লোহাগড়ার সাহাপাড়াসহ দিঘলিয়া বাজারে ফিরেছে স্বাভাবিক পরিবেশ
ইকবাল হাসান,নড়াইল মঙ্গলবার রাত ০১:৫০, ১৯ জুলাই, ২০২২
মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে ফেসবুকে কটুক্তির সূত্র ধরে, উত্তপ্ত হওয়া দিঘলিয়া এলাকায় স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে এসেছে। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে সেখানকার মানুষ এখন স্বাভাবিকভাবেই চলাচল ও বসবাস করতে পারছেন। দিঘলিয়া বাজারের ব্যবসায়িরাও দোকানপাট খুলে আগের মতোই ব্যবসা করছেন।
সূত্র জানায়, মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে ফেসবুকে কটুক্তি করা নিয়ে গত শুক্রবার বিকালে স্থানীয় জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে, কটুক্তিকারীর সাহাপাড়াস্থ বাড়ি ঘেরাও করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এসময় পুলিশ ও লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আজগর আলী আকাশ সাহার পিতা অশোক সাহা(৫৫)কে হেফাজতে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেবার চেষ্টা করেন।
উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি স.ম ওহিদুর রহমান, দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিনসহ কয়েকজন আহত হন।
গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা শহরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ফেসবুকে বিতর্কিত পোষ্ট দেয়ায় অভিযুক্ত, আকাশ সাহা (২২)কে গ্রেফতার করে। পরে আদালত তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আকাশ সাহা দিঘলিয়া নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আহত দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি স.ম ওহিদুর রহমান জানান, প্রশাসনের সহযোগিতায় দিঘলিয়া বাজারের ব্যবসায়িরা পূর্বের মতোন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা ব্যবসায়িসহ সাহাপাড়ার সকল মানুষের নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করছি।
মহানবী হজরত মোহাম্মদ(সাঃ) সম্পর্কে কটুক্তি বড় অপরাধের। তবে সেটার বিচার করবে প্রশাসন। তেমনি বাড়ি ভাংচুর লুটপাটও অপরাধের। সেটার বিচারও করবে প্রশাসন। সকলে শান্ত থেকে প্রশাসনকে সঠিক তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে। কারন আমরা কেউই এ ঘটনায় দায় এড়াতে পারি না। বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়।
দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিন বলেন, আইন হাতে তুলে নিলে দায় তারই বহন করতে হবে। কোন প্রকার উসকানি দিয়ে শান্তি নষ্ট করা যাবে না। এলাকা শান্ত থাকলে সবারই মঙ্গল।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু হেনা মিলন সোমবার জানান, বর্তমানে দিঘলিয়া এলাকার পরিবেশ অনেক ভালো। সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়িরা নির্ভয়ে চলতে পারছেন। এখানে কোন আতংক নেই। ফেসবুকে পোষ্ট এর ঘটনায় আকাশ সাহার নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তেমনি বাড়িঘর ভাংচুর এর ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। দুটি ঘটনারই তদন্ত চলছে এবং দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।