গৌরীপুরে মুখিকচুর দামে কৃষকের মুখে হাসি
ওবায়দুর রহমান মঙ্গলবার সকাল ০৮:৪৪, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
শেখ সাদী ৬০ শতাংশ জমিতে মুখিকচু (বারি মুখি কচু-১) আবাদ করেছেন। জমি প্রস্তুত, বীজ, সার, নিড়ানি ও সেচ বাবদ প্রতি ১০ শতাংশ জমিতে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকা হারে মোট প্রায় ৪৫ হাজার টাকা খরচ করেছেন। প্রতি ১০ শতাংশে তার মুখি কচুর ফলন হয়েছে আনুমানিক ৩০ মণ। এই হিসেবে তিনি পাইকারী বিক্রয় করলেও তার লাভ হবে প্রায় ৩ লাখ টাকা। এই বাম্পার ফলনে খুশি হয়েছেন শেখ সাদি।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কড়মুড়িয়া গ্রামের কৃষক শেখ সাদীর মতো অন্যান্য কৃষকের জমিতে এবার মুখি কচুর ফলন অনেক ভালো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৩০ হেক্টর জমিতে এ মুখিকচুর চাষ করা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে প্রায় ২৮ হেক্টর বেশি জমিতে এ কন্দাল ফসলের চাষ হয়েছে। অনুক‚ল আবহাওয়া ও রোগবালাইয়ের আক্রমন না হওয়ায় উপজেলা বাম্বার ফলন হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে সকল কৃষক জমিতে আগাম জাতের মুখিকচু আবাদ করেছেন, তাঁরা গত এক মাস ধরেই জমি থেকে মুখিকচু উঠিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন। শুরুর দিকে পাইকারি বাজারে ২ হাজার টাকা মণ অর্থাৎ প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে মুখিকচু বিক্রি হচ্ছে। খুচরা এই মুখিকচু ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। আগাম জাতের মুখিকচুর ভালো ফলন ও দামে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
কৃষক শেখ সাদী বলেন, এ বছর আমি দুই বিঘা জমিতে মুখিকচুর চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবং তেমন কোন রোগবালাই না হওয়ায় প্রতি বিঘায় ৭৫-৮০ মণ মুখি উৎপাদন হয়েছে। বিক্রির সময় বাজারের দর না কমলে সব খরচ বাদ দিয়ে আনুমানিক ৩ লাখ টাকা লাভ হবে।
স্থানীয় কৃষক আব্দুর রশিদ তাঁর এক বিঘা জমিতে মুখির আবাদ করেছেন। তাঁর প্রতি ১০ শতাংশ মুখিকচু উৎপাদিত হয়েছে ২০ মণ করে। এতে পাইকারি ১ হাজার ৮শ টাকা করে বিক্রি করলেও খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হবে আনুমানিক ১ লাখ টাকা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, স্বল্প খরচ ও অল্প শ্রমে মুখিকচুর ভালো ফলনের পাশাপাশি কয়েকগুণ বেশি দাম পাওয়ায় কৃষকরা দিন দিন এ সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। আমাদের দেশে চিংড়িকে সাদা সোনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। মুখিকচুর চাষ ব্যাপক লাভজনক হওয়ায় গৌরীপুরের কৃষকরা স্থানীয়ভাবে এটিকে সাদা সোনা হিসেবে আখ্যায়িত করে।