পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার বাকরখানি
মোঃ কামরুজ্জামান রবিবার দুপুর ০২:৪৩, ১৭ মে, ২০২০
বাকের খান ও খনি বেগমের কিংবদন্তি প্রেমের ইতিহাস লুকিয়ে আছে এই বাকরখানি রুটিতে। আগা মুহাম্মদ বাকের ছিলেন একজন শিক্ষিত পুরুষ এবং সাহসী যোদ্ধা। তিনি ঢাকার নৌবাহিনী প্রধান মীর হাবিবের অধীনে ত্রিপুরা অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই অভিযানে সাফল্য লাভ করে তাকে ত্রিপুরার ফৌজদার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। কে এই আগা মুহাম্মদ বাকের? তিনি ছিলেন ইরানের এক সম্ভ্রান্ত বংশের লোক। তিনি দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলি খাঁর মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। তখনকার দিনে রাজাদের স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও নিজস্ব বাগানবাড়িতে নর্তকীদের রাখা হতো। ঢাকার আরামবাগের নর্তকী খনি বেগমকে বাকের খান মোটামোটি ভালোই বেসে ফেলেছিলেন। এবং এই ভালোবাসায় একশভাগ সততা ছিল। ঢাকার উজির আলা জাহানদার খাঁর ছেলে জয়নুল খাঁ ও খনি বেগমের প্রতি দুর্বল ছিল। সে ছিল অত্যন্ত খারাপ স্বভাবের, পিতার অযোগ্য সন্তান যাকে বলে। একদিন জয়নুল খাঁ জোর করে খনি বেগমকে তুলে দক্ষিণ -পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বরিশাল) জঙ্গলে ধরে নিয়ে যায় এবং ভীষণ যন্ত্রনা দিয়ে তাকে হত্যা করে। আগা খান অল্প সময়ের জন্য মৃত্যু পথযাত্রী খনি বেগমের দেখা পান। খনি বেগমের মৃত্যুর পর তিনি সেই এলাকাতেই থেকে যান। তারই নামানুসারে ওই এলাকার নাম রাখা হয় বাকেরগঞ্জ। বাকের ও খনির এই ভালোবাসার কাহিনীর উপর ভিত্তি করে বাকের খানের প্রিয় খাবার বিশেষ ভাবে তৈরী রুটির নাম রাখা হয় ‘বাকরখানি’, যা আজ ঢাকার জনপ্রিয় একটি খাবার। সুতরাং, আমরা বলতে পারি, মোঘল আমলের এই রুটি আজও আমাদের ঢাকায় একটি উৎকৃষ্ট খাদ্য হিসেবে টিকে রয়েছে।