মেঘনায় প্রাথমিক শিক্ষকের হামলায় আহত ৪, গ্রেফতার ২
আরিফুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুর ০৩:৩৭, ২ এপ্রিল, ২০২৪
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের তুলাতুলি শিবনগর গ্রামে গত শনিবার ৩০ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে ৪০ নং শিবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক দেলোয়ার মাস্টারের বাড়ির সামনে।
ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক ও জমিজমা সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের রেষারেষির জেরে গত শনিবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে চন্দনপুর বাজার হতে অভিযুক্ত দেলোয়ার মাস্টারের বাড়ির রাস্তা দিয়ে ভুক্তভোগীরা বাড়ি ফেরার পথে ছেলে নাহিদ ও ভাতিজা আরিফকে নিয়ে দেলোয়ার হোসেন লাঠিসোঠা, রড ও ধারালো দেশিয় অস্ত্র দিয়ে চালানো অতর্কিত হামলায় ৪ জন মারাক্তকভাবে আহত হয়। হামলায় আহতরা হলেন, হারুন রশিদ, মোহাম্মদ নবী হোসেন, বিল্লাল এবং আলমগীর। পরে চিৎকার চেঁচামিচি শুনে আশেপাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে। তাদের উদ্ধার করতে আসা আর বেশ কয়েকজনসহ আহত হওয়া সবাইকে মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
এঘটনায় ভোক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাত ৮টায় মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলে নাহিদকে গ্রেফতার করেন মেঘনা থানা পুলিশ।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে দেলোয়ার মাস্টার ও তার ছেলেকে গ্রেফতারের বিষয় নিশ্চিত করে মেঘনা থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব দেলোয়ার হোসেন মেঘনা নিউজকে বলেন, উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন এবং মামলাদ্বয় তদন্তাধীন রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চন্দনপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ এবাদত উল্যাহ মুঠোফোনে মেঘনা নিউজকে বলেন, তারা সম্পর্কে চাচাতো জেঠাতো ভাই এবং জমি বিক্রয় জনিত বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য ও বাকবিতন্ডতা চলছিল এবং সামাজিকভাবে সমাধান করার বিষয়ে উভয় পক্ষই সম্মত ছিল তবে গত শনিবার বাকবিতন্ডতার এক পর্যায়ে দেলোয়ার মাস্টারের ছেলে শুরুতে হামলা করলে দেলোয়ার মাস্টার ও অন্যান্যরাও যুক্ত হয়। হামলার শিকার হয়ে পরবর্তীতে মেঘনা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে মেঘনা থানা পুলিশ দেলোয়ার মাস্টার ও তার ছেলেকে গ্রেফতার করে বলে জানতে পেরেছি।
এবিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় উপজেলা শিক্ষা অফিসার জনাব গাজী মোঃ আনোয়ার হোসেনের সাথে। মৌখিকভাবে জানলেও লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে মেঘনা নিউজকে জানিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন জেলে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে মেঘনা নিউজ। তবে, বেশকয়েকবার কল দিলেও তা রিসিভ করেন নি কেউ।
উল্লেখ্য যে, অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীর নিকট হতে অর্থ গ্রহণের অভিযোগে দায়িত্ব পালন করা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছিল বলেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই গ্রামের বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যাক্তিসহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের সাথেও কথা বলে মেঘনা নিউজ। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেলোয়ার মাস্টারের বিরুদ্ধে এমন আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে যা জনসম্মুখে আসেনি। তবে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তারা।