মৌলভীবাজারের শেরপুরে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা শুরু
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ০৯:৪৬, ১৪ জানুয়ারী, ২০২০
মোঃ জাকির হোসেন, জেলা প্রতিনিধি,মৌলভীবাজারঃ পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে শেরপুরে জমে উঠছে প্রায় দুই’শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, তিনটি জেলার মিলনস্থল শেরপুরে তিন দিনব্যাপি এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।প্রতিবছরের ন্যায় মেলাটি ১৩ জানুয়ারী সোমবার শুরু হয়ে বুধবার সকালের দিকে সমাপ্তি ঘটবে, অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসন।
সিলেট বিভাগের বৃহত্তর এ মাছের মেলাটি প্রায় দুই’শত বছর যাবৎ চলে আসছে। মাঘের শীতে বাঘে কাঁপে, সেই হাড় কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে লক্ষ্যাধিক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করে। মেলায় মৎস ব্যবসায়ীরা ঢালায় ঢালায় সাজিয়ে রেখেছেন বিশাল আকাঁড়ের মাছ। এর মধ্যে বাঘাই, বোয়াল, রুই, কাতলা সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উল্লেখযোগ্য। মেলায় মাছ ক্রয় করতে সবাই না আসিলেও অনেকেই আসেন মাছ দেখতে। কালের বিবর্তনে অনেক প্রকার বিলুপ্তি পেয়েছে এমন প্রজাতির মাছও এই মেলায় দেখতে পাওয়া যায়।
মেলাটি সনাতন ধর্মালম্বীর পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে হলেও বর্তমানে সার্বজনিন উৎসবে রুপ নেয় মাছের মেলা নামে। বাঙালী সংস্কৃতিতে বারো মাসে তের পার্বণের একটি হল পৌষ সংক্রান্তি। এই মেলায় ছোট মাছ থেকে শুরু করে আড়াই’শ ও তিনশত কেজি ওজনের মাছের দেখা মিলে। মাছগুলো মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদ-নদী, খাল, বিল এবং হাওড় থেকে শিকার করে এনে বিক্রি করা হয় বলে জানান বিক্রেতারা।
তবে মেলায় মৌলভীবাজারের হাওর কাওয়াদীঘি, হাকালুকি, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়, ও কুশিয়ারা নদীর মাছ বেশি প্রাধান্য পায় মেলায় আসা ক্রেতাদের মধ্যে। এ মেলাকে ঘিরে মৎস্য ব্যবসায়ীরা ১৫ দিন আগে থেকে মাছ মজুদ রেখে মেলায় আসার প্রস্তুতি নেন।
পৌষ সংক্রান্তিকে সামনে রেখে হিন্দু ধর্মের সবাইকে মাছ কিনতে হবে এমন নিয়ম থাকলেও সেতু বন্ধনে আবদ্ধ থাকায় ভিন্ন ধর্মীরাও বড় বড় মাছ কিনতে পিছিয়ে নেই। মেলাকে কেন্দ্র করে সবাই বড় মাছ কিনে আত্মীয়ের বাড়িতে উপহার দেন। ফলে লোকদৃশ্যের বন্ধনে পরিণত হয় শেরপুরের এ মাছের মেলা।
এদিকে মেলায় মাছ ছাড়াও গৃহস্থালী সামগ্রী, হস্ত শিল্প, কারু শিল্প, ও গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী পণ্য, খেলনা সামগ্রী, নানা জাতের দেশীয় খাবারের দোকান, কাঠের তৈরী ফার্নিচার এবং সব ধরণের পণ্য পাওয়া পায়। মেলায় সস্তা দরে জিনিষপত্র ক্রয় করতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা সেখানে এসে ভীড় জমান,
মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার মো: ফারুক আমেদ পিপিএম (বার) বলেন,নিরা পত্তার সার্থে মেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী , পুলিশ, ও র্যাব সদস্যরা সার্বক্কনিক নিয়োজিত থাকবেন।