ঢাকা (রাত ২:০৫) শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং

কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-মেঘনা) আসনে নির্বাচনী প্রচারে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়

<script>” title=”<script>


<script>

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জেলার দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-১ আসনে নির্বাচনী আবহ বিরাজ করছে। বড় দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তৃণমূলের পাশাপাশি কেন্দ্রের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়িয়েছেন প্রার্থীরা।রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঝুলছে প্রার্থীদের ছবিসংবলিত পোস্টার-ব্যানার।যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন সমাবেশ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। ভোটাররাও প্রার্থীদের নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। উন্নয়নের ফিরিস্তি নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতারা। তবে নীরব থেকে কৌশলে মাঠ গুছিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

আসনটি মূলত বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল।স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সাল থেকে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এ আসনে জয়ের মুখ দেখেনি।নব্বইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১৯৯১ সালসহ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ১২ জুন এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি বিএনপির একক শক্ত প্রার্থী। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটি দখলে নেয়।এমপি হন আওয়ামী লীগের মেজর জেনারেল (অব.)সুবিদ আলী ভূঁইয়া। খন্দকার মোশাররফকে হারিয়ে ৩৫ বছর পর আসনটি দখলে নেয় আওয়ামী লীগ।সবশেষ ২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে সুবিদ আলী ভূঁইয়া দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন।আগামী নির্বাচনেও তিনি দলের শক্তিশালী প্রার্থী।নির্বাচনী ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে বর্তমান এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘৯ বছরে এলাকাকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়েছি।আমার একান্ত প্রচেষ্টায় দুই উপজেলায় হাজার কোটি টাকার বেশি উন্নয়ন কাজ হয়েছে।নদীদ্বীপ মেঘনা উপজেলার আমূল পরিবর্তনে আমি ব্যাপক কাজ করেছি এবং আরও বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছি।এ উপজেলায় এডিবির অর্থায়নে ১৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাটেরচর-ওমরাকান্দা ১২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করেছি।ফলে ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে মেঘনা উপজেলায় যাতায়াতের ব্যবস্থা হয়েছে।দাউদকান্দির প্রতিটি গ্রামের সড়ককে মূল সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।এছাড়া দৃষ্টিনন্দন শিশুপার্ক,এতদাঞ্চলের বৃহৎ ঈদগাহ গেট, মাঠ,মেহরাব নির্মাণ,ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ৪২ ফুট উচ্চতার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছি।এলাকাকে শত ভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়েছে।এ ছাড়া উপজেলার জুরানপুর এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা,এতিমখানা,স্কুল-কলেজ,লাইব্রেরি, ডাকঘর, ব্যাংক,হাসপাতাল,বাজার টেলিফোন এক্সচেঞ্জ,স্টেডিয়াম,কবরস্থানসহ ৪০টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি।এরই মধ্যে শুরু হওয়া নির্বাচনী প্রচারে তিনি ভোটারদের কাছে এসব তুলে ধরছেন।

আগামী নির্বাচনে সুবিদ আলী ভূঁইয়ার মনোনয়ন অনেকটা চূড়ান্ত এমন খবর এলাকায় প্রচার থাকলেও দলীয় মনোনয়নের আশায় দৌড়ঝাঁপ করছেন দলের আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী।তিনি হচ্ছেন- মেঘনা উপজেলার রূপকার হিসেবে পরিচিত ও উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি এবং ওই উপজেলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান মো.শফিকুল আলম। ছাত্র জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন,দুর্গম ও অবহেলিত মেঘনা উপজেলায় ক্লিন ইমেজের এ নেতার হাত ধরে সর্বত্রই লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া এবং তার নেতৃত্বে দলের অবস্থানও এখন অনেক শক্তিশালী।স্থানীয়রা জানায়,দলমত নির্বিশেষে সবার কাছেই তিনি সফিক ভাই।দ্বীপ উপজেলাবাসী সফিকুল আলমকে এমপি হিসেবে দেখতে চান।আগামী সংসদ নির্বাচনে দল তাকে মূল্যায়ন করবে- এমনটাই প্রত্যাশা মেঘনাবাসীর।

এছাড়া কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আবদুল মান্নান এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন বলে প্রচার রয়েছে।আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি মাঠে থাকবেন এবং কেন্দ্রের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ রাখছেন বলে জানা গেছে।এদিকে আওয়ামী লীগে বেশ কিছু কারণে অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও এদিক থেকে বিএনপি সুবিধা জনক অবস্থানে,দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ।হামলা-মামলা জেল-জুলুমসহ নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এ আসনে বিএনপি তাদের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে।কুমিল্লা-১আসনে বিএনপির সম্ভাব্য একক প্রার্থী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন কৌশলে মাঠ গুছিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা।প্রতি সপ্তাহেই তিনি এলাকায় আসছেন এবং দলীয় সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আসনটি পুনরুদ্ধারে জোরালো অবস্থান নিয়ে নানা দিকনির্দেশনা নিচ্ছেন।নির্বাচন সামনে রেখে উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের কমিটি গঠনসহ কৌশলে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।ড.মোশাররফের অনুসারীরা মনে করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী যত শক্তিশালীই হোক না কেন আগামী নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর জয়ে কোনো অসুবিধা হবে না।

ইসলামী ঐক্যজোটের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের সহকারী মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন।সূত্র জানায়,একক প্রার্থী হিসেবে দলের পক্ষ থেকে তার মনোনয়ন চূড়ান্ত।২ বছর পূর্বে মেঘনায় ঈমান আক্বিদা সংরক্ষণ কমিটির ব্যানারে ভন্ড পীর ও মাদক বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন মেঘনার কৃতি সন্তান মাওলানা আলতাফ হোসাইন।গত বছর তাঁর নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত সাতানি আশরাফুল উলুম মাদরাসায় বার্ষিক সম্মেলনে এসেছিলেন হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী। নদীচর ঘেষা মেঘনায় হেফাজত প্রধানের আগমনও এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এসব কারণে দু’উপজেলার ইসলাম পন্থী জনগণের কাছেও তিনি বেশ জনপ্রিয়।এছাড়া স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন মাদরাসার উন্নয়নে তার ভূমিকা প্রশংসনীয়।

এ ব্যাপারে মাওলানা আলতাফ হোসাইনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,মেঘনা-দাউদকান্দির জনগণ চরম অবহেলা ও বঞ্চণার শিকার।বিভিন্ন সময়ে জনগণের ভোটে বিজয়ীরা দু’উপজেলায় কাঙ্খিত ও কাঠামোগত উন্নয়নে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।সন্ত্রাস ও মাদক ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকভাবে।সম্ভাবনাময়ী ছাত্র ও যুব সমাজ আজ ধ্বংসের পথে।আমি মনে করি, শিক্ষা,সংস্কৃতি,ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে সন্ত্রাস,মাদক ও দূর্নীতিমুক্ত আধুনিক সমৃদ্ধ মেঘনা-দাউদকান্দি গড়া এখন সময়ের দাবী।এই দাবী পূরণে ও মানবসেবার মহানব্রত নিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আমি ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব ইনশাআল্লাহ।আশা করি, জনগণ আমাকে মূল্যবান ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দিবে।

হেফাজত নেতা,নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিপ্লবী আলেম,তারুন্যের অহংকার,বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দীন।তিনি মেঘনা উপজেলার সাতানী গ্রামের কৃতিসন্তান। মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন নাস্তিক ব্লগার, ভন্ডপীর, ইসলাম বিরোধী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল ইস্যুতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছেন।তিনি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে নির্বাচন করায় আলেম- ওলামা ও ধর্মপ্রান মুসলমানসহ সকলের কাছে সুপরিচিত।এবারও তিনি সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব,এদেশের রাজনৈতিক ও আধ্যাতিক নেতা হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.প্রতীক বট গাছ নিয়ে নির্বাচন করবেন। মেঘনা নিউজ থেকে নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে মুফতি মহিউদ্দীন বলেন,হযরত হাফেজ্জী হুজুরের অনুকরনে আমিও এলাকার জনগণকে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার পক্ষে তাদের ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিবো।আল্লাহ বিজয়ী করলে ঘুষ- দুর্নীতি ও অবিচার বন্ধ করে ন্যয় ও ইনসাফ ভিত্তিক সুশাসন প্রতিষ্ঠত করবো,মেঘনা- দাউদকান্দিকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে সাজাবো। ইনশাআল্লাহ।

অপরদিকে এ আসনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির অবস্থান এখন অনেক মজবুত।এ আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মোঃ ইফতেকার আহসান হাসান জোটের মনোনয়ন পেতে ব্যাপক দৌড়ঝাপের পাশাপাশি এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও দলের চেয়ারম্যান পল্লী বন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদারসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে আমি এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এ আসনের প্রতিটি এলাকায় বিচরণ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে ধীরে ধীরে দলের শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলেছি।সদা হাস্যোজ্জ্বল এ ছাত্রনেতা ইতিপূর্বে দলের এবং এলাকার সাধারণ লোকজনের দৃষ্টি কেড়েছেন।উপজেলা সদরের তুজারভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা হাসান ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ক্লিন ইমেজকে কাজে লাগিয়ে এলাকায় জাতীয় পার্টির অবস্থান মজবুত করেছেন বলে জানিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা।তার প্রচেষ্টায় এ উপজেলায় দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এ আসন থেকে ক্লিন ইমেজের নেতা হাসানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এলাকায় প্রচার ও গণসংযোগসহ সব ক্ষেত্রে কাজ করছেন।এছাড়া এ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে আবু জায়েদ আল মাহমুদ (মাখন সরকার)দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন।দাউদকান্দি মেঘনা উপজেলার ভোটারদের দৃষ্টি করছেন তিনি।

 

 

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT