বরের ৬ তারিখ সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় তিন কোটি সাত লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা।
এবার দুই মাস ২৯ দিন পর আজ শনিবার কঠোর নিরাপত্তা আর বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে খোলা হয় মসজিদের আটটি সিন্দুক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মসজিদের সিন্দুক খোলা উপকমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোহরা সুলতানা যূথী, মোসাম্মাদ নাবিলা ফেরদৌস, এনডিসি সুশান্ত সিংহ প্রমুখ।
সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিন্দুকের টাকা-পয়সা বস্তাবন্দি করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকজন। বস্তাগুলো মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। যে ব্যাংকে পাগলা মসজিদের টাকা জমা হয়, সেই ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদ কমিটির লোকজন, মাদরাসার ছাত্রসহ প্রায় দুই শতাধিক লোক টাকা গণনা শুরু করে।
পাগলা মসজিদের সভাপতি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, ‘মসজিদের দানের টাকা দিয়ে এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের বহুতল আধুনিক সুযোগ-সুবিধাযুক্ত দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। ওই কমপ্লেক্সে ৬০ হাজার মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকবে। নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থাও থাকবে সেখানে। থাকবে সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ আরো নানা আয়োজন। এ প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছি। এতে প্রকৃতপক্ষে কত খরচ হবে তারা তা চূড়ান্ত করে আমাদের জানাবে। এরপর কাজ শুরু হবে কমপ্লেক্সের। ’