অর্থাভাবে কী থেমে যাবে দলিত শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা!
ওবায়দুর রহমান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) মঙ্গলবার রাত ১০:৩২, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২
ময়মনসিংহের গৌরীপুরের দলিত সম্প্রদায়ের মেয়ে প্রিয়া রানী দাসের (১৯) স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। পড়াশোনা করে প্রস্তুতিও নিয়েছেন সে অনুযায়ী। সাফল্যও এসেছে। সুযোগ পেয়েছেন দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্ত অর্থাভাবে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যেতে বসেছে প্রিয়ার।
গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর মধ্যমতর্যফ এলাকায় জরাজীর্ণ ভাড়া বাড়িতে প্রিয়ার পরিবারের বসবাস। তার বাবা দিলীপ দাস একটি পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি। মা জয়ন্তী রানী দাস গৃহিণী। তিন-ভাইবোনের মধ্যে প্রিয়া দ্বিতীয়।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাবার একার আয়ে সংসারের টানাটানি লেগেই থাকতো। তাই পড়াশোনার খরচ যোগাতে টিউশনি করতেন প্রিয়া। সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন স্থানীয় অনেকেই। ২০১৯ সালে গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৩৯ ও ২০২১ সালে গৌরীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এই শিক্ষার্থী। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য গুচ্ছ পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধাতালিকায় ৮৮৩৮তম হয়ে সুযোগ পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের দর্শন বিভাগে। আগামী ২৭ থেকে ২৯ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে ভর্তি ফি জমা দিতে হবে। কিন্ত ভর্তির টাকার ব্যবস্থা নেই তার পরিবারের কাছে।
প্রিয়া রানী দাস বলেন, অনেক কষ্টে পড়াশোনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছি। আমি পড়াশোনা করে বিসিএস কর্মকর্তা হতে চাই। কিন্ত বাবা বলছে আর পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব নয়। টাকার জন্য কি আমার পড়াশোনা থেমে যাবে?
দিলীপ দাস বলেন, সকলের সহযোগিতায় মেয়ের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়েছি। এখন মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ায় আনন্দিত হয়েছি। কিন্ত ভর্তি ও পরবর্তী খরচের চিন্তায় সেই আনন্দ ম্লান হয়ে যেতে বসেছে। ২৯ ডিসেম্বর ভর্তি ফি জমা দেয়ার শেষ দিন। কিন্ত এখনো ভর্তির টাকা জোগাড় হয়নি।
গৌরীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মিলটন ভট্টাচার্য বলেন, প্রিয়া রানী দাস আমাদের কলেজে থেকে এইচএসসি পাস করেছে। আমরা তার পড়াশোনায় নানাভাবে সহযোগিতা করেছি। সে দলিত সম্প্রদায়ের আলো। সেই আলো যেন নিভে না যায় সে জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি।