ঢাকা (বিকাল ৩:৩৭) শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম
Meghna News ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থা দ্রুত সংস্কার করবো: ভিসি আমানুল্লাহ Meghna News গৌরীপুরে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের বর্ণিল বিদায় সংবর্ধনা Meghna News স্বামীর মধুময় স্মৃতি রোমন্থনে দিন কাটছে স্ত্রী মারজিনার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃতি সন্তান সানাউল্লাহ হলেন নির্বাচন কমিশনার Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার, আটক-১ Meghna News নাগরপুরে যদুনাথ স. প্রা. বিদ্যালয়ে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত Meghna News দ্রুত সুমনের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি জানাল পরিবার Meghna News সাপ্তাহিক বৈচিত্র্যময় সিলেটের সম্পাদক গরম পানিতে ঝলসে গুরুতর আহত Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে খাস জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষে নিহত একজন Meghna News চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিখোঁজের ৪ দিন পর আদিবাসী শিশুর মরদেহ উদ্ধার

সান্তাহারের ইতিহাস ঐতিহ্যের রক্তদহ বিল

মিরু হাসান বাপ্পী, আদমদীঘি (বগুড়া) মিরু হাসান বাপ্পী, আদমদীঘি (বগুড়া) Clock রবিবার রাত ০৮:৪৭, ৯ আগস্ট, ২০২০

সান্তাহারের রক্তদহ বিল। রক্তদহ বিল সান্তাহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল। এ বিলে প্রচুর পরিমানের মাছ পাওয়া যায়। এখানকার উল্লেখ যোগ্য মাছ গুলো- টেংরা, পুঁটি, চিংড়ি, মাগুর, জাপানি, বোয়াল, কানুস, কই, পাতাশি, সিলভার কার্প।

এই বিলে একটি উল্লেখ যোগ্য দরগা শরিফ আছে। সেখানে অনেক দুর দুরন্ত থেমেক মানুষ মানত করতে আসে। ইতিহাস আর ঐতিহ্য সমৃদ্ধ রক্তদহ বিল ঐতিহাসিকদের মতে, ১৭ শতাব্দীর শেষের দিকে ফকির মজনু শাহ আদমদীঘিসহ আশে পাশের এলাকায় ইংরেজদের দোসর জমিদারদের হাত থেকে বাঁচাতে আবারও তৎপরতা শুরু করেন।

সে সময় প্রজারা জমিদার ও ইংরেজদের দ্বারা প্রনিয়ত অর্থনৈতিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতো। তাদের উপর এমনভাবে কর ধার্য করা হতো, যা পরিশোধ করতে গিয়ে সর্বশান্ত হতে যেতো। ফলে প্রজাদের বাধ্য হয়ে জমিদারদের নায়েব গোমস্তা এমনকি ইংরেজদের সাধারণ সিপাহী ও কর্মচারীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত সুদে টাকা ধার নেয়া ছাড়া উপায় ছিল না। এই ধার দেয়া টাকা সুদ আদায় করতে শক্তি প্রয়োগ করা হতো। এভাবে প্রজাশোষণ যখন চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছে ঠিক সেই সময় অর্থাৎ ১৭৮৬ সালে এই এলাকায় অস্ত্রধারী সন্নাসী ও ফকিরদের সাথে নিয়ে ফকির মজনু শাহ এর আগমন ঘটে।

সে সময় আদমদীঘির অধিকাংশ এলাকা ছিল গহীন অরণ্যাবৃত এলাকা। তারা এ সব অরণ্য থেকে বের হয়ে এসে ইংরেজ শাসকদের ও তাদের এদেশীয় দোসর জমিদারদের উপর হামলা চালাতে শুরু করেন। যেখানেই প্রজা নিপীড়ন হতো সেখানেই মজনু বাহিনীর উপস্থিতি ঘটত। প্রজাদের সমর্থন নিয়ে ফকির মজনু বাহিনীর অভিযানে ইংরেজ ও জমিদারদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মজনু বাহিনী জমিদারদের কাছ থেকে নির্ধারিত চাঁদা আদায় করে গরীব প্রজাদের বিলিয়ে দিতেন।

তৎকালীন জমিদারদের মধ্যে কয়েকজন জমিদারকে অপহরণ করে আদমদীঘির কড়ই গ্রামের গভীর অরণ্যে লুকিয়ে রেখে মুক্তিপণ আদায় করে আবার ছেড়ে দিতেন। এক সময় কড়ই জমিদার শ্রীকৃষ্ণ চৌধুরী মজনু শাহ এর ভয়ে ভীত হয়ে রাতের আঁধারে পালিয়ে ময়মনসিহে আশ্রয় গ্রহণ করেন। তবে এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আদমদীঘির ছাতিয়ানগ্রামের জমিদারের কন্যা রানী ভবানী যখন নাটোরের জমিদার ছিলেন তখন ফকির মজনু শাহ এর বাহিনী শুধু মাত্র রানী ভবানীকে অত্যন্ত সমীহ করতেন। বিভিন্ন গ্রন্থে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় ফকির মজনু নিজ হাতে রানী ভবানীর নিকট পত্র লিখে তার সফলতা কামনা করেছিলেন। যখন জমিদার ও ইংরেজ সরকার এদের দমন করার জন্য সেনা নায়ক লেফটেন্যান্ট আইনস্টাইনের নেতৃত্বে একটি বড় আকারের বাহিনী প্রেরণ করেন।

এ সংবাদ পাওয়ার পর দুর্ধর্ষ ফকির বাহিনীর সদস্যরা ২৪ ঘন্টার নোটিশে কড়ই জঙ্গল এলাকায় সমবেত হন। এদিকে ইংরেজ সৈন্যরা আত্রাই নদী হয়ে নৌকাযোগে বিল ভোমরা দিয়ে গোপনে কড়ই জঙ্গল ঘেরা করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে। এ সংবাদ পেয়ে মজনু বাহিনী এগিয়ে এসে বিল ভোমরায় তাদের বাধা দিলে উভয় পক্ষ প্রচন্ড যুদ্ধ বাধে। এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের প্রচুর লোক হতাহত হওয়ায় বিল ভোমরার পানি রক্তের জোয়ারে লাল রং ধারণ করে সেই থেকে বিল ভোমরা ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল নাম ধারণ করে আসছে।

ঐ যুদ্ধে মজনু শাহ এর একজন শীর্ষ সহযোগী শহীদ হন। তার লাশ ঐ বিলের মধ্যেই একটু উঁচু স্থানে দাফন করা হয়। সেখানে একটি বটগাছ সর্বক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে। প্রবীন লোকদের মতে, যত বড় বন্যা হোক না কেন ঐ কবরে কখনও পানি উঠে না অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল সংস্কারের অভাবে দিন দিন তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। ফাল্গুণ চৈত্র মাসে সেখানে আর পানি দেখা যায় না।




শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT