ঢাকা (বিকাল ৩:০৩) বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

উলিপুরে গ্রামপুলিশের বাড়ি থেকে খয়রাতি ১০৬৫ কেজি চাল উদ্ধার : এলাকায় বিক্ষোভ

<script>” title=”<script>


<script>

সাজাদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুরে বজরা ইউনিয়নে  করোনাভাইরাস সংক্রমনরোধে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য ঈদ উপলক্ষে  বরাদ্দকৃত জিআর ১ হাজার ৬৫ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রোববার (২৪ মে)রাতেই একজন গ্রাম পুলিশকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় প্রকৃত দোষী ব্যক্তির শাস্তির দাবিতে রোববার রাত ৯ টার দিকে  ইউপি কার্যালয়ের সামনের রাস্তায়  মানুষজন  মিছিল ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

অভিযোগ উঠেছে, তদারকি কর্মকর্তাদের না জানিয়ে  চেয়ারম্যান রেজাউল করিম আমিন (২৪ মে)রোববার ভোর থেকেই  রিলিফ বিতরণের নামে দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত খয়রাতি চাল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বাড়িতে পাচার করে রাখে।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে উলিপুর থানা পুলিশ ইউপি ভবন সংলগ্ন গ্রাম পুলিশ বিপুলের বাড়ি থেকে ১ হাজার ৬৫ কেজি খয়রাতি চাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে রিলিফ বিতরণের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার মাহমুদুল হাসান জানান, করোনা দূর্যোগের সময়ে সরকার ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতি ঠেকাতে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে তিনজন করে কর্মকর্তার সমন্বয়ে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের  মাল উত্তোলন এবং মাল বিতরণের বিষয়টি ট্যাগ অফিসারদের আগেই  অবহিত করার কথা।

কিন্তু বজরা ইউপি চেয়ারম্যান রিলিফ বিতরণে নিয়োজিত তদারকি কর্মকর্তা ও ট্যাগ অফিসারদের না জানিয়ে রোববার ভোর থেকেই মাল বিতরণ শুরু করেন। রিলিফ বিতরণে অনিয়ম দেখা দিলে জনৈক একজন ইউপি সদস্য তাকে ফোন করে জানান।

এরপরই প্রায় সকাল সারে ১০টার দিকে ট্যাগ অফিসার ইউনিয়ন পরিষদে যান। ততক্ষনে চাল বিতরণ প্রায় শেষ। এরকম পরিস্থিতিতে ট্যাগ অফিসার তাদের না জানিয়ে চাল বিতরণের বিষয়টি চেয়ারম্যানের নিকট জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি।

এরপরেই ওই কর্মকর্তা চাল বিতরণে অনিয়ম এবং চাল পাচার করার বিষয়টি অনুসন্ধান করতে থাকেন বলে সাংবাদিকদের জানান। তার সোর্স নিশ্চিত করেন পরিষদ সংলগ্ন গ্রাম পুলিশ বিপুলের বাড়িতে পাচার করা  চাল আছে। তখন ওই কর্মকর্তা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন।

তিনি আরো গভীরভাবে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাকে জানাতে বলেন বলে ওই কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান। পূনরায় তাঁকে জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উলিপুর থানা থেকে পুলিশ অফিসার পাঠিয়ে দেন। এরপরই গ্রাম পুলিশ বিপুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পাচার করা চাল উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর জব্দ তালিকা তৈরী করা হয়।

এদিকে ইউপি ভবনের সামনের মুকুল ও বকুল নামের দুইজনের বাড়িতে পাচার করা বিপুল পরিমাণ খয়রাতি চাল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে এলাকার মানুষ পুলিশ ও সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তাদের অভিযান চালানোর ব্যাপারে অনুরোধ জানান। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তা আমলে নেননি পুলিশ ও দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাগন।

বিষয়টি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মহদয়কে তাৎক্ষনিক অবহিত করেও ওই বাড়িতে অভিযান চালানো যায়নি। এ ঘটনায় খোদ প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠে। ওই বাড়ি দু’টিতে অভিযান চালানোর বিষয়ে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত পুলিশ অফিসার, ট্যাগ অফিসার এবং স্থানীয় জনতার মধ্যে দোলাচল চলে।

একটি সূত্র নিশ্চিত করেন চেয়ারম্যানের সাথে উপজেলা নিবার্হী অফিসারের ফোনালাপের কারনে ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়নি। ওই বাড়িতে ফেয়ারপ্রাইজ’র ডিলারের উত্তোলন করা চাল ছিল বলে চেয়ারম্যানের দাবীর প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা থেকে সরে আসে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা।

এদিকে র্সবশেষ অনুসন্ধানে জানা যায় ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চিলমারীর একজন খাদ্য ব্যবসায়ীর প্যাড সংগ্রহ করে আটককৃত চাল তার কাছ থেকে ক্রয় দেখানোর কাগজ তৈরি করা হয়।এছাড়াও গভীর রাত পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে কয়েকজন যুবক মিলে চাল বিতরণের ভুয়া মাষ্টাররোলে টিপ সহি দিচ্ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আব্দুল কাদের বলেন, ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছে তারা আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যেখানে চাল থাকবে সেখানে অভিযান চালাবে অফিসাররা।

জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম এর সাথে পাচার করা চাল উদ্ধারে আলোচিত দুটি বাড়িতে অভিযান চালানো প্রসঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT