ঢাকা (রাত ৮:২৩) শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

ভাষাশহীদ আবদুল জব্বারের জন্মদিন আজ

ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার
ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার

<script>” title=”<script>


<script>

ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার ১১ অক্টোবর ১৯১৯ ইং বা বাংলা ২৬শে আশ্বিন ১৩২৬ বঙ্গাব্দ ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাঁচুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাছেন আলী এবং মাতার নাম সাফাতুন নেছা।

আনসার প্লাটুন কমান্ডার আবদুল জব্বার ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত। আরও অনেকের মতো তার অসীম সাহসিকতা ও আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা পেয়েছে আমাদের মাতৃভাষার স্বীকৃতি। আর ২১ ফেব্রুয়ারি পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি।

ছয় ভাই এবং দুই বোনের মধ্যে আবদুল জব্বার ছিলেন দ্বিতীয়। শিশুকাল থেকেই তাকে দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে জীবন কাটাতে হয়েছে। তিনি পাঁচুয়ার পার্শ্ববর্তী খারুয়া বড়াইলের খারুয়া মুকন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিছুকাল অধ্যয়ন করেন। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে লেখাপড়া ত্যাগ করে বাবাকে কৃষিকাজে সাহায্য করতে হয় জব্বারকে।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে গফরগাঁও রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে করে নারায়ণগঞ্জ চলে আসেন তিনি। সেখানে জাহাজঘাটে এক ইংরেজ সাহেবের সঙ্গে বার্মায় (বর্তমান মিয়ানমার) চলে যান। জাহাজে করে দেশ-বিদেশ ঘুরে ঘুরে ইংরেজ সাহেবের ব্যবসা দেখতে থাকেন। একসময় বাড়ির জন্য মন কেঁদে ওঠে তার। ততদিনে তিনি ১৮-১৯ বছরের টগবগে যুবক। তিনি নিজ গ্রামে ফিরে আসেন মা-বাবার কাছে। এরপর আবদুল জব্বার ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস ময়দানে এসে পাকিস্তান ন্যাশনাল গার্ডে (পিএনজি) যোগদান করেন।

পরবর্তীকালে পিএনজি ভেঙে দিয়ে কিছু সদস্যকে আনসার বাহিনীতে নিয়োগ করা হয়। তিনি চলে আসেন আনসার বাহিনীতে। ময়মনসিংহ সদর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গ্রামে এসে ‘আনসার কমান্ডার’ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার দায়িত্বশীল কাজের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।

১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবদুল জব্বার তার অসুস্থ শাশুড়ির চিকিৎসা করাতে ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ভাষার জন্য আন্দোলনের কথা জানতেন। তিনি বলতেন, নিজের মায়ের ভাষায় কথা বলার স্বাধীনতা নেই, অথচ আমরা নাকি স্বাধীন হয়েছি! ঢাকায় যাওয়ার আগে তিনি ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে একজোড়া স্যান্ডেল ও একটি কলম চেয়ে নেন।

১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বেলা ৩টায় ঢাকায় এসে পৌঁছান। ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশে বের হন। দুপুর ২টার দিকে ডাক্তারের সঙ্গে শাশুড়ির অপারেশনের বিষয়ে আলোচনা করে বেরিয়ে আসেন এবং রাজপথে মিছিলে ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিশে যান। পুলিশ মিছিল লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করে।

প্রথম গুলি লাগে রফিকের মাথায়। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরক্ষণেই গুলি লাগে জব্বারের ডান হাঁটুতে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরমুহূর্তেই আরও একটি গুলি এসে তার কোমরে বিদ্ধ হয়। পুলিশ মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিলে মেডিকেলের ছাত্র সিরাজুল ইসলাম জব্বারকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে ভর্তি করান। তার অবস্থা দেখে ডাক্তার আশা ছেড়ে দিলেও হাঁটুতে অপারেশন করে তারা গুলি বের করেন। সেদিন রাতেই ৩৩ বছর বয়সে জব্বার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

২২ ফেব্রুয়ারি বিকালে আজিমপুর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। ভাষাশহীদ আবদুল জব্বারকে ২০০১ সালে সরকার একুশে পদকে ভূষিত করে। বাংলার মানুষের হৃদয়ে শহীদ আবদুল জব্বারের নাম চিরভাস্মর হয়ে থাকবে।

আজ তাঁর জন্মবার্ষিকী। আজকের এইদিনে তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT