ঢাকা (সকাল ৮:০৭) বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


ঝুঁকি ও অভাব নিয়ে রাজবাড়ীতে সাধুুলালের বসবাস

সাজাদুল ইসলাম কুড়িগ্রাম সাজাদুল ইসলাম কুড়িগ্রাম Clock রবিবার সকাল ১০:১৬, ৩০ আগস্ট, ২০২০

কুড়িগ্রামের উলিপুর  উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের মুন্সিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা সাধু লাল(৫৩)।পেশায় একজন মুচি।নেই কোনো সম্পত্তি, বাড়ী বা ঘর।মুন্সিবাড়ীর খাস জমিতে  ছোট্ট একটি টিনের চালায় তিন কন্যা নিয়ে বাস করতেন।
স্ত্রী আদরি দাস ছোট মেয়ে আরতি(৫) জন্মের কিছুদিন পর প্যারালাইসেস হয়ে প্রায় ৫ বছর আগে মারা যান।বড় মেয়ে সরস্বতী (১১) বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও মেঝো মেয়ে ফাল্গুনী(৮)।  যে বয়সে স্কুলে যাওয়ার কথা,সহপাঠীদের সাথে মুক্ত মনে ছোটা ছুটি করে খেলা করার কথা, ঠিক সেই বয়সেই ফাল্গুনীকে হাল ধরতে হয়েছে সংসারের।রান্না থেকে শুরু করে বড় ও ছোট বোনের খাওয়া,গোসল সবকিছুর তদারকির দায়িত্ব ফাল্গুনীর কাধে।
গত জুন জুলাইয়ের ৩ দফা বন্যা ও অবিরাম বর্ষণে অর্থের অভাবে মেরামত করতে না পাড়ায় সাধু লালের সেই টিনের চালাটি ভেঙে  নষ্ট হয়ে বসবাসের অযোগ্য।
প্রায় দেড় মাস ধরে ২’শ বছর আগে  নির্মিত ধরণীবাড়ী  রাজবাড়ীর বারান্দায় ৩ কন্যা সন্তান নিয়ে অনিরাপত্তায় বসবাস  করছে  সাধু লাল।কখন যেন ছাদ ভেঙে মাথায় পড়ে।সামান্য বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে বারান্দায় পানি দিয়ে ভরে যায়।
অতি কষ্টের সংসার তার। প্রায় দিন ঘরে খাবার থাকে না। তিন সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে হিমশিম খান।সকালে মেঝো মেয়েসহ রান্না করে খেয়ে কাধে গামছা, হাতে ছোট ব্যাগ নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে কাজ  করেন।করোনা ভাইরাসের কারণে  বাড়ীতে অনেকে  কাজ করাতে চান না।  কোন দিন কাজ হয় আবার কোন দিন হয় না।
সাধু লাল অশ্রুঝরা নয়নে কান্না করে  বলেন,বাড়ী ঘর নাই মুন্সিবাড়ীর বারান্দায় ছোট তিনটি নির্বোধ মাসুম বাচ্ছা রেখে সকালে কাজে যাই ওদের চিন্তা ভাবনায় ঠিকভাবে কাজে মনোযোগ দিতে পারি না। এদিকে করোনার কারণে কেউ কাজ করাতে চায়না।অভাবের কারণে ঠিকভাবে ওদের মুখে খাবার তুলে দিতে পাচ্ছি না।আমি তিন কন্যা নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার অনেক মানুষকে ঘর-বাড়ী বানিয়ে দেয়। আমার বাড়ীটা যদি  ভাল করে দিত, আর কিছু নগদ টাকা পেলে মা মরা তিনটা সন্তান নিয়ে চিন্তা মুক্তভাবে বাঁচতে পারতাম।সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন একটি বাড়ি যেন আমাকে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, খুবই অসহায় অবস্থায় দিন যাচ্ছে এ পরিবারের। মাথা গোঁজার ঠাই নেই তাদের। সংসারে অভাব লেগেই থাকে। সীমিত আয়ে সংসার কোনো মত চলে। কোনো উৎসব এলে খুজে চেয়ে কেনাকাটা করতে হয়। এ পরিবারের দিকে মেম্বার ও চেয়ারম্যানের নজর দেওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে ধরণীবাড়ী  ইউনিয়ন পরিষদ  চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ফুুলু প্রতিদিনের সংবাদকে জানান ,বিষয়টি আমি জানি এবং তাদের দেখেও এসেছি। তিনি পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা করবেন বলে জানান।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT