মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং দুই ভাইবোন
আরিফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাত ০১:১৩, ১৮ জুলাই, ২০১৯
ফেসবুকে আমাদের অফিসিয়াল গ্রুপে গ্রুপ সদস্য আফরিন করিম এর সম্পুর্ণ স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলোঃ
ইদানিং ফেসবুকে আসলেই “মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স” নিয়ে বিভিন্ন পোষ্ট দেখছি। এর একটি আলোচিত পয়েন্ট”ভাই-বোন এর প্রভাব বিস্তার “। এই বিষয়টা নিয়ে কিছু না বলে আর থাকতে পারলাম না। এই ভাই-বোন হলো আমাদেরই মেঘনার সন্তান(রফিকুল ইসলাম ও তার ছোট বোন সালমা আক্তার)(সালমা আক্তার মানিকারচর সাহেরা লতিফ মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,মাটির মানুষ ” স্যার আবুল কালাম ভূইয়া”র স্ত্রী)। যখন মেঘনায় সরকারি চাকুরিজীবী খুব কম ঠিক সেই সময়টা থেকে তারা বিভিন্ন জায়গায় সম্মানের সাথে চাকরি করে আসছে। এবার আসি মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কথায়।তখন সবেমাত্র এই হাসপাতালটি চালু হয়েছে।সেই সময়টায় খুব কম জনবল নিয়ে শুরু হয় হাসপাতালটির কাজ। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন না কোনো কর্মচারী।ঠিক তখন সেই সব দায়িত্বের কিছু নিজেদের কাধে তুলে নেন এই ভাই-বোন। তখন মেঘনার এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসে কেউই বেশিদিন থাকতে চাইতো না। এসেই চলে যেতো। কিন্তু এই ভাই-বোন সেই সময়টায়ও নিজেদের কথা না ভেবে জন্মভূমি টানে পরে ছিলো এই মেঘনাতেই।অন্য কোনো যায়গায় চলে গেলে অবশ্যই মেঘনার চাইতে অনেক বেশি সম্মান ও মর্যাদা তারা পেতে পারতো। কিন্তু তারা আটরে ধরে রেখেছিলো মেঘনা হাসপাতালটাকে। নানা রকম সমস্যায় জর্জরিত তখন মেঘনা হাসপাতাল।এই ভাই-বোন তখন নিজেরা রাত দিন খেটে হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ করেছেন। রাত নেই, দিন নেই,হাসপাতালের কাজে ছুটে এসেছেন।মহিলা ডাক্তাররা এই নির্জন জায়গায় থাকতে ভয় পায় বলে ট্রান্সফার হয়ে চলে যেতে চাইতো।তখন সেই বিপদের সময়ে সালমা আক্তার তার নিজের বাসায় মহিলা ডাক্তারদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।সময়ে অসময়ে সবাইকে সাহায্য করেছে।তার সততার জন্য প্রত্যেকটি কর্মকর্তা,কর্মচারী তাকে শ্রদ্ধা করেন।অফিসিয়াল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন এই নারী।একই সাথে আরেকটি পোষ্টের দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন শুধুমাত্র জনবলের অভাবে এবং হাসপাতালের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে।এবার আসি কেন এই পরিশ্রমি সালমাই এলাকার মানুষের কাছে খারাপ হয়ে গেলো সেই কথায়। ১. প্রতি মাসে সরকার কর্তৃক ধার্যকৃত ভালো একটি এমাউন্ট সরকারকে দিয়ে সালমা তার পরিবার নিয়ে থাকেন হাসপাতাল স্টাফ কোয়ার্টারস এ থাকেন।সেখানে প্রায় বেশিরভাগ ভবনই জনমানবহীন। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বৈধ্যনাথপুর ও শিবনগরের কিছু বখাটে নেশাখোর ভবনের ভেতরের গ্রিল কেটে ভেতরকার ফ্যান,লাইট,পানির কল সহ বিভিন্ন জিনিস চুরি করতে শুরু করে।আর এই বিষয়টি যখন সেখানে বসবাসকারী স্টাফ সালমার দৃষ্টিতে আসে তখন তিনি তাদের আইনের ভয় দেখায়।এতে করে বখাটেরা সালমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ২.হাসপাতালের আবাসিক ভবনের সামনে কিছু বখাটে প্রতিদিন ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতে আসে। এবং প্রচন্ড রকম চিৎকার চেচামেচি এবং হাসপাতালের জানালার গ্লাস নষ্ট করা সহ নানা রকমের অসভ্যতা করতে থাকে।এতে করে সালমা তাদের বারন করাতে বখাটেরা সালমার উপর ক্ষিপ্ত হয়।সালমার বাগান বাড়িতে থাকা সখের সব ফল গাছ তারা গোরা থেকে কেটে ফেলে।রাস্তা ঘাটে সালমার পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে। সালমার দোষ ছিলো হাসপাতালের রক্ষনাবেক্ষন করা। ৩.হাসপাতালের নিরিবিলি জনহীন পরিবেশে এলাকার কিছু চরিত্রহীন নেশাগ্রস্থ হোক নারী নিয়ে এসে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতো।সালমা এই সব বিষয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয় বলে সালমা শিকার গভীর ষড়যন্ত্রের। এক কথায় এই হাসপাতালের জন্য এই এলাকার নারীটির করা কাজের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তবু তার বিরুদ্ধেই আজ নানা রকম মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে তাকে অসম্মান করার পরিকল্পনা চলছে।যারা এইসব চক্রান্ত করছে তারা নিজেদের সার্থে আঘাত লাগাতেই করছে। আর আমরা সেই সব দেখে মজা নিচ্ছি।আসলে আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত।আমরা গুনীর সম্মান দিতে জানি না, কিন্তু কিভাবে তার সম্মান নষ্ট করতে হয় তা খুব ভালো করেই জানি। প্লিজ আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না।তাঁকে অসম্মানের হাত থেকে বাঁচান।এলাকার একজন শিক্ষিত নারীর সম্মান নিয়ে এই খেলাটা বন্ধ করতে পোষ্টটি প্লিজ শেয়ার করে সবাইকে জাগ্রত করুন।
★আর যেন মানবতার হার না হয়★