উলিপুরে নদী ভাঙ্গনে প্রায় দু’শতাধিক বসতবাড়ী নদী গর্ভে বিলিন
নিজস্ব প্রতিনিধি রবিবার রাত ১০:৪৮, ১৭ নভেম্বর, ২০১৯
সাজাদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে তীব্র ভাঙ্গনে দু’শতাধিক বসতবাড়ী বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের ফলে আধাপাকা ধান কাটতে বাধ্য হয়েছেন কৃষকরা। বারবার জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মাথা ঠুকেও গলেনি তাদের মন। অসহায় ভাঙ্গন কবলিতদের দাবি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের। কিন্তু তীর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প প্রস্তাবনা ফাইলবন্দি থাকায় কপাল পুড়ছে ভাঙ্গন কবলিতদের।
স্থানীয়রা জানান, এই ইউনিয়নে ৬টি গ্রামে ৩ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী ভাঙ্গন চলছে। গত দেড় মাসে দুই শতাধিক বসতবাড়ী, কয়েকশ একর আবাদিজমি, গাছপালা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। গ্রামের জন লোক জনপ্রতিনিধিদের কাছে নদী ভাঙ্গন রোধে কথা বলতে গেলেও তাদের কাছ থেকে কোন আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মৃত নৈমুদ্দিনের পূত্র নবাব আলী এবং প্রতিবেশী বাচ্চু, আতিকুর ও হালিমা জানান, ভোরবেলা আমরা ঘর সড়িয়েছি। আপাতত অন্যের জমিতে আশ্রয় নিলেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে হতাশ এসব পরিবারের অভিভাবকরা। এই দীর্ঘ জীবনে অনেকবার তাদেরকে এই ধরণের পরিস্থিতিতে মুখোমুখী হতে হয়েছে। তখন জমির দাম কম ছিল। মানুষও অসহায়দের আশ্রয় দিতে কুন্ঠা বোধ করতেন না। এখন সবকিছুর মুল্য বেড়ে গেছে। নদী ভাঙতে ভাঙতে মেইন ল্যান্ডে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চলে এসেছে। এখানে জমির মূল্য অনেক বেশি। তাই কেউ জমি দিতে চায় না। এক বাঁধে হাজার হাজার ভিটেহীন পরিবার ঠাসাঠাসি করে বসবাস করছে। সেখানেও ঠাঁই নেয়ার কোন সুযোগ নেই। ফলে ভাঙ্গন কবলিতদের অনেকেই খোলা আকাশে ছাপড়া তুলে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি কেউই। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর দাবি দ্রুত ডাম্পিং-এর কাজ শুরু করা। যাতে বসতভিটাসহ আবাদি জমি রক্ষা পায়।
এ ব্যাপারে হাতিয়া ইউনিয়নর চেয়ারম্যন এবিএম আবুল হোসেন জানান, ভাঙ্গনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিস্ট দপ্তরে জানিয়েছি। যেভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নদী গর্ভে চলে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, আমরা তীর রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬০ মিটার জায়গায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছি। এখানে নতুন করে তীররক্ষা বাঁধের জন্য প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।