সাতক্ষীরায় বিকাশ কেয়ার সেন্টারে গ্রাহকদের ব্যাপক হয়রানির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার দুপুর ০১:২৬, ১৬ জুন, ২০২০
আজহারুল ইসলাম সাদী, সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরা জেলার একমাত্র বিকাশের গ্রাহক সেবা কেন্দ্র, জজ কোর্টের গেটের সম্মুখে শামীম এন্টারপ্রাইজের তত্ত্বাবধানে বিকাশ কেয়ার সেন্টার অবস্থিত। বর্তমানে সরকার কর্তৃক ছাত্রছাত্রীদের উপর বরাদ্দকৃত উপবৃত্তির টাকা এখান থেকে তুলতে ব্যাপক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে জানান শত শত ভুক্তভোগী গ্রাহক, ছাত্র-ছাত্রী তথা জেলার সর্বপ্রান্ত থেকে আসা অবিভাবকের বিস্তর অভিযোগ।
হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীদের নানা অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, তাদের নামে উপবৃত্তি দেয়ার জন্য তর্থাদী ও কাগজ পত্র, বিকাশের কেন্দ্রীয় অফিসে জমা দেয়ার কথা থাকলেও গাফিলতির কারনে সে গুলি জমা না দেয়ার ফলে বর্তমানে ছাত্র- ছাত্রীদের সরকার কর্তৃক পাওয়া বিকাশের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে পারছে না।
নানা সমস্যার কারণে তাদের আসতে হচ্ছে সাতক্ষীরা জেলার একমাত্র বিকাশ কেয়ার সেন্টারে। দূরদুরান্ত থেকে এসে ও তারা সঠিকভাবে তাদের একাউন্ট সমস্যা ঠিক করে টাকা উত্তোলন করতে পারছে না। পোহাতে হচ্ছে একাধিক দিনের ভোগান্তি। কয়েকদিন যাবৎ সাতক্ষীরা জজ কোটের সদর গেটের সম্মুখে অবস্থিত শামীম এন্টারপ্রাইজ এর তত্ত্বাবধানে অবস্থিত বিকাশ কেয়ার ঘুরে লক্ষ করা গেছে ব্যাপক ভীড়ের।
তাদের সমবেত হয়ে ভীড় করার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাচ্চাদের নিয়ে সেই ভোর ৪/৫ টা থেকে সিরিয়ালে নাম লেখাতে হাজির হয়েছি। পরবর্তীতে দুপুরের সময় ও দেখা যাচ্ছে সেই ব্যক্তিসহ তার বাচ্চাটি বিকাশের ১০ মিনিটের সেবা না পেয়ে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। আবার বিকাল ৪টার পরেও সেই একই ব্যাক্তিকে দেখা যায় বিষন্ন ভগ্নহৃদয়ে দাঁড়িয়ে আছে উপবৃত্তির টাকা তোলা ও কোড লক ইত্যাদি সমস্যা থেকে উদ্ধার হতে না পেরে। ব্যর্থ হয়ে এক সময় তারা বিষন্নমনে বাড়ির পথে রওয়ানা দিচ্ছে পরের দিন আবার অতি ভোরে এসে সিরিয়ালে নাম লিখিয়ে লাইনে দাঁড়ানোর অপেক্ষার জন্য। .
এ প্রসঙ্গে এ প্রতিবেদক কয়েকদিন ঘন্টার পর ঘন্টা বিষয়টি ফলো করে বিকাশ কেয়ার সেন্টারের শামীম বা তার কর্মচারীদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারিনি। অথচ নিজেদের স্বজনদের ভিতরে ঠাসাঠাসি করে বসিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে সিরিয়াল বা লাইনে অপেক্ষা ছাড়া নির্বিঘ্নে কাজ সমাধান করে দিচ্ছে। কেউ কেউ স্বজনপ্রীতির কারণের প্রতিবাদ করলে ও অকথ্য ভাষায় দুর্ব্যাবহার করছে তাদের প্রতি।
এক শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকার জন্য তার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বললে সেঅনুযায়ী ছাত্রটি এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পরের দিন তার পিতাকে নিয়ে আসেন কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করে তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। পরের দিন অতিভোরে এসে সিরিয়ালে নাম লিখিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। নিদিষ্ট সময়ে দুপুর ২ টায় সিরিয়াল আসে, সিরিয়াল অনুযায়ী গিয়ে দাঁড়ানো মাত্র এক কর্মচারী বলেন ছাত্রকে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক প্রত্যায়ন আনতে বলেন। আইডি কার্ড এর ফটোকপি ও ছাত্রের জন্মনিবন্ধন, সেগুলি এনে ৩/৪ দিনের ভোগান্তির পর সরাসরি কম্পিউটার অপারেটর এর কাছে সব কাগজ পত্র জমা দেয় কিন্তু ১০ মিনিটের মধ্যে কাজ সমাধান ও টাকা উত্তোলন করতে পারলেও কোন কাগজ পত্র, ছবি, স্কুল প্রত্যায়ন কিছুই ছাড়াই কাজ সমাধান হলেও কর্মচারীদের ৪ দিন যাবৎ যে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে তাহাতে সরকার কর্তৃক যে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে সেটা কারো কারো খরচ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে আলাপ করতে বিকাশ কেয়ার এর প্রধান শামীমকে ফোনে কয়েকদিন না পাওয়া গেলেও সরাসরি তাকে বিষয়গুলি জানালে তিনি বিষয়টি আমলে না নিয়ে হাসতে হাসতে উড়িয়ে দেয়। কয়েকদিন পর্যবেক্ষণ করে এ তথ্য সংগ্রহ করে আরো জানা গেছে বিকাশ কেয়ার কর্তৃপক্ষ গ্রাহক সেবার জন্য কোন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। নামে কয়েকটা চক্রাকারে গোলক চিহ্ন দিয়ে রাখছে মাত্র। যারপ্রেক্ষিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে জনসমাগম ঘটানোর কারণে গত বুধবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক জরিমানা গুনতে হয়েছে তাদেরকে। তারপরেও তারা গ্রাহকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।