ভোলায় কাস্তে গরম করে স্ত্রীর গালে ছ্যাঁকা দিল পাষন্ড স্বামী
কামরুজ্জামান শাহীন,ভোলা রবিবার রাত ০১:৪৭, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাটে যৌতুকের দাবীতে এক গৃহবধূকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে তার স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তাকে কাস্তে গরম করে ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়েছে। এমনকি ছ্যাঁকা দেওয়ার পর অসুস্থ গৃহবধূকে চিকিৎসা না দিয়ে ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এ ঘটনায় গৃহবধূ আছমা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে তিনজনকে আসামী করে দুলারহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুলারহাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) লেলিন কান্তি হাওলাদার বলেন, পুলিশ রাতেই মামলার এজাহারভূক্ত আসামী স্বামী মো. হোসাইন ও তার পিতা মো. রুহুল আমিনকে আটক করেন। এবং ভিষ্টিম গৃহবধূ আছমাকে চিকিৎসার জন্য চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে আটক আসামী হোসাইন ও রুহুল আমিনকে চরফ্যাশন আদালতে সোর্পদ করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার দুলারহাট থানার নীলকমল ইউনিয়নে চর নুরুল আমিন গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডে স্বামী হোসাইনের বাড়িতে গৃহবধূর ওপর এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
গৃহবধূ আছমা উপজেলার দুলারহাট থানার নীলকমল ইউনিয়নে চর নুরুল আমিন গ্রামের মো. মতলবের কন্যা। স্বামী মো. হোসাইন একই গ্রামের মো. মোঃ রুহুল আমিনের ছেলে।
গৃহবধূ আছমা জানান, তার স্বামী মো. হোসাইনের সঙ্গে বিয়ের পূর্ব থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। তাদের মধ্যে প্রেম প্রণয় হবার পর মাস দুই হয়েছে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আছমার পরিবারের কাছ থেকে যৌতুক আনার জন্য বলেন স্বামী হোসাইন। আছমার পরিবার যৌতুক দিতে অস্বীকার জানান। তারপর থেকে গৃহবধূ আছমার ওপর নেমে আসে নির্যাতন খড়গ। প্রতিদিনই কোন না কোন সামান্য বিষয় নিয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ীর নির্যাতন সইতে হয় গৃহবধূ আছমার। নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামী হোসাইনের সংসার করবেনা বলে আছমা জানায়।
সংসার করবেনা বলায় বৃহস্পতিবার রাতে স্বামী হোসাইন কাস্তে গরম করে গৃহবধূ আছমার বাম পাশের গালে ছ্যাঁকা দিয়ে পুড়িয়ে দেন এবং চিকিৎসা না দিয়ে ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় গৃহবধূ আছমার পিতা মো. মতলব খবর পেয়ে স্বামীর হোসাইনের বাড়ী থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে দুলারহাট থানায় নিয়ে আসেন। এবং রাতে গৃহবধূ আছমা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ মামলার প্রধান আসামী স্বামী মো. হোসাইন ও তার পিতা মো. রুহুল আমিনকে রাতেই আটক করেন। এবং গৃহবধূ আছমাকে চিকিৎসার জন্য চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুলারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ারুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় গৃহবধূ আছমা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ মামলার এজাহারভূক্ত আসামী স্বামী হোসাইন ও তার পিতা রুহুল আমিনকে আটক করেছেন।
তাদেরকে শনিবার দুপুরে চরফ্যাশন আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। বাকী একজন আসামীকে আটকের অভিযান অব্যহত রয়েছে।