ঢাকা (দুপুর ১২:৩১) শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
শিরোনাম

অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা পাবে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট



মাধ্যমিক পর্যায়ের ৫৪ লাখ অসচ্ছল শিক্ষার্থীর স্কুলে ভর্তি নিশ্চিত করতে সহায়তা দেবে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট। বিতরণ করা হবে দেশের অন্যতম সেরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের মাধ্যমে।

এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি শিক্ষার্থী এককালীন পাঁচ হাজার টাকা করে সহায়তা পাবে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সহায়তা বাবদ এই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
টাকা পেতে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে অনলাইনে আবেদন করেছেন। খুব দ্রুত এটি বিতরণের কার্যক্রম শুরু হবে।

এর আগে বেশ কয়েকটি চ্যানেলের মাধ্যমে এই ভাতা বিতরণ করা হলেও তাতে নানা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এখানে শৃঙ্খলা আনতে এবার শুধু মাত্র নগদের মাধ্যমে এই সহায়তা বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি এ বিষয়ে শিক্ষা মান্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এতোদিন নগদসহ কয়েকটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এবং ব্যাংকের মাধ্যমেও প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের এই টাকা বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করতে গিয়ে তারা কিছু সমস্যায় পড়েন।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের এক পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘সহায়তার টাকা ঠিক মতো বিতরণ হয়েছে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণ এবং যাচাই বাছাই করাই আমাদের জন্যে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্যে আমরা একটি প্ল্যাটফর্মকে বেছে নিতে চাইছিলাম। আর গত কয়েক বছর ধরে প্রাথমিক পর্যায়ের দেড় কোটির মতো শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি যেহেতু নগদ সাফল্যের সঙ্গে বিতরণ করে আসছে সে কারণে আমাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়াও সহজ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে তারা দেখেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সফটওয়ার বিভিন্ন রকম হওয়ায় তারা তাদের মতো করে বিভিন্ন পন্থায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তার এই অর্থ বিতরণ করে থাকেন। আর একেক প্রতিষ্ঠান একেক পদ্ধতিতে কাজটি করায় তাদের জন্যে এ এক বড় সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্যেই নগদের স্মরণাপন্ন হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ।

তাছাড়া গ্রাহক সংখ্যার বিবেচনায় নগদ এখন দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ব্যাংকিং কম্পানি। বর্তমানে তাদের নয় কোটির ওপর নিবন্ধিত গ্রাহক আছে। তাছাড়া সারা দেশে পৌনে তিন লাখ এজেন্ট পয়েন্ট থাকায় যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো সময় টাকা উত্তোলন করাও সম্ভব। এ কারণেই সরকার তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা বিতরণে পছন্দ করে থাকতে পারে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা।

“গত কয়েক বছরে সরকারের ভাতা ও সহায়তা বিতরণ পক্রিয়াকে আমরা এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছি যেখানে ধারে কাছে আর কেউ নেই। সে কারণেই হয়তো সরকারি সংস্থাগুলো নগদের সেবাই বারবার নিতে চাইছ,” বলেন নগদের নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম। তিনি বলেন, “তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সহায়তা বিতরণ একটি স্পর্শকাতর প্রকল্প। এর বিতরণের দায়িত্ব নগদের কাছে আসার আর কোনো কারণ থাকতে পারে না। নগদের খরচও অনেক কম। এসবই নগদকে সব সময় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখে।”

এর আগে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়, ট্রাস্ট থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৪ সালে মাধ্যমিক ও সমমান পর্যায়ে ভর্তিকৃত ও অধ্যয়নরত অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে ভর্তি–সহায়তা দেওয়া হবে। ভর্তি–সহায়তা পেতে তখন শিক্ষার্থীকে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে অবেদন করতে বলা হয়।

এই সহায়তা পাওয়ার জন্য মা–বাবা বা অভিভাবকের বার্ষিক আয় দুই লাখ টাকার কম হতে হবে। তাছাড়া সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীর সন্তানেরাও আর্থিক অনুদান পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে।

ভর্তি–সহায়তা পেতে শিক্ষার্থীদের ছবি, স্বাক্ষর, জন্মনিবন্ধন সনদ, অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র, নির্ধারিত ফরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশ থাকতে হবে।

এর আগে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় এক হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়। সেখান থেকেই প্রতিবছর মাধ্যমিক, উচ্চা মাধ্যমিক এবং স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের দরিদ্র এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের এককালীন সহায়তা দেওয়া হয়।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫ হাজার টাকা, উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ৬ হাজার টাকা এবং স্নাতক ও সমমান পর্যায়ে ১০ হাজার টাকা হারে ভর্তি–সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT