ঢাকা (দুপুর ১:৩৬) শনিবার, ৪ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


কেশবপুরে পাট কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও

কৃষি সংবাদ ২৬৪৩ বার পঠিত

মোরশেদ আলম, যশোর মোরশেদ আলম, যশোর Clock বৃহস্পতিবার বিকেল ০৪:২৮, ২০ আগস্ট, ২০২০

পাটকে বাংলাদেশে সোনালী আঁশ বলা হয়ে থাকে। পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসলের মধ্যে একটি। বাংলাদেশ পাট বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে, তাই পাটকে সোনালী আঁশ বলা হয়। কিন্তু দিন দিন বাংলাদেশে পাটের উৎপাদন কমে যাচ্ছে।তার প্রধান কারণ হলো পলিথিনের ব্যবহার ব্যাপক আকারে বেড়ে যাওয়া,পাটের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া,পাট চাষের সাথে সংশ্লিষ্ট দ্রব্যাদির দাম বেড়ে যাওয়া,সালের দাম বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। তবে এখন রোপা পদ্ধতিতে চাষ করায় পাটের উৎপাদন বেড়ে গেছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। তাই কৃষকরা আবার পাট চাষের দিকে মনোযোগী হয়েছে।

যশোর কেশবপুরে সোনালী আঁশ পাট কাটা ও ধোয়া শুরু হয়েছে আর পুরুষের পাশাপাশি এই কাজে সহযোগিতা করছেন নারীরাও।

ইতিপূর্বে অনেক পাট চাষীরা মাঠের পাট কেটে জাগ দিয়ে ধুইয়ে তুলেছেন। রোপা পাটের বাম্পার ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

কৃষকরা তাদের পাটক্ষেতে সময়মত পরিচর্যা করার কারণে এই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চলতি বছর কেশবপুর উপজেলায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাট রোপন করেছে কৃষকরা। আর প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে সময় মত পাট কেটে ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা বলে জানান। শ্রমের দাম বেশী হলেও কৃষকরা পাট বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে অনেকেই জানান। বুধবার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, মাঠ জুড়ে পাট আর পাট।

তবে কৃষকরা বলছেন, পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলন, সমান দূরত্বে রোপনের কারণে গাছ ছোট বড় হওয়ার সম্ভাবনা কম, নিড়ানীর সুবিধার কারণে আধুনিক এ পদ্ধতির পাট চাষ এলাকা ভেদে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

এক সময় পাটের ব্যবহার বেশী হওয়ায় একে সোনালী আঁশ বলা হতো। কিন্তু বর্তমান প্লাষ্টিক ও নাইলনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এ সোনালী আঁশের বাজারে ধস নেমেছিল। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা পাটের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। এমন সময় এ উপজেলার কৃষকরা অল্প খরচে অধিক ফলন পেতে উদ্ভাবন করেন রোপা পদ্ধতির পাটের আবাদ। পরীক্ষামূলক আবাদে কৃষকরা বাম্পার ফলন পাওয়ায় এ বছরে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করেছে কৃষকরা। উপজেলার পৌরসভাসহ, ত্রিমোহিনী, সাগরদাঁড়ি, মজিদপুর, বিদ্যানন্দকাটি, মঙ্গলকোট, কেশবপুর সদর, পাঁজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরিঘোনা, সাতবাড়িয়া, হাসানপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষকরা এ পদ্ধতির পাট চাষে ঝুঁকে পড়েছে। মজিদপুর গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন, জামাল হোসেন, ব্রহ্মকাটি গ্রামের আব্দুল লতিফ, তারিফ মোড়ল, রামচন্দ্রপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম, খোকন সরদারসহ উপজেলার অনেকেই পাট চাষীরা জানান, আমরা অনেক বছর আগে থেকে এ পদ্ধতিতে পাটের আবাদ করছেন। এ বছরও আমরা পাট চাষ করেছি।

সরেজমিনে পাট চাষীদের ক্ষেত পরিদর্শনকালে তারা জানান, এ বছর ভালো বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানের বীজ তলার মত পাটের বীজতলা তৈরী করে বীজ রোপন করেন। ২২ দিন বয়সের চারা তুলে ক্ষেত তৈরী করে নির্দিষ্ট ব্যবধানে সেখানে পাটের চারা রোপণ করেছিলেন। চারার বয়স ১০ দিন হলে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেন।সার প্রয়োগ করায় কৃষকরা পাটের বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

তবে কৃষকরা আশা করেছেন এ বছর পাটের মূল্য বেশী পাবো। সে জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছরে অনেক চাষীরা পাট চাষে ঝুকে পড়েছেন।

পাট চাষীরা বলেন, আমরা আশা করছি প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে সুন্দর পরিবেশে পাট কেটে ঘরে তুলতে পারবো এবং লাভবান হবো।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, এবার উপজেলায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাট রোপন করেছে কৃষকরা। সময় মত পাট কেটে তারা ঘরে তুলতে পারবেন এবং প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে কৃষকরা পাট বিক্রি করে লাভবান হবেন।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT