যেসব লক্ষণ দেয় ক্যান্সারের ইঙ্গিত
মেঘনা নিউজ ডেস্ক শনিবার সকাল ১১:২৮, ২ মার্চ, ২০২৪
বিশ্বজুড়ে ২০৫০ সালের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৫ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির ক্যান্সারবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইএআরসি) জানিয়েছে, ২০১২ সালে বিশ্বজুড়ে ক্যান্সার আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১ কোটি ৪১ লাখ এবং ৮২ লাখ। এক দশক পর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২ কোটি ও ৯৭ লাখে।
সংস্থাটির পূর্বাভাস বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে আরও সাড়ে তিন কোটি, যা ২০২২ সালের চেয়ে অন্তত ৭৭ শতাংশ বেশি।
তবে ৭০ এর দশকের পর থেকে ক্যান্সারে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার তিনগুণ বেড়েছে। মূলত সঠিক সময়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা করালেই ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার গবেষণা সংস্থার এক গবেষণা অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা জীবনের কোন না কোন সময়ে এমন কোন উপসর্গে ভুগেছেন যেটি আসলে ক্যান্সারের উপস্থিতির জানান দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু মাত্র ২ শতাংশ মনে করেছেন যে এর কারণে তাদের ভুগতে হতে পারে এবং এক তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ একে কোন ধরণের পাত্তাই দেননি এবং এর ফলে চিকিৎসকের কাছেও যাননি। এমন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে চলুন জেনে নেই-
হুট করে ওজন কমে যাওয়া
ক্যান্সার আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই কোন না কোন সময় ওজন হারাতে শুরু করে। যখন আপনি কোন ধরনের কারণ ছাড়াই ওজন হারাতে শুরু করেন, এটাকে বলা হয় ব্যাখ্যাহীন ওজন হারানো। আর এই ব্যাখ্যাহীন ওজনহীনতা ক্যান্সারের প্রথম লক্ষণ হতে পারে। অগ্ন্যাশয়, পাকস্থলী, খাদ্যনালী বা ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ওজন কমে যাওয়ার এই লক্ষণ বেশি দেখা যায়।
জ্বর
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের সবচেয়ে সাধারণ একটি উপসর্গ হচ্ছে জ্বর। এছাড়া ক্যান্সার শরীরে ছড়িয়ে পড়লে প্রায়ই জ্বর দেখা দেয়।
ক্লান্তি
এখানে ক্লান্তি বলতে বোঝায় চরম ক্লান্তিভাব যা বিশ্রাম নেয়ার পরও দূর হয় না। ক্যান্সার বাড়ার সাথে সাথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হিসেবে দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু ক্যান্সার যেমন লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রে শুরুর দিকেই ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। কিছু কোলন বা মলাশয় ও পাকস্থলীর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রক্তপাত হতে পারে তবে এটা সবক্ষেত্রে হয় না। এর কারণেও ক্যান্সারের সময় ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।
ত্বকে পরিবর্তন
ত্বকের ক্যান্সার ছাড়াও আরো কিছু ক্যান্সার রয়েছে যাতে আক্রান্ত হলে আপনার ত্বকে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। যেমন- ত্বক কালো হয়ে যাওয়া বা হাইপারপিগমেনটেশন, ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া বা জন্ডিস, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি, মাত্রাতিরিক্ত চুলের বৃদ্ধি, অন্ত্রের ক্রিয়া বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া ইত্যাদি। অন্যদিকে প্রস্রাব করার সময় ব্যথা, প্রস্রাবে রক্তপাত বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন যেমন আগের তুলনায় কম বা বেশি প্রস্রাব করা ইত্যাদি মূত্রাশয় বা প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
রক্তপাত
ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় কিংবা তা ছড়িয়ে পড়ার পর অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে। কাশির সাথে রক্ত বের হওয়া ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এছাড়া আপনার যদি মলের সাথে রক্ত বের হয়, তাহলে মলদ্বারে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
শরীরের যে কোন স্থান শক্ত হয়ে যাওয়া
অনেক ক্যান্সার ত্বকের মাধ্যমে শনাক্ত করা যেতে পারে। এ ধরনের ক্যান্সার সাধারণত স্তন, অণ্ডকোষ, গ্রন্থি এবং শরীরের নরম টিস্যুতে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দেহে শক্তভাব বা মাংস জমে আছে- এ ধরনের অনুভূতি হয়। এটা এসব ক্যান্সারের প্রাথমিক বা বিলম্বিত উপসর্গ হতে পারে।