সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেটের তিন সাংবাদিকদের জামিন লাভ
নিজস্ব প্রতিনিধি বুধবার সকাল ১১:৩২, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
সিলেটের বহুল প্রচারিত জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার সম্পাদক আবুল কাশেম রুমন সহ আর দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কথিত লাইভার লাকী আক্তার ওরফে লাকী আহমেদ ১০৭/১১৭ ধাবার মামলার জামিন পেয়েছেন। কথিত লাইভার লাকী আহমেদ গত ১১ অক্টোবর ২৩ইং তারিখ বাদী হয়ে সিলেট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে ২৯৮/২৩ইং (১০৭/১১৭ ধাবার) মামলা করেন। উক্ত মামলায় আদালত কর্তৃক কোন নোটিশ বা সমন জারি না করে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২৪ ইং শুনানি শেষে আসামীদের অনুপস্থিতে গ্রেফতারী পরোওয়ানা করেন আদালত। মামলা সংক্রান্ত গ্রেফতারী পরোওয়ানা বৈচিত্র্যয়ম সিলেট পত্রিকার সম্পাদক সহ আর দুই সাংবাদিক জানতে পারে ২৭ ফেব্রুয়ারী ২৪ ইং দুপুর ১২টায় সিলেট এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন নেন। এবং তাদের আইনজীবদের মাধ্যমে কথিত লাকী আহমেদের একের পর এক মিথ্যা হয়রানি মুলক মামলার বিষয়টি তুলেন ধরেন, পরে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেটে পত্রিকার কর্তব্যরত সাংবাদিকের বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায়, সদ্য দল থেকে বহিস্কৃত সিলেট মহা নগর যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে অসৎ প্রভাব খাঁটিয়ে সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার সম্পাদক আবুল কাশেম রুমন ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কবি নূরুদ্দীন রাসেল, স্টাফ রিপোর্টার নদীমুল্লাহ কামাল,ইসমাইল আলী টিপু এবং কবি ও সাংবাদিক ফারহানা বেগম হেনার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানা সহ বিভিন্ন আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন অবিরত। লাকী আহমেদ পূর্বে উক্ত পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার পদে ৪/৫ মাস কর্মরত থেকে অসৎ কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন। তার অসৎ আবদার এবং সাংবাদিকতা নীতির বিরুদ্ধে কোন কিছু অত্র পত্রিকার কর্তৃপক্ষ মেনে না নেয়ায় দেখে নেবেন বলে লাকি আহমেদ মিথ্যা তত্ত্ব দিয়ে একের পর এক মামলা করতে থাকেন। তার বিরুদ্ধে উক্ত পত্রিকার কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ায় গত বছরের ২৬ আগষ্ট লাকী আহমেদ কে স্টাফ রিপোর্টার পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। লাকী আহমেদ এর কাছে উক্ত পত্রিকার জন্য লাইভ অনুষ্ঠান করতে বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার একটি স্টিকার যুক্ত বুম, আইডি কার্ড,ক্যামেরার স্ট্যান্ড দেয়া হয়। সেগুলো এখনো তিনি ফেরত না দিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র মূলক অসৎ কর্মকান্ড অব্যাহত রাখেন। এগুলো পত্রিকা অফিসে জমা না দেয়ায় লাকীর বিরুদ্ধে সিলেট এডিএম আদালতে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ বাদি হয়ে মামলা করেন। মামলা নং-৪০/২৩ ইং। মামলাটি আদালতে চলমান থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া ও সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়। গত ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ইং দুপুরে নগরীর মুন্সীপাড়ায় গিয়াস উদ্দিন এর কলোনীতে লাকীর ভাড়া বাসায় কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার মালামাল উদ্ধারের জন্য তল্লাশী চালায়। এসময় বাসায় লাকীর মা,নানী ও এক মেয়ে ছিলো। তল্লাশী কালে লাকীকে বাসায় উপস্থিতি পাওয়া যায় নি। তার বিরুদ্ধে যখন যারা স্বাক্ষী দেয় তাদের বিরুদ্ধেই উঠে পড়ে লাগেন অভিযুক্ত লাকী আহমেদ। লাকী হুমকি-ধামকি দিয়ে উল্টো কোতোয়ালী মডেল থানায় বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে নিজে নাটক সাজিয়ে মিথ্যা সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরী নং-২৭৪০,(তাং-২৪/০৮/২৩ ইং)।
গত বছরের ২৭ আগষ্ট ২০২৩ইং তারিখে লাকী আহমেদ তার ফেসবুক আইডিতে বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার সম্পাদক আবুল কাশেম রুমন কে উদ্দেশ্যে করে তাঁর চরিত্র হনন সম্পর্কিত অপ প্রচার ও অশালীন বাক্যলাপ লিখে প্রচার করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঘটনাটি প্রমাণ হওয়ায় উক্ত পত্রিকা কর্তৃপক্ষ স্বাক্ষী প্রমাণসহ গত ৩০ আগষ্ট ২০২৩ ইং তারিখে লাকী আহেমদ এর বিরুদ্ধে সিলেট সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে পিবিআইতে তদন্তাধীন আছে। অন্য দিকে এক মাস পর লাকী বাদী হয়ে সিলেট সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মিথ্যা তত্ত্ব দিয়ে,স্বাক্ষী প্রমাণ ছাড়াই উক্ত পত্রিকার সম্পাদক আবুল কাশেম রুমন,ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নূরুদ্দীন রাসেল কে বিবাদী করে ১৯৮/২৩ইং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কথিত কাউন্টার মামলা করেন। অবশ্য এই মামলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তদন্ত করে সত্যতা নিশ্চিত হতে পারেন নি।
একটি খোলা তালাক সূত্রে উল্লেখ্য যে,লাকী আহমেদ তার বিবাহের তালাক নোটিশে নিজ নাম উল্লেখ করেছেন লাকী বেগম, এনআইডিতে লাকী আক্তার আবার মিডিয়া ও রাজনীতি অঙ্গনে লাকী আহমেদ নামে প্রচার চালাচ্ছেন। লাকীর পৈত্রিক নিবাস হচ্ছে ময়মনসিংহ অঞ্চলে। বর্তমানে লাকী সিলেট মহা নগরীর মুন্সিপাড়া এলাকার একটি ঘনবসতি কলোনিতে মা,নানী ও মেয়ে সহ বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন।
গত ২৯ আগষ্ট ২৩ ইং লাকী অসৎ দলবদ্ধ হয়ে সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার সম্পাদক আবুল কাশেম রুমনকে হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বরে দুপুর বেলা পেয়ে হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় আবুল কাশেম রুমন বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় লাকীর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরী নং- ১৫৪৬,(তাং-২৯/০৮/২৩)ইং। অন্য দিকে উক্ত পত্রিকার অস্থায়ী কার্যালয়ে পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার নদীমুল্লাহ কামাল কে নগরীর বন্দরবাজার রংমহল টাওয়ার অফিসে লাকী আহমেদ গিয়ে সেখানে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা,অশ্লীল গালিগালাজ সহ চিৎকার চেঁচামেচি এবং ক্ষতিসাধন করতে গেলে ওই অভিযোগে লাকীর বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় কামাল বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরীতে উল্লেখ করেন,সাইবার আদালতে লাকীর অপরাধের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী হওয়ায় তাকে ভয়-ভীতি ও হত্যার হুমকি দেন,ডায়েরী নং-৫৮৬, তাং-৫/১০/২৩ ইং।
লাকি সিলেট সিটি কর্পোরেশনে ইউএনডিপি প্রকল্পের কমিউনিটি টিম লিডার হিসেবে কাজ করে আসছেন। লাকীর বিরুদ্ধে ১৮/০৯/২৩ ইং তারিখে মহা পরিচালক, সমাজসেবা অধিদপ্তর,আগারগাঁও বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়,একই সাথে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসক কে অভিযোগ দিয়ে অবগত করা হয়েছে। তদন্ত স্বাপেক্ষে লাকীকে বরখাস্ত করা হয়। তাছাড়া লাকী আহমেদ এর বেপরোয়া সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও প্রতারণা কার্যকলাপের অভিযোগ এনে বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার সম্পাদক আবুল কাশেম রুমন বাদী হয়ে গত ১২ অক্টোবর ২৩ইং তারিখে সিলেটের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে কোতোয়ালী নির্বাহী বিবিধ ৩০১/২৩ ইং মামলা করেন। ওই মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি ২৪ইং (বৃহস্পতিবার) রাতে সিলেট নগরীর মুন্সিপাড়া ১০/আই গিয়াস উদ্দিন এর কলোনি থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিলেট কতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ।
লাকী গত ১১ অক্টোবর ২৩ইং তারিখ বাদী হয়ে সিলেট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে ২৯৮/২৩ইং মামলা করেন। এ মামলায় একই ভাবে উক্ত পত্রিকার ২ সম্পাদককে বিবাদী করেন। এ মামলার বিবরনীতে তিনি মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য উপস্থাপন করেন। মামলায় যাদের স্বাক্ষী মানত করেন, তারা এসব ঘটনা সম্পর্কে অবগত নন। লাকী সম্পূর্ণ মিথ্যা তত্ত্ব ও রুপ কথার কল্প কাহিনি বানিয়ে,নাটক সাজিয়ে সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে ৭৬১/২৩ইং মামলা করেন। মামলায় পত্রিকার দুই সম্পাদক সহ আরো ৩ জনকে বিবাদী করেন। কিন্তু আদালতে লাকী নির্যাতনের প্রমাণ দিতে না পারায় মামলাটি প্রথমে আমলে না নিয়ে এমসি রিপোর্ট আনার জন্য আদালতে পক্ষ থেকে বলা হয় পরবর্তীতে ওসিসি কর্তৃপক্ষ-ডাক্তার এমসি রিপোর্টে নো সাইন হিসেবে উল্লেখ করেন। এই মামলার মানিত স্বাক্ষীগণ তারা এই বিষয়ে অবগত নন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বর্ণিত লাকী আহমেদ ঘটনার দিন তারিখ ও সময়ের বিষয়ে জোরপূর্বক অপহরণ ও ধর্ষণের বিষয়ে ডাক্তারি রিপোর্ট সম্পূর্ণ তার বিপক্ষে থাকার পরও তিনি একের পর এক যোগাযোগী মামলা করা অব্যাহত রাখছেন। পরবর্তীতে এই মামলাটি তদন্তের জন্য একটি বিশেষ সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, লাকী একের পর এক মামলা দিয়ে কাবু করতে না পারায় এই নারী-শিশু নির্যাতন মামলাকে বর্তমানে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়ে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় ও রাজনৈতিক কর্তা ব্যক্তিদের নিকট তদবীর করে যাচ্ছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অর্থাৎ লাকী আহমেদ বৈচিত্র্যময় সিলেট পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের ছবি যুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে সিলেট সহ বাংলাদেশের নিবন্ধনহীন কয়েকটি ভূইফোঁড় অনলাইন মিডিয়ায় সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মিথ্যা তত্ত্ব দিয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালে করা মামলার বিবরণ দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সেসব সংবাদ প্রকাশ কারী মিডিয়া গুলোর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রুজু করা হয়। আদালত এই সব সংবাদের সত্যতা জানতে সিলেট সিআইডিকে নির্দেশনা দেন। সিআইডি তদন্ত কর্মকর্তা সে সব অনলাইন মিডিয়ার বৈধতা সহ সংবাদ প্রকাশে কারা কারা জড়িত তাদের সকলের বিরুদ্ধে তদন্ত মূলক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। ইতিমধ্যে সিলেট ও ঢাকার কয়েকটি অনলাইন মিডিয়ার মালিক ও সম্পাদককে নোটিশ দিয়ে ঢেকে হাজির করানো হয়েছে। একই সঙ্গে কতিথ নারী সাংবাদিক নামধারী লাকি আহমেদ সব ভূঁইফোড় অনলাইন নিউজ পোর্টাল মালিকদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এদিকে লাকী কোন সাংবাদিক নয়,তিনি একজন ফেসবুক লাইভার। লাইভে তিনি কাজ করে নারী সাংবাদিক সাজেন। যাতে তিনি ভাইরাল হতে পারেন। বেশ কিছু তৎপরতা চালিয়ে সমাজে নারী সংগঠনের সাহায্য পাননি। এখন তিনি একা ঘুরছেন এবং নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি ও এফবি পেইজ “স্মার্ট টিভি” নাম দিয়ে এগুলো দিয়ে লাইভ করতে দেখা যায়। কিছু দিন পরপর নীরিহ মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে মানুষকে বিপদের ফাঁদে ফেলে অসৎ ফায়দা লুটতে ব্যস্ত থাকেন সর্বদা। তার দায়ের করা মিথ্যা মামলা গুলোর এখন “হ-য-ব-র-ল” অবস্থা। উল্লেখ্য যে, লাকী র্যাব এর সোর্স পরিচয় দিয়ে দেশ-বিদেশের টাকা ওয়ালা মানুষকে ভয়-ভীতি ও হুমকির অভিযোগ রয়েছে।