সিরাজগঞ্জে কমছে না পানিবন্দি মানুষদের দুর্ভোগ
মোঃ নাজমুল হোসেন, সিরাজগঞ্জ জেলা সোমবার রাত ০৯:০৮, ২০ জুলাই, ২০২০
সিরাজগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় টানা আটদিন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার পর তিনদিন ধরে অতি ধীরগতিতে কমছে যমুনা নদীর পানি, প্রবলবেগে বইছে বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে,কমছে না বানভাসি পানিবন্দি ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলার বন্যা কবলিত সোয়া দুই লক্ষ অসহায় মানুষদের।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধের হার্ডপয়েন্টে যমুনা নদীর পানি মাত্র ৬ সেন্টিমিটার কমে সোমবার সকাল ৬টার সময় বিপৎসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং একই সময় কাজিপুর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইয়ে চলে। বন্যাকবলিত এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। বেড়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা মানুষগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। সামনে ঈদ। কিন্তু পরিবারের জন্য আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা। এখন চলছে অস্তিত্বের লড়াই, টিকে থাকার লড়াই। এসব মানুষ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
বন্যাদুর্গত এলাকায় শুকনা খাবার সরবরাহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়া লোকজনের মধ্যে পানিবাহিত রোগবালাই দেখা দিয়েছে। এরই মাঝে তৃতীয় দফা বন্যার আশংকায় ও ভাঙন আতংকে মহা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে প্রমত্তা যমুনা নদীতীরবর্তী দু’কুলের ভানবাসি মানুষেরা।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম বলেন, চলতি বন্যায় জেলার ৬টি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের ২২৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের ৪৭ হাজার ২টি পরিবার পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে ৫৩ কিলোমিটার রাস্তা, বাঁধ ও ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তলিয়ে গেছে ১৪ হাজার ১৩ হেক্টর জমির ফসল। সদর উপজেলার সয়দাবাদ ও কাজিপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, তেকানি ও শুভগাছা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে পানি ঢুকে পড়েছে।
এছাড়াও জেলার অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক, পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে বন্যাকবলিতদের জন্য ২৬৭ মেট্টিকটন চাল ও ৩৯৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।