ঢাকা (সকাল ১১:১০) শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

চাঁপাইনবাবগঞ্জে অর্থের বিনিময়ে ধর্ষণের রফাদফা করার ক্ষোভে কিশোরীর আত্মহত্যা

<script>” title=”<script>


<script>

নিজ ঘরে এক কিশোরীর আপন চাচাতো ভাই দ্বারা জোরপূর্বক ধর্ষণের জেরে অনুষ্ঠিত হওয়া এক সালিসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড কমিশনার মতিউর রহমান মটন মিয়ার করে দেয়া সালিশের সমাধান ও সালিশে ওই কিশোরীকে নানাভাবে করা অপমান সইতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেও ওই দিন বিকাল সাড়ে ৪টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে মারা যায় ওই কিশোরী।

বিষপানে আত্মহত্যাকারী ওই কিশোরী হচ্ছে- চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের দ্বারিয়াপুর মহাজনপাড়া মহল্লার সাদিকুল ইসলামের মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী আসিফা খাতুন (১৩)। আর ধর্ষক তারই চাচাতো ভাই একই এলাকার মো. তৌহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল বাশির (২২)।

এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, আসিফার সাথে তার আপন চাচাতো ভাই বাশিরের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এই সম্পর্কের সূত্রে ২০ সেপ্টেম্বর রোববার দিবাগত রাতে আসিফার ঘরে ঢুকে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বাশির। আর বিষয়টি মেয়ের মা জানতে পেরে বাশিরকে বাইরে থেকে ঘরে অবরুদ্ধ করে তার পিতা তৌহিদুলকে খবর দেয়। এ সময় আসিফার সাথে তার ছেলের বিয়ের কথা দিলে এবং বিষয়টি কাওকে না জানানের কথা বলে তবেই ছেলে বাশিরকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান তৌহিদুল।

কিন্তু ছেলের সাথে আসিফার বিয়ের কথা দিলেও গত দুই দিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মতিউর রহমান মটন মিয়ার সহযোগী মাহতাবের মাধ্যমে তৌহিদুল ধর্ষক ছেলে বাসিরের অনুপস্থিতিতে মটন মিয়ার বাসায় উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিসে বসেন বলে জানান আসিফার মা। আর ওই সময় অনুষ্ঠিত সালিসে ধর্ষক বাসিরকে ৭২ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও কমিশনার মটন ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেয়ার কথা বলে এবং অসিফার উদ্দেশ্যে নানা অশালীন কথা বলে অপমান করে। তবে ওই সময় অর্থের বিনিময়ে সালিশ না মেনে সকলের সামনে আসিফা সাফ জানিয়ে দেয় এ বিচার সে মানেনা। সে বাসিরকেই বিয়ে করবে না হলে বিষপানে আত্মহত্যা করবে। আর এটি সে করেই ফেলেছে বলে জানান নিহত আসিফার বড় বোন ও ভাবী।

এদিকে স্থানীয় কয়েকজন যুবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, টাকা ছাড়া কোন শালিসে যাননা কমিশনার মটন মিয়া। যে পক্ষ তাকে বেশি টাকা দিবে তার পক্ষেই রায় দেন তিনি। আর টাকার লেনদেন করে তার সহযোগী মাহতাব।

এ বিষয়ে কথা বলতে কমিশনার মতিউর রহমান মটন মিয়ার বক্তব্য নিতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে তার দেখা পাওয়া গেলেও তিনি এ বিষয়ে কোন কথা না বলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যান।

তবে নবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শনিবার দুপুরেই ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট আসিফার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে পরিবারের পক্ষ হতে নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হলে মূল আসামী ধর্ষক বাসিরসহ তার মা-বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর তদন্ত শেষে প্রকৃত ও সঠিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT