৩৩ লাখ টাকা আত্মসাৎের অভিযোগে সাঘাটায় মাদ্রাসার সুপার বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাত ১০:২৫, ১৬ জুন, ২০২০
সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার শ্যামপুর নাসির উদ্দিন প্রধান দাখিল মাদ্রাসার সুপার কাজী মাহফুজুল হান্নান উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক পদে চাকুরী দেয়ার নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ এবং মাদ্রাসার সভাপতি স্বাক্ষর জাল করা সহ নানা দূর্ণীতির অভিযোগে তাকে চাকুরী থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, ১৯৯৪ইং সালে ইঞ্জিনিয়ার নুরনবী প্রধান তার পিতা নাসির উদ্দিন প্রধান এর নামে দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসার শিক্ষক প্যাটার্ন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে উচ্চ শিক্ষিত এবং মেধাবী ব্যক্তিদের মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব শিক্ষক মন্ডলী নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে পাঠদান করে আসছিল। গত ২০০৭ইং সালে কাজী মাহফুজুল হান্নান কে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য সভাপতি মৌখিক ভাবে নির্দেশ দেন। তিনি মাদ্রাসায় যোগদানের কয়েক দিনের মধ্যেই স্ব-ঘোষিত সুপার হিসেবে মাদ্রাসার দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। পরবর্তীতে তিনি উক্ত মাদ্রাসায় শিক্ষক পদে চাকুরী দেয়া এবং মাদ্রাসা এমপিও ভূক্ত হলে নিয়োগ পত্র দেওয়া হবে বলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা নিয়ে
আত্মসাৎ করেন। এমনকি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রতিষ্ঠাকাল থেকে চাকুরীরত দুজন শিক্ষকের বিপরীতে অপর দু’জন শিক্ষককে নিয়োগ দেন। টাকা প্রদানকারী ব্যক্তিরা চাকুরী না পেয়ে সুপারের কাছে টাকা ফেরত চাইলে সুপার গা ঢাঁকা দেয়। গত ২০/০৫/২০২০ইং সালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে মাদ্রাসার এমপিও ভূক্ত সংক্রান্ত জরুরী সভায় উল্লেখিত সুপার উপস্থিত হয় নি। মোবাইল ফোনেও পাওয়া যায় নি। টাকা প্রদানকারী ব্যক্তিরা চাকুরী না পেয়ে বাধ্য হয়ে সুপারের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠা সভাপতির নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
চাকুরী দেওয়ার নামে টাকা গ্রহণ সহ নানা দূর্নিতীর অভিযোগ প্রমাণিত হলে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গত ০৪/০৫/২০২০ইং তারিখে উক্ত সুপারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নুর নবী প্রধানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সুপারের বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি টাকা নেওয়ার কথা জানতে পেরেছেন এবং অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় সুপারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আহসান হাবীবের সাথে কথা তিনি জানান, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যেসব শিক্ষক মাদ্রাসায় কর্মরত আছেন তাদেরকে বাদ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে সুপারের টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে তিনি অবগত নন বলে জানান।