ঢাকা (বিকাল ৫:২০) শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং

নবীগঞ্জে নারীদের সমস্যা সমাধানে ‘তথ্য আপা’

<script>” title=”<script>


<script>

কিবরিয়া চৌধুরী, নবীগঞ্জ থেকেঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সুবিধা বঞ্চিত নারীদের সমস্যায় পাশে দাঁড়ান তথ্য আপা, প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়েও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। এ উপজেলা ‘তথ্য আপা’ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন, বিশেষ করে স্কুল- কলেজ ও মাদরাসার ছাত্রীদের কাছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকারের নতুন সেবা ‘তথ্য আপা’। তথ্য আপার কাজ হলো তৃণমূলের নারীদের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা পৌঁছে দিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ব্যবসা, জেন্ডার, আইন এই ছয়টি বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে জাতীয় মহিলা সংস্থা। নবীগঞ্জ তথ্য কেন্দ্র থেকে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলায় গত চার মাস ধরে কাযক্রম শুরু করেন তথ্য আপা। এ পর্যন্ত অন্তত দেড় হাজার নারী তথ্য আপার কাছ থেকে তথ্য সেবা নিয়েছেন। নবীগঞ্জ উপজেলা তথ্যকেন্দ্র কার্যালয়ে তথ্যসেবা কর্মকর্তা (তথ্য আপা) নাহিদা আক্তার, দুই তথ্য সেবা সহকারী শারমিন আক্তার পলি ও লিমা আক্তার এবং এছাড়াও একজন অফিস সহায়ক কর্মরত আছেন। তারা জানান, গত কয়েক মাসে অনেক বাল্যবিয়ে বন্ধ, স্বামী ও দেবর কর্তৃক নারী নির্যাতন সমাধান, যৌতুক নিরোধ ও প্রতি মাসে তৃণমূল নারীদের নিয়ে উঠান বৈঠক করে তাদেরকে সচেতন করছেন। সরেজমিনে তথ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন ছাত্রী তথ্য আপার কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন। এসময় শিক্ষার্থী জনি আক্তার ও মরিয়ম আক্তার জানান, ‘এইচএসসি পরীক্ষা পাস করে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছি চাকরি খোঁজার চেষ্টা করছি। তথ্যকেন্দ্রে তথ্য আপার কাছে এসে অনলাইনে বিনা মূল্যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছি।উপজেলার করগাঁও এলাকার গৃহবধূ ফারজানা আক্তার বলেন, ‘আমার শারীরিক অনুস্থতার কারনে খুব সমস্যায় পড়েছিলাম। এ বিষয়ে তথ্য আপাকে জানানোর পর তাঁরা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেন। আমি তখন ঘরে বসেই চিকিৎসাসেবা পেয়েছি। উপজেলার বড় ভাকৈর (পূর্ব) এলাকার নাদিয়া আক্তার বলেন, ‘তথ্য আপারা গ্রামে এসে ইন্টারনেট, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কৃষিবিষয়ক উঠান বৈঠকের মাধ্যমে আলোচনা করে থাকেন। তাঁরা আমাদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন। আমরা এখন নতুন অনেক কিছু শিখেছি । সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে সারা দেশে ৪৯০টি উপজেলায় তথ্য আপা সেবা চালু করা হয়। এর আগে প্রথম পর্যায়ে ১৩টি উপজেলায় এ সেবা চালু করা হয়েছিল। নবীগঞ্জ উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তা (তথ্য আপা) নাদিয়া আক্তার বলেন, ‘আমরা নারীদের সব ধরনের তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করি, অফিসের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে উঠান বৈঠক করে ডিজিটাল সেবা কী, কিভাবে সেবা পাওয়া যাবে এসব বিষয়ে আলোচনা করে থাকি।’ তিনি আরো, ভবিষ্যতে সেবার মান আরো বাড়ানো হবে এবং এ কার্যালয়ে নারীদের সকল ধরনের সেবা বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। সরকারের এমন মহতী উদ্যোগের কারনে সমাজে পিছিয়ে পড়া নির্যাযিত নারীরা এ সেবার মাধ্যমে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে। তিনি উপজেলার সকল তৃনমূল পর্যায়ে নারীদের সমস্যা সমাধানে এ কার্যালয়ে সেবা নেয়ার জন্য অফিসে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন-হাসান বলেন, সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নারীদের ক্ষমতায়নের (প্রকল্প-২) জন্য দেশের ৪৯০টি উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই প্রক্ষিতে নবীগঞ্জের তৃণমূলের নারীদের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে উঠার বৈঠকের মাধ্যমে মা-বোনদের সচেতন করা হয়। পাশাপাশি সরকার মেয়েদের জন্য যে বিনামূল্যে লেখাপড়াসহ সুবিধা দিচ্ছে তা জানান তথ্য আপা। এ ছাড়াও উঠান বৈঠকে আমার বাড়ি আমার খামাড়সহ সরকারে সব সযোগ সুবিধার কথা জানানো হয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নারীরা অনেক সচেতন হবে এবং নিজের ক্ষমতায়ন সম্পর্কে জানবে বলে মনে করে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম বলেন- তথ্য আপার উঠান বৈঠকের মাধ্যমে নারী বিভিন্ন ধরণের সেবা পাচ্ছে। যেমন নারীদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা সর্ম্পকে জানতে পারে। তাদের অধিকার আদায়ের জন্য কি করতে হবে, এ বিষয়টা অনেকেই জানতো না। তৃণমূলের মেয়েরা অনেকেই লজ্জাবোধ করে কি বলতে বা কিভাবে জানবে। তথ্য আপা প্রকল্পটি নারীদ্বারা পরিচালিত হওয়ায় তথ্য আপার সাথে সরাসরি কথা বলে যেকোন সমস্যার সমাধান করতে পারে। বিশেষ করে গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে নারীরা অনেক এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন এই ভাইস চেয়ারম্যান।

শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর




© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT