ঢাকা (রাত ৩:৪৩) বুধবার, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

Join Bangladesh Navy


গল্প : ভালোবাসার ফাল্গুন

মুক্ত কলাম ২৬৯২ বার পঠিত
গল্প : ভালোবাসার ফাল্গুন
ছবি: সংগৃহীত

মেঘনা নিউজ ডেস্ক মেঘনা নিউজ ডেস্ক Clock বুধবার সকাল ০৯:৫৭, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

পায়েল সংসারে বড় মেয়ে।  বাবা একজন কৃষক মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে পায়েল ।পায়েল মাত্র এসএসসি পাস করে ইন্টারে ভর্তি হল।
পারেলে গ্রাম থেকে কলেজে যেতে প্রায় আধা ঘন্টা সময় লাগে। এরই মধ্যে পায়েল দু মাস হয়ে গেল ভর্তি হয়েছে। কলেজে তার ক্লাসমেট রাজু নামে এক ছেলে ছিল। পায়েলের খোঁজখবর নেই , ছেলেটা অনেকদিন হলো পাইলের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু কিছু বলে না, হঠাৎ একদিন পায়েল বলল তুমি এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থাকো কেন। তুমি কি আমাকে কিছু বলবে, রাজু বলল হ্যাঁ আপনাকে কিছু বলতে চাই।
পায়েল মনে মনে ভাবতেছিল। এরকম কিছু বলুক যেতে পারলে মনের কথা হয়ে যায়। রাজু দেখতে শ্যামলা  প্রথম দেখাতেই পায়েল রাজুর প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। কথায় আছে মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না। তাই রাজু কে কিছু বলেনি পায়েল। রাজু উৎসাহ করে এগিয়ে আসতে দেখে পায়েল মনে মনে অনেক খুশি হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ রাজু ডাক দিল কি ব্যাপার পায়েল কোথায় হারিয়ে গেলে, আরে না কিছু না। ওহে রাজু তুমি যেন কি বলতে চেয়েছিলে বলো তোমার কথা শুনি। আচ্ছা পায়েল আমি যদি বলি তুমি রাগ করবে নাতো। পায়েল বলল না তা কি করে হয়, তোমার সাথে কি আমি রাগ করতে পারি, হঠাৎ করে রাজু বলে উঠলো পায়েল আমি তোমাকে ভালোবাসি। পায়েল কথাটি শুনে উৎফুল হয়ে গেল। এরই মধ্যে রাজু পায়েলের জন্য একটি  উপহার নিয়ে এসেছে ।পায়েল মিষ্টি একটি হাসি দিয়ে উপহারটি নিয়ে বাসার দিকে হাঁটা শুরু করে দিল। এদিকে রাজুও খুশি এভাবেই চলতে থাকে তাদের ভালোবাসার পর্ব।
প্রতিদিন কলেজে যাওয়া আসার মাঝে তাদের  মধ্যে  খুশ গল্প হয়ে থাকে । এমনকি ক্লাস শেষে তারা দুজন বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দেয়। রাজু প্রতিনিয়ত পায়েলকে তার বাসার সামনে এগিয়ে দিয়ে আসে। হঠাৎ একদিন পায়েলের বাবা রাজুকে দেখে বলে কি ব্যাপার পায়েল। ছেলেটাকে ও বাবা তুমি চিনবে ও হচ্ছে আমার ছোট খালার ভাসুরের ছেলে রাজু।ছেলেটা দেখতে শুনতে ভাল ও ভদ্র ও আচ্ছা ঠিক আছে। মা  তুই দেখেশুনে কলেজে যাওয়া আসা করিস।  আমরা গরিব মানুষ আমাদের মান সম্মান আছে । তখন পায়েলের বাবা রাজুকে ডেকে বলল বাবা বাড়ির ভিতরে গিয়ে বসো এক গ্লাস পানি খেয়ে যাও। নানা আংকেল আজ না বাসায় কেউ নেই। মা একা দেরি করে গেলে সমস্যা হবে । তাই আজকে আমাকে যেতে হবে। অন্য একদিন এসে খেয়ে যাব ও আচ্ছা ঠিক আছে । তাহলে সাবধানে যেও বাবা। রাতে বাসায় গিয়ে রাজু মনে মনে বুদ্ধি করলো । আর কয়েকটা দিন বাকি আছে, তার পরেই তো ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা দিবসে পায়েলকে নিয়ে অনেক দূরে বেড়াতে যাব। পরদিন সকালে উঠে পায়েলের বাসার সামনে চলে গেল ।রাজু পায়েলকে নিয়ে কলেজের দিকে রওনা দিল। রাজু হঠাৎ করে পায়েলকে বলল, পায়েল জানো সামনে তো ভালোবাসা দিবস। আমরা কোথাও  ঘুরে আসব। পায়েল বলল তোমাকে বিশ্বাস করা যায়।
তুমি আট দশটা ছেলের মত নয় তাই তোমার সাথে চোখ বন্ধ করে যাওয়া যায়। রাজু  ভাবল এরকম একটা সুযোগের জন্য এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম । দেখতে দেখতে ভালোবাসা দিবস চলে আসলো সকালবেলায় রাজু গোসল ছেড়ে খাওয়া-দাওয়া করে। পায়েলের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল ।এদিকে পায়েল কোথাও ঘুরে আসার জন্য রেডি হয়ে আছে। রাজুর অপেক্ষায় রাজু আসতে পায়েল বলল কি ব্যাপার রাজু তোমার এত দেরি হল কেন ।আরে না আমারও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে। তাই একটু সময় লাগছে তুমি কিছু মনে করো না পায়েল বলল না ঠিক আছে সমস্যা হতেই পারে। তখন রাজু বলল পায়েল তাড়াতাড়ি বাহির হও আমাদের যেতে হবে । পায়েল বাসায় থেকে বাহির হয়ে সাথে রওনা দিয়ে দিল। এরপর পায়েলকে রাজুর বাইকে তুলে অনেক দূরে জঙ্গলে দিকে যায়। পায়েল জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে বাইক চালানো দেখে। রাজুকে বলে রাজু তুমি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ । তখন রাজু হেসে বলল কেন আমরা সামনে জঙ্গলে দেখতে যাইবো । পায়েল বলল না ওখানে আমরা যাব না। সবাই যায় ভালো একটি জায়গায় আর তুমি কেন জঙ্গলে যেতে যাচ্ছো ।রাজু বলে প্রকৃতির মাঝে আমরা হারিয়ে যাব । প্রকৃতির চাইতে প্রেমময় জায়গা এমন আর কোথাও হতে পারে না।
পায়েলকে বুঝিয়ে রাজু বনের ভিতর নিয়ে গেল, এরপর রাজু পায়েলের  সর্বনাশ করে দিল। পায়েল রাস্তার পাশে কাঁদতে ছিল । ঐ রাস্তা দিয়ে পায়েলের মামা  যাচ্ছিল  । হঠাৎ খেয়াল করল একটা মেয়ে কান্নাকাটি করছে। তখন পায়েলের মামা কাছে গিয়ে দেখে তার ভাগ্নি কাঁদচ্ছে । মামা পায়েল কে জিজ্ঞাসা করল কি ব্যাপার মামা তুমি কাঁদছো কেন । মামা আমার তো সর্বনাশ হয়ে গেছে রাজু আমাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে।   মামার বোঝার বাকি রইল না । গ্রামের কয়েকজন মোড়ল ডেকে নিয়ে রাজুর বিচার শুরু  হয় ।   রাজুকে গ্রামের মোড়ল জিজ্ঞাসা করে। তুমি পায়েলের সর্বনাশ করেছ তাই না। তুমি যেহেতু সর্বনাশ করেছ তোমার পায়েলকে বিয়ে করতে হবে। রাজু বিয়ে করতে রাজি ছিল না। ওই গ্রামের লোকজন জোর করে রাজুর সাথে পায়েলের বিয়ে পড়িয়ে দেয়। পায়েল মনে মনে খুশি হয়। কিন্তু রাজও খুশি হতে পারেনা। কারণ রাজু চেয়েছিল পায়েলের সর্বনাশ করে চলে যাবে কিন্তু সেটা আর হলো না। আমাদের সকলের সাবধান হতে হবে । পায়েলের মত হয়তো তার মামাকে কোন মেয়ে নাও পেতে পারে।
লিখেছেন: মোঃ বুলবুল হোসেন



শেয়ার করুন

GloboTroop Icon
পাঠকের মতামত

মেঘনা নিউজ-এ যোগ দিন

Meghna Roktoseba




এক ক্লিকে জেনে নিন বিভাগীয় খবর



© মেঘনা নিউজ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by ShafTech-IT