কালবৈশাখী ঝড়ে উড়ে গেলো স্কুলের টিনের ছাদ, খোলা আকাশের নিচেই চলছে পাঠদান
এস এম সাখাওয়াত জামিল দোলন,চাঁপাইনবাবগঞ্জ বৃহস্পতিবার ১২:৫০, ১৯ মে, ২০২২
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার উপর দিয়ে গত সোমবার মধ্যরাতে বয়ে চলা প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার বহিপাড়া গ্রামের বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের টিনের ছাদ উড়ে গেলেও খোলা আকাশের নিচেই পাঠদান করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মূলত শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে এই কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ জানান, সোমবার (১৬ মে) মধ্যরাতে কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যালয়টির টিনের ছাদ উড়ে যায়। তবে সিলেবাস শেষ করে পাঠদান স্বাভাবিক রাখতে খোলা আকশের নিচেই বসে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা, বর্ষার সময়ে যেকোন সময় বৃষ্টি আসতে পারে। এই শঙ্কা মনে নিয়েই তারা ক্লাস করছে। খোলা আকাশের নিচে রোদ মাথায় নিয়েই গত মঙ্গলবার পাঠদান সম্পন্ন হয়েছে।
বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাত আলী জানায়, এভাবে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করা খুবই কষ্টকর। মাথায় রোদের তাপ নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। কখন আবার বৃষ্টি চলে আসে সেই ভয়ও কাজ করছে। কারণ এতে আমাদের বই ভিজে যেতে পারে। এটা তাড়াতাড়ি ঠিক না করলে আমরা ক্লাসই করতে পারব না।
অভিভাবক তরিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় গড়ে উঠা বিদ্যালয়ে এই এলাকার ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে। কিন্তু ঝড়ে ঘর ভেঙে গেছে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই অস্বচ্ছল বলে অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যালয় মেরামতের টাকাও জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই যারা সমাজে স্বচ্ছল মানুষ রয়েছে তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
এ বিষয়ে বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনের ছাদ উড়ে গেছে। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতেই তাদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করিয়েছি। তবে রোদে বাচ্চাদের নিয়ে ক্লাস করতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে ঝড়ে বিদ্যালয়ের টিনের ছাদ উড়ে যাওয়ার পরপরই আমরা বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ঝড়ে টিন উড়ে যাওয়া ঘরগুলো মেরামতের দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
গোমস্তাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী খাতুন বুধবার জানান, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাদের কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং শিক্ষার্থীরা শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতে পারবে।
গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা খাতুন বলেন, বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানে ফেরাতে ও ভোগান্তি কমাতে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কক্ষ মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বহিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ৫১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৪ জন শিক্ষক পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন।