মা বাবার সন্দেহের বসে ঝগড়া : থানায় উপস্থিত ছেলে!
আরিফুল ইসলাম শনিবার সকাল ১১:৩৩, ২২ জুন, ২০১৯
কাজী ওয়াজেদ, অফিসার ইন চার্জ, সুত্রাপুর থানাঃ বিস্কুট খাওয়ার জন্য বলতেই বললো, থ্যান্ক্যু স্যার, বিস্কুট খাবো না।
আর খাবেই বা কিভাবে ? কান্না জড়িত কন্ঠে যে কিছু খেতে ইচ্ছে করে না। তাছাড়া প্রথমে একবার সৌজন্যতা দেখিয়ে না বলতেই হয় ! ছোট্ট ছেলেটির মধ্যে সেই ভদ্রতাটুকু বেশ আছে লক্ষ্য করলাম।
ছেলেটির সাহসের তারিফ করতেই হয় ! গতকাল কাঁদতে কাঁদতে থানায় আসে।
অভিযোগ, বাবা শুধু শুধু মা-কে সন্দেহ করে। আর এসব নিয়ে ঝগড়া ঝাটি, হাতাহাতি, যা দেখতে ভাল লাগে না ৩য় শ্রেনীতে পড়া দরিদ্র পরিবারের ছেলেটির।
বাবা মায়ের ঝামেলা মিটানোর জন্য নিজে থেকেই থানায় আসে সে।
গতকালই বাবা মা-কে থানায় এনে কথা বলার জন্য অফিসার পাঠালেও পাওয়া যায়নি বাবাকে।
আজ বাবা আর মা-কে ডেকে এনে বোঝানো হল যাতে তাঁদের কোন আচরনের কারনে ছেলেটির স্বাভাবিক জিবনে কোন প্রভাব না পড়ে। ছেলেটিও খুব খুশি হল।
যতটুকু বোঝা গেল ছেলেটি পারিবারিক শান্তি আর নিরাপত্তা চায়। চায় টেনশনমুক্ত থেকে সুন্দরভাবে পড়ালেখা করতে।
কথাবার্তায় অত্যন্ত মার্জিত আর শব্দ চয়নে মেধার মিশ্রণ। পারিবারিক দৈন্যতার মাঝেও ছেলেটির মাঝে বড় হওয়ার একটা আকুতি বেশ স্পষ্ট !
কাছে বসিয়ে নিচু স্বরে আর্থিক কোন সমস্যা আছে কিনা জিজ্ঞেস করতেই বললো, “নেই স্যার”। বুঝলাম এই ছোট ছেলেটির সামর্থ না থাকলেও আত্মসম্মানবোধে কোন ঘাটতি নেই।
আজ ২য় দিনে তিনবার বলার পর একটা বিস্কুট হাতে নিলেও খেতে দেখলাম না। শুধু তাই নয়, যাওয়ার সময় বাবা মায়ের সামনেই নিজ থেকে চেয়ে নিল আমার ফোন নম্বর। ছোট্ট ছেলেটি খুব স্মার্টলিই বললো “স্যার, প্রয়োজনে আপনাকে ফোন দিবো”।
ছোট এই ছেলেটির আচরন আর কথাবার্তায় বিস্মিত না হয়ে পারিনি। মনে মনে ভাবলাম, এমন সাহসী আর স্মার্ট ছেলেই তো আমরা চাই।
ওর কথাবার্তা আর আচরনে মনে হল ও যাবে অনেক দূর, ভাল কিছু পাবো আমরা ওর কাছ থেকে !
লেখা :