শ্রীমঙ্গলে বিজিবির অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভেজাল পচা চা পাতা উদ্ধার
মোঃ জাকির হোসেনmমৌলভীবাজার সোমবার রাত ১০:৫৭, ১৮ অক্টোবর, ২০২১
মৌলভীবাজার জেলায় নিন্মমানের চা ও মেয়ার্দ উক্তীর্ণ পচা চা পাতায় সয়লাভ হয়ে গেছে। এতে করে প্রকৃত চা ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন। তারই আলোকে ৫৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা গোপন সংবাদে ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শ্রীমঙ্গল সিন্দুরখান সীমান্ত এলাকা থেকে বিপুল পরিমানের ভেজাল চা উদ্ধার করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র নিন্মমানের এই পচা চা পাতা কিছু ভাল চা পাতার সঙে মিশিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজার গুলোতে বিক্রি করায় সাধারণ ক্রেতারা ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছেন। এতে দেশ বিদেশ থেকে আসা পর্যটকরা নিম্ন মানের এসব চা ক্রয় করে চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গলের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।
শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্তবর্তী ১৯৪৫ পিলার এম সংলগ্ন সিক্কা গ্রাম থেকে ৫৫ বিজিবি এক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ পরিত্যক্ত পচা চা পাতা উদ্ধার করা হয়।
শ্রীমঙ্গল ৫৫ বিজিবি অধিনায়ক এস এন এম সামীউন্নবী চৌধুরী বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালিয়ে শ্রীমঙ্গল সিন্দুরখান ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী সিক্কা গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে মো. নুরু মিয়া ও মৃত আব্দুল বারীর ছেলে আব্দুর রহিম এবং একই গ্রামের আব্দুল মজিদের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ পরিত্যক্ত চা পাতা উদ্ধার করেছি। তারা দীর্ঘ দিন যাবৎ এসব পচা চা পাতা দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। অভিযানে বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে ওই চক্র পালিয়ে যায়। তবে কি পরিমাণ মালামাল উদ্ধার হয়েছে তা ওজন না করা পর্যন্ত সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় একটি চক্র অটোরাইসমিল কারখানায় চা গাছের পরিত্যক্ত শুকনো পাতা, অন্যান্য গাছের পাতা ও চা ফ্যাক্টরি ওয়েস্টিস ডাস্ট সংগ্রহ করে ওই চা পাতা পচিয়ে পরে তার মধ্যে কেমিক্যাল মিশিয়ে এ বিষাক্ত চা পাতা তৈরি করে বাজার করে আসছিল চক্রটি। যা মানুষের খাবারের অপযোগী। ওই চা পানে শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
অভিযোগ রয়েছে, ফিনলে টি কোম্পানির বিভিন্ন চা বাগানের ফ্যাক্টরী থেকে একটি চক্র চা পাতা ও গ্রীন টি চুরি করে বাজারজাত করায় প্রকৃত চা ব্যবসায়ীরা মুনাফা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
শ্রীমঙ্গল ফিনলে টি কোম্পানির পরিবেশক ফাহিম এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে স্বনামধন্য কোম্পানির প্যাকেটজাত ফিনলে চাসহ বিভিন্ন চা বাগানের কোয়ালিটি চা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছি। ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার কারণে দ্বিতীয়বার চা ক্রয় করতে দ্বিধাবোধ করে।
উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের রবিবার (২৭ জুন) বিকেলে শ্রীমঙ্গল সেক্টরের নিয়ন্ত্রণাধীন ৫৫ বিজিবির সদস্যরা উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের হামিদপুরের মৃত ছাবু মিয়ার ছেলে ভুটু মিয়ার বাড়িতে ও একই গ্রামের আবু ছায়েদ মিয়ার ছেলে সুহেল মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছোট-বড় ২৪টি বস্তায় প্রায় ৫০০ কেজি ভেজাল চা ও ২০০ কেজি কাটের গুড়া জব্দ করা হয়েছিল।
৫৫ বিজিবির সহকারী পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পচা চা পাতার গুড়া, কয়লার গুড়াসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর ক্যামিকেল মিশিয়ে চা পাতা তৈরি করে হকার ও দেশের বিভিন্ন এলাকার কিছু চা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।