৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা এপিডি মহিদুল এখন শত কোটি টাকার মালিক!
স্টাফ রিপোর্টার
শুক্রবার বিকেল ০৪:০৬, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ রাস্তায় সেতু-কালভার্ট নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক(এপিডি) মহিদুল ফারুক, যার নাম বলতেই বুঝে টাকা আর টাকা বেশবুশে বুঝার উপায় নেই শত কোটির অধিক পরিমাণে টাকার মালিক।
চাকরি জীবনটা ২০০৪ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ২য় শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে যোগদান করেন। সেই যোগদানের পর থেকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি, করেছেন দেশের বড় বড় উপজেলায় পিআইও গিরি। দু-হাতে কামিয়েছেন অবৈধ টাকা করেছেন নামে বেনামে অঢেল সম্পদ সেই হিসেবে বিয়ে করছেন তার পূর্ব পরিচিত মেয়েকে শ্বশুর বাড়ির লোকদেরও আর পিছু তাকাতে হয়নি। অবৈধ টাকার বিনিময়ে স্বজনপ্রীতি করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে একই সুযোগ আপন শালিকা উম্মুল খয়ের সালমাকে করে দেন, সে বর্তমানে নাটোর সদর উপজেলায় প্রেষনে কর্মরত রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে দুলাভাই এপিডির প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্রীজ করে দিবে টিআর, কাবিটা, কাবিখা স্পেশাল বরাদ্দ করে দিবে বলে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
মহিদুল ফারুক ছাত্রজীবনে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সেই সুবাদে শেখ হাসিনার আমলে তৎকালীন মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার হাত ধরে ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চলে আসেন গ্রামীণ রাস্তায় সেতু কালভার্টের প্রকল্পে ২০১৬ সালে উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে। তারপর ২০১৮ সালে মায়া চৌধুরী হাত ধরে ০১ কোটি টাকার মাধ্যমে বাগিয়ে নেন এপিডি পদ। সেখানে জয়েনিং করার পর কয়েক বছরে হয়ে যান আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। রয়েছে ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রীর ০৯ নাম্বার রাস্তার ৩০ নাম্বার বাড়ি যা ০৭ তলা বাড়ি আনুমানিক মূল্য ২০ কোটি টাকা, বেইলী রোডের কেএফসি বিল্ডিং-এ রয়েছে ০২ টি ফ্লাট যার মূল্য আনুমানিক ০৩ কোটি টাকা, আফতাব নগরে রয়েছে ২০ কাঠা জায়গা যার আনুমানিক মূল্য ২০ কোটি টাকা, মিরপুর গৃহায়নে রয়েছে তার ০৩ টি ফ্লাট যার আনুমানিক মূল্য ০৬ কোটি টাকা, ঢাকার পূর্বাচলে রয়েছে রিসোর্ট যার মূল্য ৫০ কোটি টাকা। নাটোর সদর পৌরসভার ০৩ নং ওয়ার্ডে চকরামপুরে রয়েছে ভিআইপি হোটেলের পাশে এক সাড়িতে তিনটি বিল্ডিং ১০ তলা ফাউন্ডেশন করে যার ০৪ তলা করে কমপ্লিট যার মূল্য আনুমানিক ৩০ কোটি টাকা। বাগাতিপাড়া উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে ৩ কোটি টাকার আলিশান বাড়ি তার বাবা ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৈনিক শ্রমিক (মাষ্টাররোল), সেই সুবাদে ছোটবেলা থেকে বেড়ে উঠা হয় নাটোর পৌরসভায়, তার এক ভাই মোঃ জনি নাটোর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ড্রাইভার, তাদের গ্রামের বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলায়। মহিদুল ফারুক অভাব অনটনের সংসারে কোন রকম টেনে টুনে হোটেল বয়ের কাজ করে পড়াশোনা চালিয়ে ডিপ্লোমা শেষ করে। তাছাড়া এপিডি মহিদুল ফারুক এর বিরুদ্ধে গ্রামীন রাস্তায় সেতু/কালভার্ট নিমাণ প্রকল্পে একাধিক কার্য-সহকারী বদলী বানিজ্যের অভিযোগ। তাকে টাকা দিলে বদলির ফাইল উঠে, না দিলে তাকে উল্টো দেশের শেষ সীমানায় বদলি করার ভয় দেখায়। বলে, আপনার বিরুদ্ধে মহাপরিচালক মহোদয় এর কাছে অভিযোগ আসছে আপনাকে শাস্তি মূলক বদলি করা হবে।
তাছাড়া তার বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট পিআইওদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভিযোগ রয়েছে টুঙ্গিপাড়া পিআইওকে দাউদকান্দি উপজেলায় পোস্টিং করানোসহ গোপালগঞ্জ জেলার সকল পিআইওদেরকে নিরাপদ উপজেলায় পোস্টিং করিয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে তাদেরকে সে বিভিন্ন তদবির লবিং করে মামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।
তাছাড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাত্রদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলিগের পক্ষে টাকা বিতরণ অভিযোগ রয়েছে। সরকারি চাকরিজীবী কর্তৃক অবৈধ সম্পদ অর্জন দুর্নীতি দমন আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে গণ্য। বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ধারা ১৬১, ১৬৫ ও ১৬৫(ক) অনুযায়ী ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সম্পদ অর্জন দণ্ডনীয় অপরাধ। এসব অপরাধ প্রমাণিত হলে শাস্তি হিসেবে জেল, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
এ বিষয়ে এপিডি মহিদুল ফারুককে একাধিকবার মোবাইল নম্বর কল করা হলে কলটি রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে এ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমানকে কল করা হলে তিনিও কলটি রিসিভ করেননি।


