পূজা মণ্ডপগুলো কী রাজনৈতিক মঞ্চ?
হোসাইন মোহাম্মদ দিদার শনিবার রাত ১১:১০, ১২ অক্টোবর, ২০২৪
সকল ধর্মের জন্য কিছু বিশেষ বিশেষ দিন থাকে। এসব দিনগুলো কেবল প্রার্থনা বা স্রস্টার নৈকট্য লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সারাদেশ জুড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম দুর্গোৎসব চলছে। এই পুজা নিয়ে এবার কিছু রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য বা গান নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছে! তাই পুজার দিনগুলো ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মনের মধ্যে যেমন আনন্দ বিরাজমান করছে তেমনি কোথাও কোথাও উদ্বেগ উৎকন্ঠাও চলছে।
পুজা আসলে বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকজনের পুজা মণ্ডপে যাওয়ার রেওয়াজ লক্ষণীয়। অনেকটা এমন হয়ে গেছে যে পুজা মণ্ডপগুলো যেন রাজনৈতিক সভাসেমিনারের জায়গা হয়ে গেছে!
ভাইরে, এটা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুজার বিশেষ স্থান৷ আপনি কী কখনও তাদের পালস পিটিশন বুঝতে চেষ্টা করেছেন যে আপনারা যখন ওনাদের পুজা মণ্ডপে গিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন — এতে তাদের পুজার ক্ষতি হয় কী-না?
এটা বোধ করার প্রয়োজন মনে করেছেন? আপনি কী জানেন এতে করে পুজারীরা আপনাকে আশীর্বাদ করার পরিবর্তে অভিশাপ দিচ্ছেন?
সনাতন ধর্মাবলম্বী বা অন্য ধর্মাবলম্বীদের তাদের প্রার্থনার দিনগুলোতে নিরাপত্তার নামে এদের ধর্মীয় আরাধনার স্থানে বক্তব্য প্রথা বন্ধ করুন। নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন কী করছেন আপনি?
যদি একান্তই ইচ্ছে থাকে তাহলে আপনি ওদের নিয়ে পুজার সময়কালীন ছাড়া অন্য সময়গুলোতেও সভাসেমিনার করতে পারেন। তবে পুজার সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা গিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে দেখা গেল এদের পুজার মূল্যবান সময়গুলো হত্যা হয়ে যাচ্ছে! এতে এদের পুজার অনেক ক্ষতি সাধন হচ্ছে কিন্তু ওনারা আপনাকে কিছু না বলে বরং আপনাদের সম্প্রতির অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছেন।
এই কথার মানে এই নয় যে আপনাকে আমি পুজায় যেতে নিষেধ করছি।হ্যাঁ, আপনাকে যদি যেতে হয় তবে যান, তাদের যদি নিরাপত্তার অভাববোধ হয় তবে যান, শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
দয়া করে আপনি একটু না হয় চিন্তা করেন আমরা বছরে দুটি ঈদ করি। আমাদের ঈদের নামাজের সময় যদি ঈদ গা দাঁড়িয়ে কোনো সনাতন ধর্মাবলম্বী গিয়ে বক্তব্য দেন আপনি মেনে নিবেন কী ? এটা নিশ্চিত কেউ মেনে নিবেন না। আর ওনারা যাবেন নাও।
আমার কথাগুলো তিতা লাগাটা স্বাভাবিক। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মূল্যবান পুজার সময়টাকে রাজনৈতিক মঞ্চ বানানো থেকে বিরত থাকুন। এই ভাঁওতাবাজি প্রথা বন্ধ হোক।
হোসাইন মোহাম্মদ দিদার
কবি ও সাংবাদিক