জিম্মি মুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের কড়া হুঁশিয়ারির পাল্টা জবাব দিল হামাস
মেঘনা নিউজ ডেস্ক বুধবার সকাল ১১:৪৭, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫
নিরলস প্রচেষ্টার পরও হামাসের কব্জায় থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের পুরোপুরি মুক্ত করতে পারেনি বাইডেন প্রশাসন। এদিকে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজে অভিষেক হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সেই অনুষ্ঠানের আগে যদি জিম্মিরা মুক্তি না পান, সেক্ষেত্রে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে ‘ভয়াবহ পরিণতি’ ভােগের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির মধ্যে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে হামাস। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আরও কূটনৈতিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা ওসামা হামদান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, আলজেরিয়ায় সাংবাদিকদের হামদান বলেন, ‘আমি মনে করি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে আরও সুশৃঙ্খল এবং কূটনৈতিক বিবৃতি দিতে হবে’।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, চুক্তিতে পৌঁছানোর সকল প্রচেষ্টাকে দুর্বল করার জন্য ইসরাইল দায়ী।
সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতারে আলোচনার বিষয়ে বিশদ বিবরণ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন হামাসের এই নেতা। তবে তিনি হামাসের শর্তগুলো পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ইসরাইলকে আগ্রাসনের সম্পূর্ণ অবসান এবং দখলকৃত থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।
গত ডিসেম্বরের শুরুতে হামাসের প্রতি আগেও এমন হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। নিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের চলমান যুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং পুরো বিশ্বের ইচ্ছের বিরুদ্ধে যাদেরকে জিম্মি হিসেবে বন্দি রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তির জন্য সবাই সরব; কিন্তু সবাই শুধু কথাই বলছে, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না’।
‘২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি আমার অভিষেক অনুষ্ঠান। যদি তার আগে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে ভয়াবহ পরিণতি ঘটবে। যুক্তরাষ্ট্র এমন আঘাত হানবে, যা এর আগে তার দীর্ঘ ইতিহাসে কখনও ঘটেনি। যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও সহিংসতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাদের সবাইকে নরকে পাঠানো হবে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা। ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। ভয়াবহ এ অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৫ হাজার ৮৮৫ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১০ হাজারের মতো মানুষ।
এই জিম্মিদের মধ্যে ১০৭ জনকে ২০২৩ সালের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঘোষিত এক অস্থায়ী বিরতিতে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। তারপর গত ১ বছরে কয়েক জন জিম্মিকে উদ্ধার করতে পেরেছে ইসরাইলি বাহিনী, কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। বর্তমানে হামাসের কাছে ১০১ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।