উলিপুরে করোনার টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীকে মারলেন শিক্ষা অফিসার
সাজাদুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম বুধবার রাত ০১:৩৮, ১৯ জানুয়ারী, ২০২২
কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক শিক্ষার্থী করোনার টিকা নিতে এসে শিক্ষা অফিসার কর্তৃক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার এমন অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ মো. তারিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. শফিকুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিভাবকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ ও ভূক্তভোগির স্বজন সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার ১৫ জানুয়ারি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ বীর উত্তম মাহবুব সেনানিবাস ৮ম শ্রেণির ছাত্র সাদমান সাকিব রুদ্র করোনার টিকা নেয়ার জন্য জেলা পরিষদ ডাকবাংলো উলিপুরে লাইনে দাড়ালে ওই শিক্ষা অফিসার তার পরিচয় জানতে চায়। রুদ্র পারবর্তীপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের পরিচয় দিলে তাকে লাইন থেকে টেনে নিয়ে, ফাইল পত্র কেড়ে নিয়ে টেনে-হেসরে ডাকবাংলো থেকে উলিপুর সরকারি কলেজে নেয়ার পথে ওই শিক্ষার্থী বার বার অনুরোধ করেন ওই অফিসারকে স্যার আমাকে আমার কাগজ পত্র দিয়েদেন আমি টিকা নিবো না বাড়ী ফিরে যাবো। তখন শিক্ষা অফিসার কলেজে নিয়ে রিমান্ডে নিবে ও পুলিশে দিবে এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে অন্য স্কুলে পড়ে এখানে কেন টিকা নিতে এসেছিস। অনেক কাকুতিমিনতি করেও ছাড় পাইনি রুদ্র পাষন্ড শিক্ষা অফিসারের হাত থেকে!
পরে সরকারি কলেজে স্বাস্থ্য কর্মীদের হাতে তুলে দিলে ওই শিক্ষার্থীকে দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ করে শিক্ষা অফিসারসহ সকলে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্চিত করে। এক পর্যায়ে তারা তার স্বজনদের ফোনে খবর দেয় তোমাদের ছেলে সরকারি কলেজে আটক আছে।
এরপর খবর পেয়ে পাগল পাড়া হয়ে স্বজনেরা পাষন্ডদের হাত থেকে তাদের আদরের সন্তানকে অবরুদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে আসেন। এমন ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত মানসিক ভাবে ভীতিগ্রস্ত আছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কর্তৃক ওই শিক্ষার্থীর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য উপযুক্ত বিচার দাবী করেন ভূক্তভোগির স্বজনেরা।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ মো. তারিকুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি তাকে শুধু হাত ধরে বের করে নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়েছি।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শামছুল আলম বলেন, শিক্ষা অফিসার শুধু আমার কাছে জানতে চেয়েছেন অন্য (বাহিরের) প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এখানে টিকা নিতে পারবেন কিনা? যেহেতু বাহিরের কোন শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার কোন নির্দেশনা নেই, সেক্ষেত্রে তারা টিকা পাবেন না। তবে কারো সাথে খারাপ আচরণ করা মোটেও কাম্য নয়। টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।