ঢাকা (রাত ১১:৩৩) শুক্রবার, ১লা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News মসজিদের নতুন ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন সমাজসেবক সাইফুল ইসলাম Meghna News যুবকরা এদেশের পরিবর্তনের মূল কারিগর- ইউএনও শাকিল আহমেদ Meghna News লোহাগড়ায় নানা কর্মসূচী পালনের মধ্যদিয়ে কালিপূজা অনুষ্ঠিত Meghna News গৌরীপুরে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা Meghna News লোহাগড়ায় মৃত পুলিশ সদস্যের গাছ কেটে নিলো দূর্বৃত্তরা Meghna News হোমনা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে সোয়া লক্ষ টাকার ফেনসিডিল উদ্ধার, ভারতীয় ট্রাক জব্দ Meghna News চুরির অপরাধে দুই সহোদরকে হত্যা করলো উত্তেজিত জনতা! Meghna News শ্রীপুরে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীসহ গ্রেফতার ৩ Meghna News নিসচা’র ইতিহাস বদলে ফেলার অপচেষ্টার প্রতিবাদে স্মারকলিপি প্রদান

রাণীনগরে সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাবাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে সন্তানরা,খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে বৃদ্ধ মজিবর ফকিরের

আবু ইউসুফ,রাণীনগর,নওগাঁ আবু ইউসুফ,রাণীনগর,নওগাঁ Clock সোমবার দুপুর ০৩:১৬, ১২ অক্টোবর, ২০২০

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ৭নং একডালা ইউনিয়নের শরিয়া গ্রামের মজিবর ফকিরের সম্পত্তি লিখে নিয়ে পাগল বানিয়ে সন্তানরা পায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। গ্রামে তিনি মজি ফকির হিসেবেই পরিচিত। প্রয়োজন মাফিক খাবার, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সেবা-যত্ন না পাওয়ায় এখন মজিবর ফকির অনেকটাই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। লোক দেখলেই বলে খাবার দে হামাক খাবার দে। খোলা কুঁড়ে ঘরের পাশে টয়লেট সংলগ্ন একটি চকিতে এক পায়ে দড়িতে বেঁধে রাখা হয়েছে মজিবরকে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শরিয়া গ্রামের মৃত-বয়তুল্লাহ ফকিরের ছেলে মজিবর ফকির। বয়স ৭৮বছর। ২বছর আগে স্বাভাবিক ছিলেন মজিবর। তখন ছেলেদের মাঝে কিছু সম্পত্তি লিখে দেন। এরপর কৌশল করে বড় ছেলে আব্দুল খালেক বসবাড়িসহ অবশিষ্ট সম্পত্তির অধিকাংশ সম্পত্তি লিখে নেওয়ার কিছুদিন পর থেকে কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

রাস্তায় বের হয়ে অস্বাভাবিক আচরন করা, দোকানে গিয়ে বিভিন্ন খাবার জিনিসপত্র খাওয়াসহ নানা রকমের পাগলামী আচরন শুরু করেন মজিবর। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে কোন রকমের চিকিৎসা না করেই প্রায় ১বছর যাবত মজিবরের পায়ে দড়ি লাগিয়ে একটি নোংরা খোলা কুঁড়ে ঘরে বেধে রেখেছে তার সন্তানরা। মজিবরের ছোট স্ত্রী ও আশেপাশের লোকের দাবী সম্পত্তি লিখে নেওয়া ও দীর্ঘদিন যাবত প্রয়োজন মাফিক খাবার, সুচিকিৎসা, সেবা-যত্ন না পাওয়ায় ও দড়িতে বেঁধে রাখার কারণে দিন দিন মজিবর মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছেন। বড় ছেলে ৩ বেলা যে পরিমাণ খাবার দেয় তাতে মজিবরের ক্ষুধা পূরণ হয় না।

এই কারণে যে মানুষই তার কাছে যায় মজিবর তার কাছে খাবার চায়। অভাবের সংসার হওয়ার কারণে মজিবরের ছোট স্ত্রীকে অধিকাংশ সময় মেয়েদের বাড়িতে থাকতে হয়। তখন মজিবরকে দেখার কেউ থাকে না। ওই কুড়ে ঘরেই তাকে মশার কামড়ে অবহেলা আর অযত্নে পড়ে থাকতে হয়। অসহায় ভাবে পেট ভরে খেতে না পেয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বৃদ্ধ মজিবর ফকির।

স্থানীয়রা জানান হয়তো বা সুচিকিৎসা, ভালো সেবা যত্ন,পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ও মুক্ত পরিবেশ পেলে বৃদ্ধ মজিবর সুস্থ্য হয়ে উঠতে পারেন। মজিবরকে একবার খাবার দিলে আবার খাবার চায়। কিন্তু সন্তানরা মজিবরের সম্পত্তি লিখে নিয়ে এখন আর বাপকে ভালো ভাবে দেখে না। বাপের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সন্তানরা তাই দড়ি দিয়ে মজিবরকে বেধে রেখেছে। বিষয়টি খুবই অমানবিক।

মজিবরের বড় ছেলে আব্দুল খালেক বলেন স্বজ্ঞান থাকতেই বাপ আমাদেরকে সম্পত্তি দিয়েছেন। আমি বাপকে ৩ বেলা খাবার দিই। তবে তার কোন চিকিৎসা এখন পর্যন্ত করা হয়নি। অস্বাভাবিক আচরন করার কারণে পায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছি।

মজিবরের দ্বিতীয় স্ত্রী ফরিদা বেগম বলেন বড় ছেলে বসতবাড়িসহ বেশি সম্পত্তি লিখে নেয়ার পর থেকে আমার স্বামীর মাথার সমস্যা দেখা দেয়। অভাবের সংসার তাই আমাকে মেয়ে-জামাইয়ের উপর নির্ভর হয়ে থাকতে হয়। আমি যতটুকু পারি করার চেষ্টা করি। আর টাকা পয়সার অভাবে চিকিৎসা করা হয়নি। চিকিৎসা, ভালো সেবা-যত্ন, পর্যাপ্ত খাবার পেলে হয়তো আমার স্বামী ভালোও হতে পারেন।

একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল লতিফ বলেন বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আমি খোজখবর নিয়ে তার জন্য স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোন কিছু করার সুযোগ থাকে অবশ্যই তা করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন ইতিপূর্বেও আমরা এরকম একাধিক ব্যক্তিকে সরকারি সহায়তা দিয়েছি। মজিবর ফকিরের খোজখবর নিয়ে দ্রত তার জন্য কিছু করার প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবো। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও করার চেষ্টা করবো।

 



শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT