ঢাকা (রাত ১২:১৮) শনিবার, ১২ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনাম

গৌরীপুরে ব্রহ্মপুত্র ও শাখা নদ জলবুরুঙ্গায় অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত

ওবায়দুর রহমান ওবায়দুর রহমান Clock শনিবার দুপুর ০২:১৭, ৫ এপ্রিল, ২০২৫

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ব্রহ্মপুত্র ও শাখা নদ জলবুরুঙ্গায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে পূন্যস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) ভোর থেকে শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত চলে এই স্নান।

হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ কর ; এ মন্ত্র উচ্চারণ করে পাপ মোচনের আশায় পূণ্যার্থীরা আদি ব্রহ্মপুত্র নদ ও শাখা নদের স্নানে অংশ নেন।

স্নানের সময় ফুল, বেলপাতা, ধান-দূর্বা, হরিতকি, ডাব, আমপাতা, কলা ইত্যাদি পিতৃকুলের উদ্দেশ্যে নদের জলে তর্পণ করছেন তারা। সকালে লগ্ন শুরুর পরপরই স্নানার্থীদের ঢল নামে ব্রহ্মপুত্র নদে। ধর্মীয় রীতি-রেওয়াজ অনুযায়ী স্নানে অংশ নেন তারা। এসময় ব্রহ্মপুত্র নদের আশেপাশে পুলিশ নিরাপত্তা পালন করে।

এ পুণ্যস্নানে গৌরীপুর উপজেলা ছাড়াও দূর্গাপুর কেন্দুয়া, পূর্বধলা, শ্যামগঞ্জসহ নিকটবর্তী উপজেলা থেকে আগত সনাতন সম্প্রদায়ের প্রায় কয়েক হাজার পুণ্যার্থী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় ব্র‏হ্মপুত্রের তীরে সনাতনধর্মের পুণ্যার্থী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের এক মহামিলন মেলা শুরু হয়। অনেক স্নানার্থী জানান, এবার অষ্টমীস্নান করতে আসা লোকের সংখ্যা অনেক কম।

দূর্গাপুর থেকে আসা সুব্রত চক্রবর্তী (৫৭) জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে পাপ মোচন হয়, ব্রহ্মার কৃপা লাভ করা যায়। তাই আমি প্রতি বছর স্নানোৎসবে আসি। আমি একা আসিনি প্রতিবেশীদের নিয়ে স্বপরিবারে এসেছি। কিন্তু নদীতে জল কম। যেটুকু আছে ঘোলা জল, তারপরেও স্নান করে পূণ্য হলো মনে করি।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুণ্যস্নানকে কেন্দ্র করে অষ্টমীস্নান উপলক্ষে এলাকায় বসেছে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীমেলা। মেলায় বিভিন্ন ধরনের মোয়া, মুড়ি-মুড়কি, ঝুড়ি, গজা, দই-চিড়া, চিনি-গুড়ের তৈরি হাতি-ঘোড়া ও মাছ আকৃতির সাঁঝ, জিলাপি ও বিভিন্ন স্বাদের খাবারসহ শিশুদের খেলনা, গৃহস্থালি দা-বটি, তৈজসপত্রের দোকান বসে।

প্রসঙ্গত, সনাতন ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, ঋষিমণি পরশুরাম নামে সত্যযুগে জন্ম গ্রহণের পর কুঠার দিয়ে তার মাকে হত্যা করেছিলেন। এ সময় অভিশাপে তার হাতে কুঠার লেগে থাকে। তিনি অনেক সাধনার পর অলৌকিকভাবে দৈববাণী পেয়ে যান। এর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, চৈত্র মাসে শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ব্র‏হ্মপুত্র নদে স্নান করলে সমস্ত জীবনের পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তাই তিনি কালক্ষেপণ না করে ব্র‏হ্মপুত্র নদে স্নান করেন। এ সময় তার হাতে লেগে থাকা অভিশপ্ত কুঠার ব্র‏‏হ্মপুত্র নদের পানিতে পড়ে যায়।

এ কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন যুগ যুগ ধরে এ বিশ্বাস থেকে কুলনন্দন ব্র‏হ্মারপূত্র ব্রহ্মপুত্র নদে প্রতিবছর পাপ মোচনের উদ্দেশ্যে পুণ্যস্নান করে থাকেন।




শেয়ার করুন


পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT